ঢাকা, সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৬

শ্রমিকের টাকা ১০ এজেন্সির পেটে

হায়দার আলী, মালয়েশিয়া থেকে ফিরে
হায়দার আলী, মালয়েশিয়া থেকে ফিরে
শেয়ার
শ্রমিকের টাকা ১০ এজেন্সির পেটে

জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর খরচ বা অভিবাসন ব্যয় বাংলাদেশ সরকার বেঁধে দিয়েছে জনপ্রতি ৩৩ হাজার ৫৭৫ টাকা। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া নিয়োগানুমতিপত্র-গুলোতে স্পষ্ট বলা আছে, কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি কোনো শ্রমিকের কাছ থেকে ওই পরিমাণ টাকার বেশি নিতে পারবে না এবং ওই টাকা নিতে হবে চেক/ব্যাংক ড্রাফট/পে অর্ডারের মাধ্যমে। কিন্তু মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত যত শ্রমিক ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে, কেউ-ই ওই টাকায় মালয়েশিয়ায় যাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানায়নি। মালয়েশিয়ায় ১০ দিনের সফরে যে ৭৮ শ্রমিকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ৪২ জনই জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে এখানে এসেছে এবং একেকজন সর্বনিম্ন আড়াই লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দালালের মাধ্যমে এজেন্সিকে নগদ দিয়েছে।

এই হিসাবে একেকজন শ্রমিককে গড়ে খরচ করতে হয়েছে তিন লাখ ৩৭ হাজার টাকার মতো।

অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কোন এজেন্সির মাধ্যমে কত শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গেছে, তার সরকারি তালিকা সংগ্রহ করেছে কালের কণ্ঠ; বিশ্লেষণ করেছে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি চাহিদাপত্র অনুমোদনের সরকারি নথি। অনুমোদিত চাহিদাপত্র থেকে দুই বছরে পাঠানো দুই লাখ ৭৩ হাজার ৪৭৫ জন কর্মীর ডাটা সংগ্রহ করে সব তথ্য একটি ডাটা বেইসে সংকলন করেছে কালের কণ্ঠ। সেখানে কোন কর্মী কাদের মাধ্যমে মালয়েশিয়া গেছে এবং কে কোথায় নিয়োগ পেয়েছে—সব কিছুই রয়েছে।

তবে বিএমইটির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ওই দুই বছরে মালয়েশিয়ায় যাওয়া কর্মীর সংখ্যা দুই লাখ ৭৫ হাজার ৯১৫।

সেই উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ওই দুই বছরে দুই লাখ ৭৩ হাজার ৪৭৫ জন শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গেছে ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে। গড় অভিবাসন ব্যয় তিন লাখ ৩৭ হাজার টাকা ধরলে শ্রমিক বাণিজ্যে ৯ হাজার ২১৬ কোটি ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে। সরকার নির্ধারিত টাকা নিলে লেনদেন হতো ৯১৮ কোটি ১৯ লাখ ২৩ হাজার ১২৪ টাকা।

অর্থাৎ এজেন্সিগুলো অতিরিক্ত নিয়েছে আট হাজার ২৯৭ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৮৭৬ টাকা। অবশ্য সংশ্লিষ্ট জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, তারা সরকারের বেঁধে দেওয়া এক লাখ ৬০ হাজার টাকা করেই নিয়েছে, তার বেশি নয়। কিন্তু তাদের এই দাবি সঠিক নয় বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে দুই দেশের সরকার নির্ধারিত শ্রমিকপ্রতি অভিবাসন ব্যয় ৩৩ হাজার ৫৭৫ টাকা। একপর্যায়ে এজেন্সিগুলো এই ব্যয় বাড়িয়ে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা করার দাবি তুললেও তা দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি অনুমোদন করেনি।
তাদের ওই দাবি সঠিক ধরে নিলেও শ্রমিকদের কাছ থেকে এজেন্সিগুলো অতিরিক্ত নিয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। কিন্তু শ্রমিকদের প্রাপ্তি শূন্য। তারা এত টাকা খরচ করে মালয়েশিয়ায় গিয়েও হয়েছে প্রতারিত, বঞ্চিত। তাদের পরিবার-পরিজন হয়েছে সর্বস্বান্ত।

