দেশের কৃষি খাতের পাশাপাশি শিল্প ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান কমেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ কম হওয়ায় কর্মসংস্থান বড় চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। এ অবস্থায় দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা জরুরি। বাজেটে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিলে কর্মসংস্থান বাড়ানো সম্ভব হবে।
কর্মসংস্থান বাড়াতে সামষ্টিক অর্থনীতির সংস্কার জরুরি
নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল বৃহস্পতিবার গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও বিশ্বব্যাংক আয়োজিত কর্মসংস্থান উন্নয়নের অভিজ্ঞতা শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানী মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ এই সেমিনার যৌথভাবে আয়োজন করে সানেম ও বিশ্বব্যাংক।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিসকা লিসলটে হনসরজে। তিনি বলেন, কর্মসংস্থান কমে আসায় দেশের কর্ম উপযোগী মানুষের যথার্থ ব্যবহার হচ্ছে না।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি বলেন, গত বছর দক্ষিণ এশিয়ার বেকারত্বের হার ছিল ৫৯ শতাংশ, যেখানে বিশ্বের অগ্রসরমান অন্য বাজারগুলোতে এই হার ৭০ শতাংশ। শুধু দক্ষিণ এশিয়াই এমন একটা অঞ্চল, যেভাবে গত দুই দশকে কর্মক্ষম মানুষের হার কমেছে।
বিশ্বব্যাংকের এই অর্থনীতিবিদ বলেন, যেসব কর্মী কৃষি ছাড়ছেন, ব্যক্তিমালিকানাধীন কম্পানিগুলো তাদের প্রক্রিয়াকরণ এবং অন্যান্য সেবায় তাদের কাজে নিয়োগ দিতে পারছে না।
তিনি বলেন, সরকারি বিনিয়োগও কমেছে। পাশাপাশি গুণগতমানের বিনিয়োগ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এর ফলে শ্রম বাজারে নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণ কমেছে।
সেলিম রায়হান বলেন, আগামী বাজেটে কর্মসংস্থান বাড়াতে সামষ্টিক অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সংস্কার করা দরকার। পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়াতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে কর্মদক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কম আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এশিয়ান ইউনির্ভাসিটি ফর উইমেনের উপাচার্য রুবানা হক বলেন, পোশাক খাতে অটোমেশনের কারণে নারীর কর্মসংস্থান কিছুটা কমেছে। এ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়াতে পুনঃ দক্ষতা ও উচ্চতর দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এই দক্ষতা না বাড়াতে পারলে কর্মসংস্থান অনেক বড় ঝুঁকিতে পড়বে। এ ছাড়া দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য বিশেষ কোটার ব্যবস্থা রাখা উচিত। কর্মের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরি করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।
সানেমের গবেষণা পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের এখনো অনেক বড় ব্যবধান রয়ে গেছে। যদিও গ্রাম পর্যায়ে কর্মে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। তবে শহরে নরীর কর্মে অংশগ্রহণ কমেছে। এ অবস্থায় গুণগতমানের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে একসঙ্গে জোর দিতে হবে।
তিনি বলেন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে এখন ২৩.৬২ শতাংশে নেমেছে। ফলে এই খাত কর্মসংস্থান বাড়াতে পারছে না। কর্মসংস্থান বাড়াতে দেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান অর্থনীতিবিদ বার্নাট হ্যাভেন বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির দিক থেকে বাংলাদেশ দুর্বল অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় কর্মসংস্থান বাড়াতে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা গুরুত্বপূর্ণ। দেশে বিনিয়োগ আনতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীলতা খুবই মৌলিক বিষয়। তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে যৌক্তিক শুল্ক কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে। সার্বিকভাবে কর্মসংস্থানের জন্য ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
বার্নাট হ্যাভেন বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও গুণগতমানের কর্মসংস্থান ধরে রাখতে হবে। এর জন্য দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করতে হবে। এ দেশে গুণগতমানের কর্মসংস্থানে বিদেশিরা বড় জায়গা নিয়ে আছে। এই কর্মসংস্থান ধরতে হলে দেশের জনশক্তির দক্ষতার মান বাড়াতে হবে।
সম্পর্কিত খবর

করপোরেট খবর

ওয়ালটন : দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন এনেছে নতুন মডেলের ১৩টি হাইব্রিড সোলার আইপিএস সলিউশন। ওয়ালটনের নতুন মডেলের হাইব্রিড সোলার আইপিএস সলিউশন সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খরচ কমাবে। ওয়ালটনের কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, ‘আইপিএস সলিউশন মডেলগুলো বর্তমানে ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দামের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক : ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ২৯২তম সভা হয়েছে গত মঙ্গলবার।

সংক্ষিপ্ত
ডিএসইতে সূচকের উত্থানেও কমেছে লেনদেন
বাণিজ্য ডেস্ক

ঈদের ছুটির আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস। এদিন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪.৯৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৫২১৯ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াসূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১১৬৯ ও ১৯১৭ পয়েন্টে রয়েছে।