ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
৬ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
৬ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ রমজান ১৪৪৬

ভুল বীজে কৃষকের সর্বনাশ!

  • ► কুমিল্লায় বন্যাকবলিত এলাকায় ধানের ফলনে ধস
  • ► বিআর-২২-এর স্থলে বিআর-৭৫ বীজে ফলন কমার অভিযোগ
ফারুক মেহেদী, কুমিল্লা থেকে ফিরে
ফারুক মেহেদী, কুমিল্লা থেকে ফিরে
শেয়ার
ভুল বীজে কৃষকের সর্বনাশ!
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ক্ষেতে ধান কাটছেন কৃষক শাহ আলম। ছবি : কালের কণ্ঠ

দরিদ্র কৃষক শাহ আলম। চোখে মুখে রাজ্যের হতাশা। ধান কাটার কাঁচি হাতে উসখুস করছেন! ধান কাটবেন কি কাটবেন না, ভেবে পাচ্ছেন না। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ধান কিতা কাটতাম কন, এইবার তো সব মাইর।

ধান অইছে না। হুদা খাটনি দিয়া কাইট্টা নিয়া কিতা লাব অইব বুঝি না। গরুর খেড় অইব কিছু। আর কোনো লাব নাই।
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ইছাপুরা গ্রামের সাত সদস্যের পরিবারের সহজ-সরল কৃষক শাহ আলমের যত উদ্বেগ-দুশ্চিন্তা সামনের দিনে পরিবারের ভরণ-পোষণ নিয়ে। গত আগস্টের বন্যার পর ৩০ শতক জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন। ধানগাছ ঠিকই হয়েছে, তবে ফলন না হওয়ায় বড় লোকসানে আছেন।

পাশেই কথা হয় আরেক কিষানির সঙ্গে।

তিনি কেটে আনা ধান মেশিনে ছড়াচ্ছেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলন না হওয়ায় হতাশ। গোছায় তো ধান নেই, তাহলে ছড়াচ্ছেন কেন? জানালেন, ধান তেমন পাওয়া যাচ্ছে না ঠিক। তবে যেটুকু আছে, সেটুকুই সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। তা ছাড়া খড়গুলো গরুর খাবার ও জ্বালানির কাজে লাগবে।

গত বৃহস্পতিবার শাহ আলম ছাড়াও হুমায়ুন মিয়া, মোহাম্মদ মোস্তফা, আশিক হোসেনসহ স্থানীয় আরো বেশ কয়েকজন কৃষককের সঙ্গে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদকের কথা হয়। বন্যা-পরবর্তী ধানের ফলন নিয়ে তাঁরা প্রায় সবাই হতাশ। ফলন ভালো না হওয়ায় এবার তাঁদের ঘরে নবান্নের পিঠা-পুলির আয়োজনও নেই। সামনে বোরো মৌসুমের ফলন ওঠার আগ পর্যন্ত পরিবারের খাবারের চালের সংস্থান নিয়ে শঙ্কিত তাঁরা।

