<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি বছরের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে গণপিটুনিতে ৩১ জন নিহত হয়েছে। সম্প্রতি মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা পুলিশ ও বিচারব্যবস্থার প্রতি এক ধরনের অনাস্থা। যারা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এইচআরএসএসের প্রতিবেদনে দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, অক্টোবর মাসে গণপিটুনির ১৯টি ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়। আহত পাঁচজন। এর মধ্যে গত ২৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে গণপিটুনির শিকার হয়ে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক তরুণ নিহত হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর গভীর রাতে নড়াইল সদরের তুলারামপুর ইউনিয়নের  বেতেঙ্গা তুলারামপুর গ্রামে গরুচোর সন্দেহে নুরুন্নবী, দুলাল ও অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। এভাবে একে একে গণপিটুনির ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নভেম্বরে গণপিটুনির ২১টি ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছে। আহত ১৫ জন। এর মধ্যে এ মাসে খুলনায় সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের ভাগ্নে শেখ আরিফুজ্জামান রুপম গণপিটুনিতে নিহত হন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগ উঠেছে, ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির শিথিলতার কারণে বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের নির্মম ঘটনা ঘটছে। সামাজিক অস্থিরতা সেভাবে নিয়ন্ত্রণে আসছে না। তুচ্ছ কারণে একে অপরকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে বিরোধ এবং সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে। এর জেরে প্রতিপক্ষকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ  সদর দপ্তর সূত্র বলছে, গণপিটুনি বা মব জাস্টিস নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার পতনের পর শুরুতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হতে থাকে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সাবেক আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মব জাস্টিসের নামে কেউ আইন হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ওই মাসে গণপিটুনির ঘটনা বাড়তে শুরু করলে তিনি আইন-শৃঙ্খলাসংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নতুন আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা মোকাবেলায় পুলিশকে ধৈর্যের সঙ্গে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গণপিটুনিতে নির্দয় হত্যাকাণ্ডের বড় উদাহরণ রেণু হত্যাকাণ্ড। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তসলিমা বেগম রেণু নামের এক নারীকে। ওই সময় দেশে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছেলেধরা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গুজবের কারণে সাধারণের মধ্যে একটা আতঙ্ক ছিল। এ ছাড়া ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে সাভারের আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে ডাকাত সন্দেহে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলেছে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে গণপিটুনিতে দেশে যেসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, সেসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে। এসব মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব মতে, ২০২৩ সালে দেশে গণপিটুনিতে নিহত ৫১ জন, ২০২২ সালে ছিল ৩৬ জন, ২০২১ সালে ২৮ জন, ২০২০ সালে ৩৫ জন এবং ২০১৯ সালে ৬৫ জন। ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে গণপিটুনিতে নিহত হয় ২৪৮ জন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাম্প্রতিক আরো ঘটনা</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ২৬ নভেম্বর সিলেট নগরে বিলাল আহমদ মুন্সী নামের যুবদলের এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পূর্ববিরোধের জেরে নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলায় তিনি নিহত হন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ বলছে, বিলাল আহমদ নগরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের খাদিম বহর আবাসিক এলাকার জহুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রংমিস্ত্রি। ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী হিসেবে পরিচিত বিলাল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দি ইউনিয়নের শ্রীবাড়ি এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মন্তাজ আলী নামের এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলেছে, মন্তাজ আলীর সঙ্গে প্রতিবেশী আক্তার মিয়ার কৃষিজমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অপরাধ বিশ্লেষক ও মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, সামাজিক অস্থিরতার কারণে গণপিটুনি বাড়ছে। তবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর এদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া উচিত।</span></span></span></span></span></p>