সিন্ডিকেটের এসব ঘটনা নিয়ে দুই দেশেই সরকারি তদন্ত হয়েছে। মালয়েশিয়ায় দোষীদের বিচার চলছে; অভিযুক্তদের অনেকেই পালিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে, যেখানকার লাখো শ্রমিক ভুক্তভোগী, সেখানকার মন্ত্রণালয় বা দুর্নীতি দমন কমিশন কারো তদন্তই শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। আদালত দোষীদের শনাক্ত করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের রুল জারি করলেও কারো বিচার হয়নি।

মালয়েশিয়ায় জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানো সিন্ডিকেটের ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির একটি আইএসএমটি হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম। ওই দুই বছরে ৩৮ হাজার ৫৬৬ জন কর্মী পাঠিয়ে শীর্ষে আছে আইএসএমটি।

এর পরই বেশি কর্মী পাঠিয়েছে রুহুল আমিন স্বপনের ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল—৩৮ হাজার ৪৩৮ জন। ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেড কর্মী পাঠিয়েছে ৩৩ হাজার ২৯১ জন। আল ইসলাম ওভারসিসের ম্যানেজিং পার্টনার জয়নাল আবেদীন জাফর পাঠিয়েছেন ২৮ হাজার ৪০৬ জন। আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের  মালিক রুহুল আমিন পাঠিয়েছেন ৩১ হাজার ১৯২ জন; সানজারি ইন্টারন্যাশনাল ২২ হাজার ৫৬৯ জন; মেসার্স রাব্বি ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী  মোহাম্মদ বশির পাঠিয়েছেন ২১ হাজার ৭২৯ জন, ক্যারিয়ার ওভারসিস কনসালট্যান্স লিমিটেডের পরিচালক এ এস এম খাইরুল আমিন ১৮ হাজার ৭৩১ জন;  মেসার্স প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা পাঠিয়েছেন ২২ হাজার ৫৩৪ জন এবং প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটস পাঠিয়েছে ১৮ হাজার ১৯ জন কর্মী।

‘দিয়েছি তিন লাখ, হলফনামায় লিখে নিয়েছে ৩৩,৫৭৫’ মো. কাউসার ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ায় আসেন ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে। গত ১০ অক্টোবর কুয়ালালামপুরের মসজিদ ইন্ডিয়ায় দেখা হলে তিনি বলেন, ‘তিন লাখ টাকা দিলেও ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত দিতে হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৭৫ টাকার বেশি দিইনি।’ একই দিন কোতরায়া এলাকায় কথা হয় রাজিবুল ইসলাম ও শফিকুল আলম নামে আরো দুই শ্রমিকের সঙ্গে। তাঁরা দুজনও ক্যাথারসিসকে তিন লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা জানান।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রামের দালালকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার ক্যাথারসিসের ম্যানেজার জিয়া ইসলামের মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা জমা দিই; কিন্তু চাইলেও কোনো রসিদ দেয়নি ওরা। এ ছাড়া দালালের হাতেও দিয়েছিলাম এক লাখ ১০ হাজার টাকা।’

শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপে জানা গেল, মালয়েশিয়ায় যত শ্রমিক পাঠিয়েছে, সবার কাছ থেকেই ১০০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্পে ‘৩৩ হাজার ৫৭৫ টাকার বেশি দিইনি’ হলফনামা সই করিয়ে নেয় ক্যাথারসিস। এমন একাধিক হলফনামা এই প্রতিবেদকের সংগ্রহে আছে।

শ্রমিকপ্রতি গড় অভিবাসন ব্যয় তিন লাখ ৩৭ হাজার টাকা ধরলে ক্যাথারসিস ৩৮ হাজার ৪৩৮ জন শ্রমিকের কাছ থেকে বেশি আদায় করেছে এক হাজার ২৯৫ কোটি ৩৬ লাখ ছয় হাজার টাকা। আর মালিকপক্ষের দাবি এক লাখ ৬০ হাজার টাকা করে ধরলে বাড়তি আদায় দাঁড়ায় ৬১৫ কোটি টাকা ৮০ হাজার টাকা।

ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের অফিস ঢাকার বনানীতে। মালিকের নাম রুহুল আমিন স্বপন। তিনি একসময় জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বায়রার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত ১৯ জুলাই মোবাইল ফোনে রুহুল আমিন স্বপন বলেন, ‘আমরা সরকারের বেঁধে দেওয়া টাকাই নিয়েছি, তার বেশি না।’

‘আপনার ম্যানেজার জিয়া ইসলাম (এখন তিনি ক্যাথারসিসে নেই) তো শ্রমিকদের আড়াই লাখ টাকা করে ফেরত দিয়েছেন’, জানালে রুহুল আমিন সেটা অস্বীকার করেন। ‘আমাদের হাতে প্রমাণ আছে’ জানালে তিনি বলেন, ‘আমি বিদেশে আছি। দেশে ফিরে আপনার সঙ্গে কথা বলব।’

২০১৮ সালের অক্টোবরে ৬৩ জন শ্রমিককে মালয়েশিয়ায় পাঠায় প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটস। ১১ অক্টোবর কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাদের গ্রহণ করতে নিয়োগদাতা কম্পানি সুপারম্যাক্সের কোনো প্রতিনিধি আসেননি। বিমানবন্দরেই অভুক্ত অবস্থায় কাটানোর পর ১৩ অক্টোবর দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় সবাইকে। এদের খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল, এই প্রতারণার ঘটনা জানাজানি ও হৈচৈ হলে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্তৃপক্ষ আড়াই লাখ টাকা করে ফেরত দেয়। টাকা ফেরত পাওয়া একজন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার মো. কামাল মিয়ার ছেলে মো. সামিউল ইসলাম। তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা স্থানীয়  দালাল আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে জমা দিয়েছিলেন রিক্রুটিং এজেন্সিতে। কুয়ালালামপুরে সামিউল গত ১৮ জুলাই এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘দেশে ফেরত আসার পর ঢাকার ক্যাথারসিস অফিসে ডেকে নিয়ে বিএমইটির স্মার্ট কার্ড রেখে দিয়ে আড়াই লাখ টাকা নগদ ফেরত দেয়।’

আড়াই লাখ টাকা করে আরো ফেরত পান কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেনদী গ্রামের মো. জালাল উদ্দিনের ছেলে মো. নাসিরউদ্দিন ও মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের মো. মোখলেস।

আড়াই লাখ টাকা শ্রমিকদের ফেরত দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের ওই সময়কার ব্যবস্থাপক জিয়া ইসলাম ১৯ জুলাই কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ক্যাথারসিসের মাধ্যমে শ্রমিকরা টাকা জমা দিলেও মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো হয়েছিল প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটসের মাধ্যমে। বিমানবন্দর থেকে ফেরত আসার পর বেশ কয়েকজন শ্রমিককে আড়াই লাখ টাকা করে ফেরত দেওয়া হয়েছে।’ শ্রমিকরা তিন লাখ-সাড়ে তিন লাখ-চার লাখ টাকা করেও দিয়েছে—জানালে জিয়া ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে আড়াই লাখ টাকা দিয়েছিল; সেটাই আমরা ফেরত দিয়েছি। বাকি টাকা স্থানীয় দালাল হয়তো নিয়েছে।’

মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে গত ১২ অক্টোবর প্যাসেজের মালিক আরিফ আলমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকার নির্ধারিত টাকা নিয়েই কর্মী পাঠিয়েছি।’ আর শ্রমিকদের ফিরে আসার ঘটনা তাঁর ‘নলেজে’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ইউনূস-মোদির বৈঠক

শেয়ার

এসএসএফের সাবেক ডিজি মুজিবুরের ফ্ল্যাট-জমি জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এসএসএফের সাবেক ডিজি মুজিবুরের ফ্ল্যাট-জমি জব্দ
মো. মুজিবুর রহমান