জানা যায়, গত বছরের আগস্ট মাসে আকস্মিক অতিবৃষ্টি এবং ভারতের পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলায় বড় ধরনের বন্যা হয়। ফেনী, নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরেও ধানের কাঙ্ক্ষিত ফলন হয়নি। স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ত্রুটিযুক্ত বীজের কারণে ওই সব জেলার কোনো কোনো উপজেলায় কাঙ্ক্ষিত ফলন হয়নি। কোথাও কোথাও বীজের মধ্যে ভুসির মিশ্রণ ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিছু জায়গায় মোটামুটি হলেও সন্তোষজনক নয়। সব মিলিয়ে কৃষকরা ফলন নিয়ে হতাশ বলে কালের কণ্ঠের স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হিসেবে ফলনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কুমিল্লার গোমতী নদীকেন্দ্রিক অঞ্চলের কৃষকরা। বিশেষ করে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বুড়িচং ও ব্রাহ্মপাড়া উপজেলার প্রায় সব কটি গ্রামই বড় ধরনের বন্যার কবলে পড়ে। বন্যার আগে আগে বেশির ভাগ কৃষকই জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। আকস্মিক বন্যা আসায় আমনের ক্ষেত ও বীজতলা তলিয়ে যায়। কৃষকরা জানান, বন্যার পরে পানি নেমে গেলে, সরকারি উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাউকে কাউকে ফ্রিতে ধানের বীজ দেওয়া হয়। তবে বেশির ভাগ কৃষক সরকারের কৃষি অফিস থেকে বীজ কিনে জমিতে রোপণ করেন। সবারই আশা ছিল, বন্যার যে ক্ষতি তাঁরা এই ফলনের পর কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু সম্প্রতি ফলন তোলার সময় দেখা যায়, বেশির ভাগ জমিতেই কাঙ্ক্ষিত ফলন হয়নি। মাঠের পর মাঠে ধান কাটা হচ্ছে ঠিকই; তাতে ফলনের মাত্রা নগণ্য। কৃষকরা জানান, সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ শতাংশ ফলন হয়েছে। এতে তাঁরা বড় ধরনের লোকসানে পড়েছেন। একদিকে আর্থিক ক্ষতি, অন্যদিকে ফলন না হওয়ায় সামনে খাবারের চাল কিনে খেতে হবে তাঁদের।

এ ব্যাপারে কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, পরীক্ষিত বীজ না হলে এটা হতে পারে। এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিদেশে বীজ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলন না হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশেও আছে। তবে তা কার্যকর নয়। কুমিল্লায় ভুল বা ভেজাল বীজের কারণে কৃষক যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন, তাহলে যেসব কম্পানির বীজ নেওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে অথবা সরকার দিয়ে থাকলে সরকারের উচিত হবে কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানায়, বন্যার সময় জেলায় আমন ধান আবাদ করা জমির পরিমাণ ছিল এক লাখ ৩৫ হাজার ২৩৮ হেক্টর। যার মধ্যে ৪৯ হাজার ৬০৮ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় ৭৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চার লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৪ জন কৃষক রয়েছেন। বন্যা-পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে ধানবীজ বিআর-৭৫, বিআর-২২ ধানের চারা এবং সার প্রদান করা হয়। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাও তাঁদের মাঝে ধানের চারা বিতরণ করেছে।

বন্যাকবলিত উপজেলাগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রান্তিক কৃষকদের বেশির ভাগ জমিতে শুধু আগাছা জন্মেছে। কিছু জমিতে ধানগাছ দেখা গেলেও তাতে ধানের পরিমাণ সামান্য।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্যা-পরবর্তী সরকারিভাবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে যে জাতের ধান বীজ দেওয়া হয় এটি সঠিকভাবে নির্বাচন করা হয়নি। আমন ধান দেরিতে লাগালে বিআর-২২ অর্থাৎ নাবি জাতের ধান লাগাতে হয়। কিন্তু সেখানে কৃষি বিভাগ বিতরণ করেছে বিআর-৭৫ জাতের ধান। এটি নাবি জাতের ধান নয়। এই জাতের ধান আগস্ট কিংবা আরো আগে লাগালে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এ সময় বিতরণের দরকার ছিল বিআর-২২ জাতের ধানের বীজ। তাহলে কৃষকরা লাভবান হতেন। যার করণে বেশির ভাগ কৃষক বন্যা-পরবর্তী বিআর-৭৫ জাতের ধান আবাদ করে ফল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া গ্রামের কৃষক মজিদ মিয়া বলেন, বন্যার পরে ২০ শতক জমিতে ধানের আবাদ করেছি। লাভ তো দূরের কথা, জমি চাষের টাকাও ওঠেনি। ২০ শতকে মাত্র দেড় মণ ধান পেয়েছি। সামনের দিকে ছেলেমেয়ে নিয়ে কী খেয়ে বাঁচব জানি না। 

