<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তার সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত আপাতত থেমেছে। গত সোমবার রাখাইনের মংডু শহরের ৫ নম্বর বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন দখলের পর বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইনের ২৭০ কিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি। এর পর থেকে সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি, বোমা হামলা বন্ধ। গতকাল শুক্রবার ভোরে মংডু শহরে গোলাগুলি হয়েছে। টেকনাফের সাবরাং সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা গুলির শব্দ শুনেছে। গোলাগুলির এসব শব্দ আগের মতো ততটা বিকট নয় এবং এতে স্থানীয়রা আতঙ্কিতও নয় বলে জানিয়েছে। তবে গত দুই-তিন দিন পর শুক্রবার থেকে নাফ নদে নৌযান চলাচলে বাধা নেই। যাত্রী ও মালপত্র নিয়ে সেন্ট মার্টিন থেকে ট্রলার আসা-যাওয়া করছে স্বাভাবিকভাবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবরাং এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুক্রবার ভোরে আমাদের গ্রামের বিপরীতে রাখাইনের মংডু থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে। ঘণ্টাখানেক আমরা গুলির শব্দ শুনি। তবে এসব ছোটখাটো গুলির শব্দ ছাড়া আগের মতো মর্টার ও বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে না। আপাতত সীমান্তে আতঙ্কও নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মায়ানমারের রাখাইন পরিস্থিতিতে নাফ নদের এপার সীমান্তে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গতকাল নাফ নদ হয়ে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটে পণ্য ও যাত্রী নিয়ে ছয়টি কাঠের ট্রলার চলাচল করেছে। তবে এসব নৌযানকে মায়ানমার সীমান্ত থেকে নিরাপদ দূরত্বে চলাচল করতে হচ্ছে। এ ছাড়া নাফ নদে মাছ ধরার নৌকা চলাচলও স্বাভাবিক দেখা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুর রহমান ইবনে আমিন বলেন, দুপুরের পর শাহপরীর দ্বীপ জেটি থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে তিনটি ট্রলার মালপত্র ও যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। এ ছাড়া সেন্ট মার্টিন থেকে একটি ট্রলার যাত্রী ও মালপত্র নিয়ে এসেছে। নাফ নদের বাংলাদেশের সীমান্তে বেশ কিছু নৌকা মাছ ধরতে দেখা গেছে। এ সময় সীমান্তে কোনো গুলির শব্দ শুনিনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দা ও ট্রলারের মাঝি আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিছু শুঁটকি ও ১৫ জন যাত্রী নিয়ে সেন্ট মার্টিন থেকে শাহপরীর দ্বীপ জেটি পর্যন্ত এলাম। তবে আগের মতো আমরা মায়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্ত দিয়ে আসতে পারিনি। সেন্ট মার্টিন থেকে বের হয়ে বঙ্গোপসাগরের ঝুঁকিপূর্ণ কিছু পথ পাড়ি দিয়ে আসতে হয়েছে। তবে এখন সাগর অনেকটা শান্ত, তাই সমস্যা হচ্ছে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন যাত্রীবাহী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, শুক্রবার দিনে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটে যাত্রী ও মালপত্র নিয়ে ছয়টি ট্রলার আসা-যাওয়া করেছে। প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে মায়ানমার সীমান্ত এড়িয়ে ট্রলারগুলো বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে ভিড়ছে। আপাতত কোনো দুর্ঘটনা বা সমস্যা হচ্ছে না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, নাফ নদে নিষেধাজ্ঞা ছিল না, তবে রাখাইনের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নাফ নদে নৌযান চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছিল। এ ছাড়া যেকোনো নৌযানকে মায়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে। আপাতত সেন্ট মার্টিনে নৌযান চলাচলে কোনো সমস্যা নেই, আসা-যাওয়া স্বাভাবিক আছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঝিমিয়ে পড়েছে টেকনাফ স্থলবন্দর</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কক্সবাজার ব্যুরো চিফ আনছার হোসেন জানান, মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের চলমান যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে। সীমান্ত জনপদ টেকনাফের এই বন্দরের কার্যক্রম অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। নতুন করে মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে কোনো পণ্য আমদানি হচ্ছে না। শুধু পুরনো পণ্য বন্দর থেকে খালাসের কার্যক্রম চালু রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টেকনাফ স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে মায়ানমারে সংঘর্ষের কারণে সেখান থেকে পণ্য আমদানিতে ধস নেমেছে। কয়েক মাস পর পর মাত্র একটি-দুটি মালবাহী বোট ভেড়ে বন্দরে। এই অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে গেল এক সপ্তাহ ধরে। শুধু একটি বোট মায়ানমার থেকে এসেছে মাছ নিয়ে। টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন জানান, সপ্তাহ ধরে মাত্র মায়ানমার থেকে একটি বোটে পণ্য আমদানি হয়েছে। এর পর থেকে নতুন করে কোনো মালপত্র আমদানি হয়নি। তার মতে, মায়ানমারের চলমান সংঘর্ষের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের মতে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এই স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ২৫১ কোটি টাকা।</span></span></span></span></span></p>