স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মুজিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী তাসরিন মুজিবের নামে থাকা ফ্ল্যাটসহ ৭৯ শতক জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের নামে থাকা ৩৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এসব হিসাবে এক কোটি ৪৪ লাখ ৯৯ হাজার ২০০ টাকা রয়েছে।

গতকাল রবিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।

জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে মুজিবুর রহমানের নিজ নামে থাকা মিরপুরের মাটিকাটায় চার হাজার ৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে থাকা একটি প্লটসহ চার দলিলে খিলক্ষেত, মিরপুর, সাভার ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের জমি এবং স্ত্রীর নামে থাকা ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের সাহারা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট, ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের বাউনিয়া এলাকায় সাত দলিলে জমি রয়েছে। এ ছাড়া অবরুদ্ধ ব্যাংক হিসাবের মধ্যে মুজিবুর রহমানের ২৪টি ও তাঁর স্ত্রীর ১০টি হিসাব রয়েছে।

এদিন দুদকের উপপরিচালক মো. সিরাজুল হক জব্দ ও অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।

দুদকের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, মুজিবুর রহমানের সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখার অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন। তাঁর বিরুদ্ধে পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অপরাধমূলক অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসাধু উপায়ে নিজ নামে এবং তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে জ্ঞাত আয়ের উৎসর সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিকানা অর্জন করে দখলে রাখা এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা ও উত্তোলনের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করে মানি লন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ দুর্নীতি ও ঘুষ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে তা রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করার অভিযোগ রয়েছে।
তিনি অবৈধ পন্থায় অর্জিত সম্পদ অন্যত্র বিক্রয় বা হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন। এ কারণে তাঁর নিজ নামে, তাঁর স্ত্রী ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। তাঁদের স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাবসমূহ অবরুদ্ধ করা না গেলে বিচারকালে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত মুজিবুর রহমান এসএসএফের মহাপরিচালক ছিলেন।

এরপর তাঁকে ময়মনসিংহে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি পদ থেকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর মুজিবুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়। এর আগে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মুজিবুর রহমান সেনা সদর দপ্তরে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) অতিরিক্ত মহাপরিচালক ছিলেন।

মন্তব্য

হাছান মাহমুদ ও তাঁর স্ত্রীর ৬৫ অ্যাকাউন্টে ৭২২ কোটি টাকা লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হাছান মাহমুদ ও তাঁর স্ত্রীর ৬৫ অ্যাকাউন্টে ৭২২ কোটি টাকা লেনদেন
হাছান মাহমুদ

প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৭২২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ ও তাঁর স্ত্রী নূরান ফাতেমার বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) মামলা দুটি করা হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রথম মামলায় হাছান মাহমুদকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় জ্ঞাত আয়ের উৎসর সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ এক কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তা দখলে রাখা এবং ৯টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আর দ্বিতীয় মামলায় নূরান ফাতেমা ও তাঁর স্বামী হাছান মাহমুদকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় পরস্পর যোগসাজশে জ্ঞাত আয়ের উৎসর সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ পাঁচ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তা দখলে রাখা এবং ৫৬টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা; মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) (৩) ধারা; দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা দুটি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার গঠিত হয়, তাতে তাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এর আগের সরকারে তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই  সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা হাছান মাহমুদ, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিল আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

ওই নির্দেশ সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিএফআইইউর নির্দেশে বলা হয়েছিল, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, তাঁর স্ত্রী নূরান ফাতেমা ও মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের ব্যক্তিগত ও ব্যাবসায়িক হিসাব জব্দ করতে হবে। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ওই নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