একই উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, কী বলব ভাই। আমাদের এলাকায় অনেক কৃষক এবার কাঁচি নিয়ে জমিতে যেতে পারবেন না। জমিতে শুধু ধানের গাছ আছে, ধান নেই। যাঁরা সরকারি বিআর-৭৫ ধান আবাদ করেছেন তাঁদের অবস্থা খারাপ।

পূর্বহুড়া গ্রামের জামাল উদ্দিন বলেন, বন্যা-পরবর্তী ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ৪০ শতক জমিতে ধান করেছি। সফল পেয়েছি মাত্র দুই মণ। কৃষি বিভাগ যদি সঠিকভাবে তদারকি করত কৃষকরা হয়তো কিছুটা হলেও লাভবান হতেন।   

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের মাসকরা গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে অন্যের জমিতে বীজতলা তৈরি করি। কিন্তু বন্যার পানি নামতে দেরি করায় চারা রোপণে সময় লেগেছে। রোপণকৃত চারা থেকে কোনো ফলন পাইনি। গরুর খাওয়ানোর মতো খড়ও বাড়ি আনতে পারিনি।

কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বন্যা-পরবর্তী তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বিআর-৭৫, বিআর-২২ ও ২৩ ধানের বীজ, চারা ও সার বিতরণ করা হয়। এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ নাবি জাতের ধান বীজ বিআর-২২ ও ২৩ না থাকায় অনেক কৃষককে বিআর-৭৫ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে যাঁরা দ্রুত সময়ে রোপণ করতে পারেননি তাঁরা ভালো ফলন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আর যাঁরা কৃষি বিভাগের নির্দেশনা মেনে রোপণ করেছেন তাঁরা ভালো ফলন পেয়েছেন।

 

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন কুমিল্লা প্রতিনিধি জাহিদ পাটোয়ারী]

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

দুই দশক আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে পৃথক আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এসব আবেদন গতকাল বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ছিল বলে সাংবাদিকদের জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী ছিলেন তিনি। 

গত বছর ১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে বলা হয়, আইনের ভিত্তিতে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়নি। ফলে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ। তাই বিচারিক আদালতের ডেথ রেফারেন্স নাকচ এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করা হলো। এ রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ বিচারিক আদালত যাঁদের সাজা দিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে খালাস দেওয়া হয়।

খালাসের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা উচিত বলে সেদিন মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগের দাবি, এ হামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলার রায় হয়। রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত।
সেই সঙ্গে ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল-জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির পর সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন উচ্চ আদালত।

 

মন্তব্য
সংস্কারে এখনো লিখিত মতামত দেয়নি বিএনপিসহ বড় দলগুলো

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। লিখিত মতামত পাওয়ার পর অন্য দলগুলোকে সংলাপে ডাকবে কমিশন। তবে এখনো বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকে লিখিত মতামত জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হচ্ছে। সংসদ ভবনের এলডি হলে এই সংলাপে প্রথম দিনে অংশ নেবে এলডিপি। আগামী শনিবার দুটি এবং রবিবার একটি দল সংলাপে অংশ নেবে। পর্যায়ক্রমে সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সংলাপে থাকছেন না। সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত ১৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে। আজ সকাল ১০টায় লিখিত মতামত জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্য দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। দ্রুতই তারা মতামত জমা দেবে বলে জানিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লিখিত মতামত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোর ওপর আমাদের দলীয় মতামত প্রস্তুত করা হচ্ছে। যুগপত্ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যেকোনো দিন সেগুলো কমিশনে জমা দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, মতামতের জন্য যে ছক করা কাগজ (স্প্রেডশিট) দেওয়া হয়েছে, তাতে মতামত দিলে স্পষ্ট হওয়া যাবে না। বরং বিভ্রান্তি ছড়াবে। সে কারণে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। বিভ্রান্তি এড়াতে বিস্তারিত আকারে মতামত জানানো হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংস্কার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আমাদের পার্টি ফোরামে আলোচনা হয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে মতামত দেওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে কমিশনকে জানিয়েছি। জোটগতভাবে সংলাপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সুপারিশগুলোর বিষয়ে লিখিতভাবে মতামত জানানো হবে।

