<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ছয় বছর আগে ঢাকার ধামরাইয়ে বনেরচর গ্রামের মনোয়ার হোসেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ছয় বছর পর তাঁর বোন জেসমিন সুলতানা ওরফে আসমা আক্তার তাঁর ভাই মনোয়ারকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে গত বছর অক্টোবরে আদালতে মামলা করেন। বর্তমানে সেই মামলা তদন্ত করছে ধামরাই থানা পুলিশ। মামলায় আসামি করা হয়েছে এলাকার ধর্নাঢ্য ব্যক্তি, পুলিশ এবং বাদীর সাবেক স্বামীকে। সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়ে করা এ ধরনের মামলা থেকে আসামিদের নাম কেটে দিতে মামলাবাজ চক্রের সদস্যরা দাবি করছে লাখ লাখ টাকা। দেশজুড়ে বর্তমানে একটি চক্র এভাবে করছে </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্য</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত বছর আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্য</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> শুরু হলে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় পিতা-পুত্র মিলেও গড়ে তোলেন একটি </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্য</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> চক্র। বাড়ির ভাড়াটিয়া এক নারীকে দিয়ে ভুয়া মামলা দায়ের করার মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ ওই মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্যে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">র এমন চিত্র শুধু ধামরাই কিংবা আশুলিয়ার নয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশে মামলা বাণিজ্যের একটি অসাধু চক্র গড়ে ওঠে। এই চক্র ভুয়া মামলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নাম ঢুকিয়ে আবার কেটে দেওয়ার নামে কামিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। দেশজুড়ে এই চক্রটি এক আতঙ্কের নাম।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্য</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> চক্রের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় রাজনীতিক, অসাধু আইনজীবী এবং পুলিশ। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল মহল থেকে বলা হয়েছে, বানোয়াট এসব মামলা তদন্তের সময় পর্যালোচনা করা হবে। দায়িত্বশীলদের এমন বক্তব্যর পর কোনো কোনো এলাকায় পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে মামলার তদন্তকাজ করলেও বেশির ভাগ থানার পুলিশ রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব মামলা তদন্তের নামে </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্যে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> জড়িয়ে পড়ছেন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁরাও মামলার আসামি থেকে নাম বাদ দেওয়ার নাম করে কামিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। যে কারণে পুলিশের ভূমিকাকে অনেকে রহস্যজনক বলে উল্লেখ করেছেন। আবার মামলায় যেসব পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে, তাঁদের কাছ থেকেও চাঁদা দাবি করছেন </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্য</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> চক্রের সদস্যরা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পুলিশের একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, চাঁদাবাজি, পূর্বশত্রুতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এসব বানোয়াট মামলা করা হচ্ছে। এসব বানোয়াট মামলার পেছনে রয়েছে জমি দখল এবং হয়রানি করার ঘটনাও। আর </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্য</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> করতে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, সরকারি কর্মকর্তাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে আসামি করা হয়েছে। আবার অনেক মামলার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, বাদী যেমন আসামিকে চেনেন না, আসামিও বাদীকে চেনেন না। কোনো কোনো মামলায় বাদী হিসেবে নিজের নাম  দেখে বাদী নিজেই চমকে উঠছেন।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজধানীর খিলগাঁও থানায় করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৮০ জন আসামির মধ্যে ৩৬ জন আসামি পুলিশ কর্মকর্তা। মামলা থেকে নাম কাটাতে এই পুলিশ কর্তকর্তাদের কাছেও লাখ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করা সেই চাঁদা দেননি। তার পরও থেমে নেই </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্য</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> চক্রের সদস্যরা। মামলার আসামিদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ে কৌশল পাল্টাচ্ছেন তাঁরা।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ধামরাইয়ের ঘটনায় জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ধামরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনের সময় প্রতিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন মনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। পরে তিনি হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়ে সুস্থ হয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরিও করেন। পরে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মারা যান। গত বছর ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ২০১৪ সালের ঘটনায় তাঁকে নিহত দেখিয়ে মামলা করেন তাঁর বোন জেসমিন সুলতানা ওরফে আসমা আক্তার। ভাইকে নিহত দাবি করে ওই এলাকার চারজন পুলিশ সদস্য, ইটভাটার মালিকসহ ধনাঢ্য ৫২ ব্যক্তির নামে ধামরাই আমলি আদালতে মামলা করেন জেসমিন সুলতানা। একই মামলায় নিজের ষাবেক স্বামী আওলাদ হোসেনকেও আসামি করেন তিনি। মামলা নম্বর ৬১৫/২৪। আদালতের নির্দেশে গত বছর ২১ অক্টোবর ধামরাই থানার পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলার বাদী জেসমিন সুলতানা কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। এই মামলায় অনেকের নাম বাদ পড়েছে। পুনরায় তাদেরও আসামি করা হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী লিপি বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমার স্বামী মনোয়ার হোসেন সুস্থ হওয়ার পর ধামরাইয়ের ইসলামপুরে মুন্নু সিরামিক কারখানায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কয়েক বছর চাকরিও করেছেন।