<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুব আকাশে আজ প্রত্যুষে যে লাল সূর্যের উদয় হয়েছে, সেটি আমাদের বিজয়ের রঙে রঙিন। সেটি আমাদের আনন্দ, ভালোবাসা ও গৌরবের প্রতীক। তাকে আমরা পতাকায় ধারণ করেছি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবান্বিত একটি দিন। সবচেয়ে দুর্ধর্ষ বলে কথিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলার মুক্তিপাগল দামাল ছেলেদের কাছে মার খেতে খেতে ১৯৭১ সালের এই দিনে অবশেষে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল। আর সেই সঙ্গে বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠেছিল বাংলাদেশ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আজ আমরা বিজয়ের ৫৪তম বর্ষ উদযাপন করছি। এই দিনে আমরা স্মরণ করছি অসীম সাহসী বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের, যারা নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে আমাদের এই লাল-সবুজের পতাকা দিয়ে গেছেন। স্মরণ করছি ৩০ লাখ শহীদকে, যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন। স্মরণ করছি অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, যারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে লড়াই করেছেন। স্মরণ করছি সেই সময়ের নিপীড়িত জনমানুষকে, যারা হানাদার বাহিনীর অত্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করেছেন, ঘরবাড়ি ছেড়ে পরবাসী হয়েছেন, বনে-জঙ্গলে রাত কাটিয়েছেন, তার পরও মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বতোভাবে সহায়তা করেছেন। তাদের সবাই আমাদের কাছে নমস্য।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাঙালি জাতি যত দিন বেঁচে থাকবে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গৌরব করবে, অহংকার করবে। প্রতিটি ১৬ ডিসেম্বরে তারা নতুন করে শপথ নেবে এগিয়ে যাওয়ার, বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর। এই দিনটি আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় দিন, আনন্দের দিন হয়েই থেকে যাবে। কারণ হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে এই দিনে বাঙালি জাতি প্রথমবার প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ অনুভব করেছিল। বিশ্বের মানচিত্রে একটি গর্বিত জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের মনে রাখতে হবে, এই বিজয় এমনি এমনি আসেনি। এর জন্য আমাদের অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে উনসত্তরের গণ-আন্দোলন, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের শুরুতে অসহযোগ আন্দোলনসহ অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তির ক্ষেত্র তৈরি করতে হয়েছে। আর সে ক্ষেত্রে আমরা ঋণী মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকসহ সে সময়ের আরো অনেক নেতা-নেত্রীর কাছে। ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়নসহ যেসব দেশ সেদিন আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সংহতি প্রকাশ করেছিল এবং নানাভাবে সহযোগিতা করেছিল, তাদের কাছেও আমরা ঋণী।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল দেশেরই কিছু কুলাঙ্গার। কিছু রাজনৈতিক দল স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচরণ করেছিল। রাজাকার, আলবদর, আলশামসের মতো বাহিনী করে বাঙালি হত্যায় মেতে উঠেছিল। পাকিস্তানিরা পরাজিত হয়ে ফিরে গেলেও তাদের দোসররা এ দেশেই থেকে গেছে। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরেও তারা একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশি অপশক্তিও তাদের মদদ জোগাচ্ছে। বিজয় দিবসে আমাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে, অপশক্তির সব ষড়যন্ত্রের মূলোৎপাটন করে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।</span></span></span></span></p> <p> </p>