সূত্র মতে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। তারা সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদনগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ চিহ্নিত করে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন-সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ রয়েছে। ওই সুপারিশগুলো ছক আকারে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ওই ছকগুলো গত ৬ মার্চ ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১২টি দল নিবন্ধিত নয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯। কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলোকে তাদের মতামত জানানোর জন্য বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে সাতটি দল মতামত দিলেও পরবর্তী সময়ে আরো আটটি দল মতামত জমা দিয়েছে। অন্যরা অতিরিক্ত সময় নিয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। এ পর্যন্ত মতামত জমা দেওয়া ১৫টি দল হলো এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), আমজনতার দল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, জাতীয় গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ জাসদ।

মতামত দেওয়ার জন্য সময় নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ১২ দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

 

মন্তব্য
অর্থ উপেদষ্টা

দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে
সালেহউদ্দিন আহমেদ

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় নজর দেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বাড়ানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আগামী বাজেটে ব্যক্তি খাতের করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকার করার প্রস্তাব দিয়েছেন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশনের শীর্ষ নির্বাহীরা। একই সঙ্গে বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বক্তব্যের কলেবর কমানো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং নির্ভুল ডাটা-পরিসংখ্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

গণকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তাঁরা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। সভা পরিচালনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্যের সময় অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে আগামী জুনে। আমাদের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা এমন একটি বাজেট দিয়ে যেতে চাই যেটি পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সরকার যে-ই আসুক, যেন ছুড়ে ফেলে দিতে না পারে, আমরা সেভাবেই একটি বাজেট দিতে চাই। আগামী বাজেটে আমরা প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছি না, বরং আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছি। আমরা দেশীয় শিল্প সুরক্ষার একটি বাজেট দিতে চাই। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উৎপাদনমুুখিতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, সামনেই তো নির্বাচন। আর জুনে নতুন বাজেট। ফলে আপনারা যে বাজেট দিতে যাচ্ছেন সেটা পরবর্তী সরকারের জন্য কতটা সহায়ক হবে? যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার বলেন, বিপর্যস্ত অর্থনীতি সামলাতে আপনি সফল হয়েছেন। এ জন্য ধন্যবাদ আপনি পেতেই পারেন। আগামী বাজেট সত্যিই আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ।

কেননা অনেক দিন ধরেই মূল্যস্ফীতি। এটা আপনি কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। এবারের রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে যে ধরনের ভয় বা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা হয়নি। অনেকাংশে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আসছে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো, টিসিবি কার্যক্রমের আওতা ও বাজেট বাড়ানো, আবার রেশনিং সিস্টেম ফিরিয়ে আনা যায় কি না সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি।