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আর মনোয়ার হোসেনের ছেলে হাফেজ রবিউল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আমার বাবা ক্যান্সারে মারা যান। বাবার জানাজা আমি নিজেই পড়িয়েছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল জলিলও একই কথা জানান। মুন্নু সিরামিক কারখানার ডিজিএম কাজী হোসাইন সারওয়ার্দী বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কারখানার প্রধান কার্যালয়ের তথ্য মতে মনোয়ার হোসেন ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ১১ দিনের বেতন উত্তোলন করেছেন। এরপর থেকে তিনি আর চাকরি করেননি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলার আসামি আওলাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ২০১১ সালে জেসমিনকে তালাক দিয়েছি। এরপর জমিসংক্রান্ত পাল্টাপাল্টি অনেক মামলা হয়েছে। প্রতিশোধ নিতে সে এবার হত্যা মামলায় আমাকেসহ সাতজন আত্মীয়কে আসামি করেছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলাটির আসামি একজন পুলিশ কনস্টেবল কালের কণ্ঠকে জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁকে খবর পাঠানো হচ্ছে লাখ খানেক টাকা দিলে মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমি নির্দোষ, এ কারণে কোনো টাকা পয়সা দিইনি। দেখি মামলার তদন্তে কী বেরিয়ে আসে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধামরাই থানার সাব-ইন্সপেক্টর নাইবুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। মনোয়ার কবে মারা গেছেন তা জানতে তাঁর লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ টেস্টের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span>  </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে তাঁদের কয়েকজনের কাছে একটি চক্র মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে বলে শুনেছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্যদিকে আশুলিয়ার ঘটনায় জানা গেছে, আশুলিয়ার জামগড়া দরগারপার এলাকায় মো. রুহুল আমিনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন কুলসুম আক্তার নামের এক নারী ও তাঁর স্বামী আলামিন মিয়া। ৫ আগস্টের পর বাড়ির মালিক রুহুল আমিন ও তাঁর ছেলে মো. কাউছার ভাড়াটিয়া কুলসুম আক্তারকে মামলা করার জন্য বলেন। মামলায় অভিযোগ হিসেবে দাঁড় করানো হবে তাঁর স্বামী আলামিন ছাত্র অন্দোলনের সময় নিহত হয়েছেন। কুলসুমের ভাষ্য অনুযায়ী বাড়িওয়ালা রুহুল আমিন তাঁকে পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখানোয় তিনি বাধ্য হয়ে রাজি হন মামলা করতে। পরে রুহুল আমিন, তাঁর ছেলে কাউছার, শিবালয়ের শরীফুল ইসলাম শরীফ ও আশুলিয়ার সালামসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো দুই-তিনজন মিলে একটি এজাহার লিখে তাতে স্বাক্ষর করতে কুলসুমকে বাধ্য করে। মামলার এজাহারে কুলসুমের স্বামী আলামিন গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এতে  ১৩০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করা হয়। মামলাটি গত ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় নথিভুক্ত করা হয়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. রকিবুল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে দেখতে পাই কুলসুমের স্বামী নিহত হয়নি। মামলাটি সাজানো। যে কারণে আমরা এই মামলায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়েছি। যারা সাজানো এই মামলার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় রুহুল আমিন ও সফিউদ্দিন নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুলসুম, রুহুল আমিনসহ ছয়জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় চাঁদাবাজির মামলাটি করেছেন মো. সজীব মীর নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাবা মিলন মীর ভুয়া মামলাটির আসামি ছিলেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলার অভিযোগে সজীব উল্লেখ করেন, তাঁর বাবার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। রুহুল আমিন জানান, দুই লাখ টাকা করে দিলে প্রতি আসামিকে মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়া হবে। তাঁর কথায় আশ্বস্ত হয়ে ১০ জন আসামির নাম বাদ দিতে দুই দফায় ১৭ লাখ টাকা দেওয়া হয় রুহুল আমিনকে। অবশিষ্ট তিন লাখ টাকা দেওয়ার জন্যও চাপ দিতে থাকেন রুহুল আমিন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আশুলিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর রকিবুল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত ৪ আগস্ট সিলেটের গোলাপগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ঘোষগাঁওয়ের মোবারক আলীর ছেলে গউছ উদ্দিন। এ ঘটনায় গত ২৩ আগস্ট গউছ উদ্দিনের ভাতিজা রেজাউল করিম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ফেসবুকের মাধ্যমে রেজাউল যখন জানতে পারেন মামলাটির বাদী তিনি, তখন তিনি মামলাটি দায়েরের বিষয় অস্বীকার করে জানান, তাঁর স্বাক্ষর জাল করে থানায় মামলা করা হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মোল্লা টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">“</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাদীর স্বাক্ষর জাল কি না, সে বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। মামলায় ১৩৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মধ্যে </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা বাণিজ্য</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> হচ্ছে বলেও আমাদের কাছে খবর আসছে। তবে আমরা মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। যিনি মারা গেছেন তাঁর পরিবারের বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আসামিদের বলেছি, নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। নাম কাটানোর জন্য কারো সঙ্গে যোগাযোগ না করতেও বলেছি। তবে এক শ্রেণির সুযোগ সন্ধানী লোক তো আছেই। আর মামলার বাদী আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ করেননি যে তাঁর স্বাক্ষরটি জাল।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">”</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> (প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন ধামরাই প্রতিনিধি, আবু হাসান)।</span></span></span></span></span></p>