মন্তব্য

ব্যাংক ও আর্থিক খাত ধ্বংসের হোতা লোটাস কামাল

জয়নাল আবেদীন
জয়নাল আবেদীন
শেয়ার
ব্যাংক ও আর্থিক খাত ধ্বংসের হোতা লোটাস কামাল

পতিত আওয়ামী সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল মাত্র পাঁচ বছরে ব্যাংক খাতকে গভীর খাদে নিক্ষেপ করেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মূল্যায়ন, তাঁর সময় ব্যাংকে নিয়ম-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে-বেনামে ব্যাংকঋণ প্রদানের ঘটনা ঘটেছে অহরহ। সেসব ঋণ এখন খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।

২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ছিলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৮ সাল শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যা ছিল মোট ঋণের ১০.৩০ শতাংশ। আর তিনি যখন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অবসরে যান তখন ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ গিয়ে দাঁড়ায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটিতে।

এর মধ্যে স্বল্প টাকায় ঋণ পুনঃ তফসিল, ঋণের টাকায় ঋণ পরিশোধ, ঋণ পরিশোধ না করেও নিয়মিত গ্রাহক থাকাসহ নানা রকম সুযোগ-সবিধা দিয়েছেন তিনি। তাঁর অর্থমন্ত্রী থাকার সময় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ৫১ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। সেই খেলাপি ঋণ এখন তিন লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি নিজ দপ্তরে ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল ঘোষণা দিয়েছিলেন, আর এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না।

কিন্তু নিজেই ঋণখেলাপি হয়ে বসে ছিলেন। ব্যাংকের তথ্য মতে, সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক লোটাস ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের মালিক আ হ ম মুস্তফা কামালের মেয়ে নাফিসা কামাল এবং স্ত্রী কাশমেরী কামাল। কিন্তু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ছিল মুস্তফা কামালের হাতে। সোনালী ব্যাংক থেকে কম্পানিটির ঋণের পরিমাণ এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আর মাসিক কিস্তি ২৭ লাখ টাকা।
সে কিস্তি  নিয়মিত পরিশোধ না করায়  ঋণটি খেলাপি হয়ে পড়ে। তার পরও নিয়ম ভঙ্গ করেই কম্পানিটিকে ভালো গ্রাহক হিসেবে দেখিয়ে আসছিল সোনালী ব্যাংক। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিষয়টি নজরে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন টিমের। শুধু লোটাস ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, খেলাপি হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত গ্রাহক বা আন-ক্লাসিফায়েড হিসেবে দেখানো হচ্ছিল আরো অনেক কম্পানিকে।

সূত্র জানায়, লোটাস কামালের বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা না নেওয়া হয় সে জন্য শাসানো হতো তদন্ত কর্মকর্তাদের। আওয়ামী লীগ  সরকারের পতনের পর গত ৬ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের এক অনুসন্ধানী দলের কর্মকর্তা শাজু এস হোসোইল ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ঘটনা ঠিক কভিডের আগে। সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ইন্সপেকশনে গিয়েছিলাম ২০২০ সালের জানুয়ারির ১৯-২০ তারিখের দিকে। সেখানে লোন ক্লাসিফিকেশনের কনসোলিডেটেড সিএলের এক্সেল শিটে ফিল্টার করে দেখি অবজেক্টিভ ক্রাইটেরিয়ায় ক্লাসিফায়েড হওয়া লোন  আন-ক্লাসিফায়েড বানানো হয়েছে। প্রায় ১.৫-২ হাজার কোটি টাকার এই লিস্টে অনেক কম্পানির নাম। এই লিস্টের একটা কম্পানি ছিল লোটাস ইঞ্জিনিয়ারিং, যার অফিশিয়াল মালিক তখনকার অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালের মেয়ে ও স্ত্রী। ঋণের বকেয়া  ১.৭৫ কোটি টাকা, আর  কিস্তি মাত্র ১৮ লাখ টাকার মতো। মাত্র ১৮ লাখের কিস্তি, তা-ও তিনি নিয়মিত পরিশোধ করেন না বলে সেটা সাব-স্ট্যান্ডার্ড বা অন্তত তিন মাস (অথবা ৯ মাস পরের সার্কুলার অনুযায়ী, মনে নেই) ধরে বকেয়া ছিল। মেমো দেওয়ার পর সোনালীর লোকজন অনেক হম্বিতম্বি করেছে, সময়ক্ষেপণ করেছে জবাব দেওয়ার। টিম লিডার বহলুল স্যারকেসহ আমাদের চেম্বারে ডেকে তখনকার এমডি ধমকের সুরে বলেছিলেন, এই বহলুল, এগুলা কি শুরু করলেন।