সিনিয়র সাংবাদিক শওকত হোসেন মাসুম বলেন, একটি অর্থবছরে প্রকৃতপক্ষে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয় সে হিসাবটা কখনো আমরা পাইনি। এবার আপনারা সে হিসাব দেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। ১৫ বছরে গণমানুষের প্রকৃত আয় বাড়েনি। আপনারা একটা মেকানিজম করে এই হিসাবটা বের করুন যে এক অর্থবছরে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয়। সবখানে সংস্কার হচ্ছে, আপনারা বাজেট বত্তৃদ্ধতার আকারে সংস্কার আনুন। ঢাউস আকৃতির বাজেট বত্তৃদ্ধতার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা কমিয়ে আনুন। বাস্তবমুখী বাজেট দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে যে বাজেট দেওয়া হতো সেটা ছিল অহেতুক। বাজেট উপস্থাপনের নামে দেখানো হতো এক রকমের প্রামাণ্যচিত্র।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অ্যাসোসিয়েট এডিটর শামীম জাহেদী বলেন, কালো টাকা বৈধ করার ক্ষেত্রে কর সমান হবে কি না সেটায় আপনারা নজর দেবেন। দেশে এতগুলো টেলিভিশন আছে, দেড় হাজার কেবল অপারেটর আছে, সারা দেশে সাড়ে তিন কোটি বাড়ি আছে। এর ৫৪ শতাংশ বাড়িতে টেলিভিশন দেখা যায়। প্রত্যেকে ৩০০/৫০০ টাকা দিয়ে সংযোগ নেন। এখানকার টাকাটা আমরা এক টাকাও পাই না। সরকার পায় কি না আমি জানি না। এখানে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে আমরা কিছু টাকা পাব। সরকারও রাজস্ব পাবে।

সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহনেওয়াজ করিম বলেন, সবার জন্য সুখবর ও স্বস্তিদায়ক বাজেট দিন। করদাতাদের জন্য ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তন করা যায় কি না ভেবে দেখুন। এটা করতে পারলে তাঁরা সম্মানিত বোধ করবেন।

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিফলন বাজেটে থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা। করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ করা হোক। বেকারত্ব কমনোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। এ জন্য এসএমই উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন। নয়তো বন্ধ করে দিন। এটা মিনিমাম পাঁচ হাজার টাকা হওয়া উচিত। টেলিভিশনে কোনো ওয়েজ বোর্ড নেই। একটি ওয়েজ বোর্ড এখানেও থাকা প্রয়োজন। ভারতীয় চ্যানেলগুলো এখানে দেদার চলছে, আমাদের কোনো চ্যানেল ভারতে চলে না। এখানেও কাজ করা প্রয়োজন।

এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মনিউর রহমান বলেন, করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ করা হোক। বাজেট বাস্তবায়ন কতটুকু হলো সেটা দেখা দরকার।

মন্তব্য
নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না
মো. নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ চান না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক। প্রথমত, দলের ভেতরে যারা অন্যায়ের জন্য দায়ী, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গত ১৭ মার্চ দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, নতুন দলের চ্যালেঞ্জ নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ নিয়ে।

আন্দোলন থেকে সরকারে, তারপর আবার রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাটকে নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি সরকারকে বাইরে থেকে দেখা আর ভেতর থেকে দেখা সম্পূর্ণ আলাদা অভিজ্ঞতা। অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ সময় ছিল। এটি আমার জন্যও চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি সময়ের দাবিতেই পদত্যাগ করে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরেছি।

এখন আমি এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যত্ রাজনৈতিক পথচলা গঠন করতে চাই। নতুন রাজনৈতিক দল চালানো অবশ্যই কঠিন, তবে আমি প্রস্তুত।

নিজের দল এনসিপি সম্পর্কে নাহিদ বলেন, এনসিপি একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য হলো নতুন কণ্ঠস্বর, বিশেষ করে তরুণ এবং সব সামাজিক শ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য জায়গা তৈরি করা, যারা বছরের পর বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী রাজনীতি থেকে বাদ পড়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং আমাদের এজেন্ডাও সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাদের মধ্যে কোনো সংযোগ নেই। কিছু দাবিতে মিল থাকতে পারে, যেমন আমরা সাংবিধানিক সংস্কার ও গণপরিষদ গঠনের পক্ষে। কিন্তু আমাদের আদর্শিক অবস্থান ভিন্ন এবং উগ্রবাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো আগের শাসনামলের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। দেশে একটি স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। তাই নির্বাচন এনসিপির তাত্ক্ষণিক অগ্রধিকার নয়। বর্তমানে আমরা নির্বাচনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।

সূত্র : বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