চতুর্থ অধ্যায়
আমাদের অর্থনীতি ঃ কৃষি ও শিল্প
যোগত্যাভিত্তিক প্রশ্ন
১। বৃহৎ শিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্পের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৃহৎ শিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নিচে এদের পার্থক্য দেওয়া হলো :
বৃহৎ শিল্প
ক) বাংলাদেশের কিছু কিছু কারখানায় বিপুল পরিমাণে পণ্য উৎপাদিত হয়। এদের বৃহৎ শিল্প বলে।
খ) বৃহৎ শিল্পগুলো আধুনিককালের শিল্প। যার প্রসার আধুনিক যন্ত্রপাতির উন্নতির সঙ্গে ঘটেছে।
গ) বৃহৎ শিল্পের মধ্যে রয়েছে সার, সিমেন্ট, ওষুধ, কাগজ, চিনিশিল্প ইত্যাদি।
ঘ) বৃহৎ শিল্পে অধিক শ্রমিক কাজ করতে পারেন বলে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকে।
ক্ষুদ্র শিল্প
ক) আবার কিছু কিছু কারখানায় ক্ষুদ্র পরিমাণে স্থানীয়ভাবে পণ্য উৎপাদিত হয়। এদের ক্ষুদ্র শিল্প বলে।
খ) কিছু কিছু ক্ষুদ্র শিল্প আমাদের প্রাচীন শিল্প। যেমন তাঁতশিল্প বহুকালের, বাংলার মানুষ এ শিল্পের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে রেখেছে।
গ) ক্ষুদ্র শিল্পের মধ্যে রয়েছে কাঠশিল্প, কাঁসাশিল্প, মৃৎশিল্প, রেশমশিল্প, তাঁতশিল্প, তামাকশিল্প, চামড়াশিল্প প্রভৃতি।
ঘ) ক্ষুদ্র শিল্প ক্ষুদ্র পরিসরে অল্প মূলধনে পরিচালিত হয় বলে এখানে কমসংখ্যক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকে।
২। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর : বাংলাদেশে বেশ কয়েক ধরনের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রয়েছে।
এগুলোর মধ্যে চামড়াশিল্প, সাবানশিল্প, বিড়িশিল্প, তাঁতশিল্প, রেশমশিল্প, মৃৎশিল্প, কাঁসাশিল্প, কাঠশিল্প ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সারা দেশে শত শত বছর ধরে এসব ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মিটিয়ে আসছে। এসব শিল্পের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩। বাংলাদেশের পাটশিল্পের বর্ণনা করো।
উত্তর : পাট দিয়ে নানা রকম পণ্য তৈরি হয়। এগুলোর মধ্যে চট, চটের তৈরি বস্তা ও নানা রকম ব্যাগ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। পাট দিয়ে কার্পেট তৈরি করা হয়। এসব পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। এর ফলে বাংলাদেশ অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
৪। বাংলাদেশের প্রধান প্রধান কৃষিজাত দ্রব্যের নাম লেখো।
উত্তর : বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের কৃষিজাত দ্রব্য উৎপন্ন হয়। এদের মধ্যে কতগুলো হলো খাদ্যজাতীয় কৃষিদ্রব্য, আর কতগুলো হলো অর্থকরী কৃষিদ্রব্য। ধান, গম, ভুট্টা, আলু, তৈলবীজ, মসলা বাংলাদেশের প্রধান প্রধান খাদ্যজাতীয় ফসল বা কৃষিদ্রব্য। আর বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী কৃষিদ্রব্যগুলো হলো—পাট, চা ও তামাক। এ দেশের কৃষিপণ্য রপ্তানি আয়ের বেশির ভাগ আসে এই তিনটি দ্রব্য থেকে।
৫। বাংলাদেশকে কৃষিপ্রধান দেশ বলা হয় কেন?
উত্তর : বাংলাদেশকে কৃষিপ্রধান দেশ বলার কারণগুলো হলো—
ক) এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে যুক্ত।
খ) বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
গ) কৃষি খাত জনবহুল বাংলাদেশের খাদ্য সরবরাহের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে।
ঘ) এ দেশের রপ্তানি আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসে কৃষিপণ্য থেকে।
ঙ) বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান প্রায় ২০ শতাংশ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। আমাদের দেশের পাঁচটি শস্যের নাম লেখো।
উত্তর : আমাদের দেশের প্রধান পাঁচটি শস্যের নাম হলো—ধান, গম, সরিষা, ডাল ও আলু।
২। বাংলাদেশের তিনটি বৃহৎ শিল্পের নাম লেখো।
উত্তর : বাংলাদেশের তিনটি বৃহৎ শিল্প হলো পাটশিল্প, বস্ত্রশিল্প ও কাগজশিল্প।
৩। বাংলাদেশের তিনটি কুটির শিল্পের নাম লেখো।
উত্তর : বাংলাদেশের তিনটি কুটির শিল্প হলো তাঁতশিল্প, রেশমশিল্প ও মৃৎশিল্প।
৪। ফসল কোন কোন জায়গায় বিক্রি করা হয়?
উত্তর : ফসল হাট-বাজার ও দোকানে বিক্রি করা হয়।
৫। এ দেশে কী কী ধরনের ডাল আছে?
উত্তর : এ দেশে বিভিন্ন ধরনের ডাল আছে। যেমন—ছোলা, মসুর, মুগ, মাষকলাই, অড়হর ইত্যাদি।