তিনি আরো লেখেন, কামাল সাহেবকে এর পরে খেলাপি ঋণ নিয়ে মিডিয়াতে বড় বড় কথা বলতে দেখতাম। এমনকি খেলাপি আর এক টাকাও বাড়বে না এমন বক্তব্যও দিতে শুনতাম। ওই সময়টায় আমি বলতাম, যে দেশের অর্থমন্ত্রী ব্যাংকের টাকা দেন না, সে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমার কথা সত্যি হতে বেশি সময় নেয়নি। পালানোর তালিকায় উনার নাম সবার আগে দেখলাম। কেন? আপনারা এখন জানেন।

শেয়ারবাজার কারসাজি : ২০১০ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় লোটাস কামালের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ওঠে। তিনি তখন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। নানা অভিযোগ থাকার পরও শেখ হাসিনা সরকারের আমলে কোনো ধরনের শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি লোটাস কামালকে। অনেকের অভিযোগ, তাঁর সিন্ডিকেটের কারসাজিতে নিঃস্ব হয়েছেন শেয়ারবাজারের লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। লোপাট করে নেওয়া হয়েছে তাঁদের পুঁজি।

২০১০ সালের শেয়ারবাজার কারসাজিতে তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী লোটাস কামালের পকেটে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা গেছে বলে বিভিন্ন তদন্তে জানা যায়। শেয়ার জালিয়াতি করে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালের ওই কেলেঙ্কারির পর কৃষি ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে প্রধান করে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়।

ব্যাংক হিসাব জব্দের আগেই সরানো হয় টাকা : গত ২২ আগস্ট আ হ ম মুস্তফা কামাল, তাঁর স্ত্রী কাশমেরী কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামালের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে তাঁদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়। সূত্রের দাবি, দেশে-বিদেশে মুস্তফা কামাল ও তাঁর স্বজনের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। সরকার পতনের আগেই কামাল ব্যাংক, রাজধানীর বাসা-অফিস থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার সরিয়ে নিয়েছেন।

লোটাস কামালের বর্তমান দায় :  জানা যায়, এখনো সোনালী, পদ্মা ও প্রিমিয়ার ব্যাংকে দায়-দেনা পরিশোধ বকেয়া রয়েছে মুস্তফা কামালের। দেনা পরিশোধ না করার পরও তাঁকে খেলাপি দেখাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের এখনো লোটাস ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পাঁচ হাজার ১৯৩ টাকা পাওনা রয়েছে। কিন্তু এই তথ্য মানতে নারাজ সোনালী ব্যাংক লোকাল অফিস। ব্যাংক জানায়,  ঋণ পরিশোধ হয়ে গেছে।

প্রিমিয়ার ব্যাংকের বনানী শাখায় এখনো ৯৯ লাখ টাকার এলসি বকেয়া রয়েছে মুস্তফা কামালের। ২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর এলসি পরিশোধের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ঋণটি বকেয়া রয়েছে। পদ্মা ব্যাংকে পর পর দুটি এলসি করে কোনো টাকা পরিশোধ করেননি সাবেক এই অর্থমন্ত্রী। প্রথম এলসিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালের ৮ মার্চ। যেখানে বকেয়ার পরিমাণ চার কোটি ৫০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় এলসি পরিশোধের শেষ তারিখ ছিল ২০২০ সালের ৯ এপ্রিল। এখানেও চার কোটি ৫০ লাখ টাকা বকেয়া রেখেছেন কামাল। বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য চলতি দায়িত্বে থাকা পদ্মা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কাজী মো. তালহা জানান, তাঁদের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা ছিল অনেক আগে। এখন কোনো ব্যবসাও নেই, আর বকেয়াও নেই। হয়তো কোথাও কোনো তথ্যগত ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