<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাদ্যশস্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে গরিব ও অসচ্ছল মানুষের কাছে কম দামে ওএমএসের (খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয়) চাল-আটা বিক্রি করে সরকার। কিন্তু ১৫-২০ বছর ধরে ডিলার হিসেবে রয়েছেন একই ব্যক্তি। এ ছাড়া ওএমএসের কেন্দ্রের চেয়ে চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি ডিলারশিপ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগরীতে একজন ডিলার সপ্তাহে এক দিনও ওএমএস বিক্রি করতে পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার সব ওএমএস ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করছে। একইভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সব ডিলারের ডিলারশিপ বাতিল করা হচ্ছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ওএমএস কার্যক্রম ২০১০ সালের আগে অনিয়মিত ও স্বল্প পরিমাণে বিতরণ হতো। ২০১০ সাল থেকে এর পরিধি অনেক বেড়েছে। এরপর প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি ডিলারশিপ পান। এ ছাড়া ২০১৬ সাল থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে বছরে পাঁচ মাস ৩০ কেজি করে চাল দিচ্ছে সরকার। এ জন্য ১০ হাজার ডিলার নিয়োগ করা হয়। ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ দেওয়ার পর আর পরিবর্তন করা হয়নি। ডিলার পরিবর্তন না হওয়ায় এই কর্মসূচিতে বেড়েছে অনিয়ম-দুর্নীতি। অনেকে ডিলারের লাইসেন্স ভাড়া নিয়ে প্রতিনিধি হিসেবে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। গুদাম থেকে খাদ্যশস্যও সংগ্রহ করছেন প্রতিনিধিরা। কেন্দ্র ও গুদাম কোথাও দেখা মেলে না ডিলারদের। বিতরণের আগেই গরিবের এই চাল-আটা হরিলুটের অভিযোগও রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার সারা দেশের ১২ হাজার ৪২৬ জন ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করছে। একই সঙ্গে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকাও হালনাগাদ করছে। তবে ইচ্ছা হলেই সুবিধাভোগীর নাম বাদ দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন খাদ্য অধিদপ্তরের ডিজি আব্দুল খালেক। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা মহানগরীর ৬ নম্বর অঞ্চলের ওএমএস ডিলার আব্দুল হালিম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডিলারশিপ পেয়েছি ২০০৭ সালে, যা এখনো সক্রিয়। তবে ডিলারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে ২০১০ সালে ওএমএস কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোয় অনেক ডিলার বাড়ে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমানে সারা দেশে ওএমএসের ৯১২টি কেন্দ্রে সপ্তাহে পাঁচ দিন চাল-আটা বিক্রি করা হয়। এসব কেন্দ্রে ডিলার সংখ্যা দুই হাজার ৪২৬। জেলা শহরে ৪৫২ জন এবং মহানগর ও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ডিলার রয়েছেন ৪৬০ জন।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাঁচ বছরের বেশি কেউ ডিলার থাকতে পারবেন না : এবার পাঁচ বছর পর পর ডিলারশিপ পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নীতিমালা সংশোধন করছে সরকার। খসড়া ওএমএস নীতিমালায় বলা হয়েছে, নতুন নিয়মে চাল-আটা সংগ্রহের জন্য কমপক্ষে তিন দিন ডিলারকে গুদামে উপস্থিত থাকতে হবে। প্রতিবছর ডিলারশিপ নবায়ন করতে হবে। মহানগর এলাকায় ডিলারশিপ দেওয়া হবে ওএমএস কেন্দ্রের দেড় গুণ। জেলা শহরে দেওয়া হবে কেন্দ্রের ১.৩ শতাংশ। প্রতি উপজেলায় ডিলার থাকবেন তিনজন। আপৎকালে তাঁরা ওএমএস বিতরণ করবেন। অনিয়মের অভিযোগে বিভাগীয় কমিটি ডিলারশিপ বাতিল করতে পারবে। খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) তদারকির একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান হোছাইনী কালের কণ্ঠকে বলেন, ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আরো স্বচ্ছ, গতিশীল ও জনবান্ধব করতে নীতিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। সারা দেশে নিয়োজিত ১২ হাজার ৪২৬ জনের ডিলারশিপ চলতি সপ্তাহে বাতিল হতে পারে। পরে ডিলার নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর কম মূল্যে ওএমএসের চাল-আটা বিক্রি কার্যক্রম থমকে আছে। এখনো অনেক ডিলার উপস্থিত থাকছেন না বিক্রয়কেন্দ্রে। আবার ডিলারদের মধ্যে যাঁরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তাঁদের অনেকে পলাতক। দলীয় লোকজনই বেশির ভাগ কার্ড পেয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ আগস্ট রাজশাহী বিভাগের ২৯ ডিলারের নিয়োগ বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাদ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) বদরুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ওএমএস-খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার পরিবর্তনের সঙ্গে সুষ্ঠু বিতরণের জন্য মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং বাড়াতে হবে। সব প্রক্রিয়া ডিজিটাল করতে হবে।</span></span></span></span></p>