<p>ঢাকায় এডিস মশাবাহিত রোগ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত আট রোগী শনাক্ত হয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ-আইসিডিডিআরবিতে চারজন ও ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চারজন শনাক্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবাই ঢাকার বাসিন্দা।</p> <p>চিকিৎসকরা জানান, আটজনই স্থানীয়ভাবেই এই রোগে সংক্রমিত হয়েছেন; তাদের তেমন কোনো শারীরিক জটিলতাও ছিল না। এর আগে গত বছর পাঁচজন জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। তারাও ঢাকার রোগী ছিল। আইসিডিডিআরবির একটি গবেষণায় ওই পাঁচজনের জিকা ভাইরাস শনাক্তের বিষয়টি ধরা পড়ে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর জ্বর, হাল্কা মাথাব্যথা, অবসাদগ্রস্ততা, কনজাংটিভাইটিস, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা, শরীরে লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি ওঠার মতো উপসর্গ দেখা যায়। আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী মোহাম্মদ শফিউল আলম গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে বলেন, অক্টোবর মাসে আইসিডিডিআরবির মহাখালী, উত্তরা এবং ধানমণ্ডি সেন্টার থেকে ১৫১টি নমুনা নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে এই ভাইরাসটি পাওয়া গেছে। তাদের দুজন উত্তরা, একজন মহাখালী ও একজন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা।</p> <p>জিকা ভাইরাসের দুটি ধরন—আফ্রিকান এবং এশিয়ান। ঢাকায় পাওয়া জিকা ভাইরাসে আক্রান্তরা এশিয়ান ধরনে আক্রান্ত ছিল বলে জানিয়েছেন শফিউল আলম। তিনি বলেন, আক্রান্তরা সবাই সুস্থ আছে, কোনো সমস্যা হয়নি। তাদের কারো বাইরে যাওয়ার কোনো ইতিহাস নেই। তার মানে সংক্রমণটা দেশের ভেতরেই হয়েছে।</p> <p>বাংলাদেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি এই মুহূর্তে নেই। ভবিষ্যতে এই রোগটা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে গর্ভবতী মায়েরা। আমাদের এখানে যে স্ট্রেইন পাওয়া গেছে, সেটা এমন হবে কি না তা পরীক্ষা না করে বলা যাবে না।’</p> <p>আর সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক তাহমিনা শিরিন বলেন, চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঢাকার বেসরকারি একটি হাসপাতালে পরীক্ষায় চারজনের শরীরে জিকা ভাইরাস ধরা পড়ে। তারা ধানমণ্ডি, শ্যামলী, বারিধারা ও ভাটারা থানাধীন আবাসিক এলাকার বাসিন্দা।</p> <p>আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত ৩৯৯ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়। তাদের মধ্যে ১৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে পাঁচজনের পজিটিভ আসে। বাংলাদেশে ২০১৪ সালে প্রথম জিকা ভাইরাস পাওয়া গেছে। এ জন্য রোগটি নতুন কিছু না। কিন্তু যেহেতু পরীক্ষা করা হয় না, তাই এটি শনাক্তও হয় না।</p> <p> </p> <p> </p>