<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে চালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গম ও আটার দাম। গত দুই সপ্তাহে প্রতি কেজি গমের দাম অন্তত তিন টাকা বেড়েছে। ফলে বেড়েছে আটার দামও। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) কর্মসূচির আটায় ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অংশীজনদের (স্টেকহোল্ডার) মতামত ছাড়াই ওএমএস নীতিমালায় কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়ায় আটা সরবরাহকারীদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। গত দুই মাসে আটা সরবরাহ নিয়ে একাধিক অফিস আদেশ জারি করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এর পেছনে মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে আটা নিয়ে কোনো সংকট হবে না বলে দাবি করেছেন খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান। গতকাল নিজ দপ্তরে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি ওএমএস নীতিমালায় কিছু শর্ত যোগ করা হয়েছে, যার প্রয়োজন ছিল না। এ নিয়ে একটু ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। অংশীজন হিসেবে মিল মালিক ও আটা সরবরাহকারীদের মতামত নেওয়া হলে এই সমস্যা হতো না। আমরা সমস্যা যেহেতু চিহ্নিত করেছি, তাই কোনো সমস্যা হবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত বছরের আজকের দিনের চেয়ে প্রায় চার লাখ টন চাল-গম কম মজুদ রয়েছে সরকারি গুদামে। বর্তমানে সরকারি গুদামে চাল ৯ লাখ টন ও গম চার লাখ টনসহ মোট ১৩ লাখ টন খাদ্য মজুদ রয়েছে। এক বছর আগে একই সময়ে মজুদ ছিল প্রায় ১৭ লাখ টন। প্রতি মাসে ওএমএস ও রেশনিংয়ে অন্তত ৪৫ হাজার টন আটার প্রয়োজন হয়। আর প্রতি মাসে ওএমএস ও রেশনিংয়ে (বাহিনীগুলোর জন্য চাল ও আটা), খয়রাতি সাহায্য (জিআর), কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (কাবিখা), টিসিবির ট্রাক সেল ও ফেয়ার প্রাইস নিয়মিত সরবরাহে মাসে প্রায় তিন লাখ টন খাদ্যশস্য প্রয়োজন। এমন অবস্থায় ওএমএসের আটা নিয়ে সরবরাহকারীদের মতবিরোধে খাদ্য বিভাগে এক ধরনের অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, প্রতি মাসে ওএমএস ও রেশনিংয়ে অন্তত ৪৫ হাজার টন আটার প্রয়োজন হয়। নীতিমালার শর্তের কারণে আটা সরবরাহকারীদের অনেকে অসন্তুষ্ট। আবার গত দুই সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কেজি প্রতি তিন টাকা বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে গম আমদানিতে ব্যাংকগুলো এলসি দিচ্ছে না। ইউক্রেনও সরাসরি বাংলাদেশকে গম দেয় না। ফলে গম আমদানি নিয়ে এক ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। অতিদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারের মহৎ উদ্যোগ ওএমএস কার্যক্রম ব্যাহত করে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সক্রিয় রয়েছে। এসব কর্মকর্তা বিগত সরকারের সুবিধাভোগী। খাদ্যসচিব, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক নতুন সরকারের নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট শাখার কিছু অসাধু কর্মকর্তা তাঁদের ভুল বুঝিয়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তারা চাল-আটায় সংকট তৈরি করতে পারলে বড় ধরনের বেকায়দায় পড়বে সরকার।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা গেছে, নীতিমালার শর্ত ভেঙে নারায়ণগঞ্জের মিল মালিকদের গম বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে সাভারের হেমায়েতপুরের বাসিন্দা মো. মাহফুজ আহমেদ খাদ্য অধিদপ্তরের ডিজির কাছে আবেদন করেন। তিনি দাবি করেন, নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকার মিল মালিকরা গম বরাদ্দ কম পাচ্ছেন। দূরত্বের কারণে সময়মতো সাধারণ মানুষ আটা পায় না। একই বিষয়ে তিনি ৯ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। আদালত শুনানি শেষে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে খাদ্যসচিবকে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। আদালতের জবাব দেওয়ার আগেই নারায়ণগঞ্জ জেলার ময়দা ও আটা মিল মালিকদের অনুকূলে গমের বরাদ্দ বাতিল করে অফিস আদেশ জারি করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর পাশাপাশি গত ৯ অক্টোবর ওএমএস নীতিমালা এবং ওএমএস ডিলারশিপ নীতিমালা সংক্রান্ত পরিপত্র জারি  করা হয়। নীতিমালায় কিছু অযৌক্তিক শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আটা সরবরাহকারীদের।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাদ্যসচিব মাসুদুল হাসান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একজন ভোক্তা খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) কাছে ঠিক সময়ে আটা পান না বলে অভিযোগ করেছেন। একই সময়ে তিনি এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন। ফলে উচ্চ আদালত থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের সরবরাহকারীদের অনুকূলে গমের বরাদ্দ বন্ধ রাখতে বলেছেন। কোর্টের নির্দেশে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। তবে আটা নিয়ে কোনো সংকট হয়নি এবং হবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা জানান, সময়মতো আটা সরবরাহের পদক্ষেপ নিতে ওএমএস কার্যক্রম তদারকি করা কর্মকর্তাকে তাগিদ দেওয়া যেত। তা না করে বৃহৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর গমের বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্ত হলে আটার সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।</span></span></span></span></p>