চার কারণে কমছে না দুর্ঘটনা

মৃত্যুফাঁদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

  • ১৫০ কিলোমিটারে শতাধিক বাঁক ও সরু রাস্তা
  • বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চললেও নেই নজরদারি
  • ঈদের তিন দিনে নিহত ১৫
নূপুর দেব, নাহিয়ান চৌধুরী ও কাউছার আলম, চট্টগ্রাম
নূপুর দেব, নাহিয়ান চৌধুরী ও কাউছার আলম, চট্টগ্রাম
শেয়ার
মৃত্যুফাঁদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

পর্যটন শহর কক্সবাজার, পার্বত্য জেলা বান্দরবানসহ চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে রাত-দিন অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। ১৫০ কিলোমিটারের ব্যস্ততম এ মহাসড়কে পথে পথে বাঁক, সরু রাস্তা, বেপরোয়া গতিতে যান চলাচল, লবণবাহী গাড়ি থেকে পড়া পানিতে পিচ্ছিল সড়কসহ বিভিন্ন কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গত তিন দিনে ওই মহাসড়কের চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় পৃথক পৃথক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ১৫ জনের প্রাণহানি এবং প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, পটিয়ার মইজ্জার টেক থেকে মনসার টেক, বাদামতল, গৈড়লার টেক, আমজুর হাট টেক, পটিয়া পোস্ট অফিস মোড়, আদালত গেট মোড়, থানার মোড়, ডাকবাংলোর মোড়, কমল মুন্সির হাট মিলে ৩০টি পয়েন্টে এবং চন্দনাইশ উপজেলার ২০ পয়েন্টে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে।

সড়ক বিভাগের তথ্য মতে, পটিয়া মনসা থেকে দোহাজারী শঙ্খ ব্রিজ পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার সড়কে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে কক্সবাজারে চকরিয়ার ফাসিয়াখালী, ইনানি রিসোর্ট, বানিয়ারছড়া, পৌরসভার ভেণ্ডিবাজার, ইসলামপুর, জিগদাবাজার, ডুলাহাজারাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনাপ্রবণ বাঁকসহ শতাধিক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা রয়েছে।

সড়ক ও জনপথ, চট্টগ্রাম দক্ষিণের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে (জাঙ্গালিয়া), সেখানে ওভারটেকিং নিষেধ থাকলেও তা মানা হয়নি।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অনেক বাঁক আছে।

এর মধ্যে ২৫ থেকে ৩০টি বাঁক অতি ভয়ংকর। লোহাগাড়ার যে এলাকায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে বাঁক তো আছেই, তার ওপর সড়কটি পাহাড়ি এলাকা। রাস্তার পশ্চিম পাশ উঁচু ও পূর্ব পাশ নিচু।

তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে সওজ একটু নড়েচড়ে বসে।

আজ ওই স্থানে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। স্পিড ব্রেকার (গতি নিরোধক) দেওয়া হচ্ছে।

কক্সবাজারের চকরিয়ার কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে জানান, তিন চাকার টমটম, ইজি বাইকসহ ধীরগতির বিভিন্ন যানবাহন অবাধে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এতে দুর্ঘটনা ঘটছে।

গত সোমবার চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে দেখা যায়, পটিয়া বাইপাসের পর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটারের বেশির ভাগ সড়ক সরু।

এমনই কিছু কিছু সড়কে এক বাঁক থেকে অন্য বাঁকের দূরত্ব কম থাকার কারণে যানবাহন দেখা দুরূহ হয়ে যায়। বেশির ভাগ এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের টহল টিম দেখা যায়নি। যানবাহন চলছে নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা জানান, শুধু পর্যটনশিল্প নয়, কক্সবাজারের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, এলএনজি, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। এসব কারণে অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখনো চার লেন করা হয়নি।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মোহাম্মদপুরে সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মোহাম্মদপুরে সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার ১৫

সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার এ কে এম মেহেদী হাসান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে শনিবার দিনভর মোহাম্মদপুর ও আদাবরের বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন জাবেদ, রুবেল, মুরাদ, তাহিদুল, মিরাজ, সাম, মুনসুর, আরিফ, মন্টি পাটোয়ারী, জামিল, সজল, শোয়েব, মাহাফুজ, আরিফ ও রাশেদ।

মন্তব্য

রাজবাড়ীর সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলী রাজধানীতে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রাজবাড়ীর সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলী রাজধানীতে গ্রেপ্তার

রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলীকে রাজধানীর মহাখালী থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের অভিযোগে মামলা আছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবিপ্রধান) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, কাজী কেরামত আলীর বিরুদ্ধে ঢাকা ও রাজবাড়ীতে একাধিক মামলা রয়েছে।

এর যেকোনো একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।

মন্তব্য

‘গরমে সব আদালতে যেন এসি দেওয়া হয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
‘গরমে সব আদালতে যেন এসি দেওয়া হয়’

গরমে অধস্তন আদালতের এজলাসে (বিচারকক্ষে) শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এয়ার কন্ডিশনার-এসি) বসাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। গতকাল রবিবার তিনি এ অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, গরমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের কালো গাউন পরতে হবে।

গরমে কালো গাউন পরা নিয়ে গত ২৫ মার্চ বিজ্ঞপ্তি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঞার দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী তাপপ্রবাহের কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে মামলা শুনানিকালে আইনজীবীদের গাউন পরিধানের আবশ্যকতা শিথিল করা হলো। এ নির্দেশনা ৬ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

গতকাল চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে বিষয়টি তুলে ধরেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। সুপ্রিম কোর্টের এই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ট্রাইব্যুনাল গরমে গাউন পরা শিথিল করবে কি না জানতে চান।

তখন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, এখানে তো এসি আছে, তাই এখানে গাউন পরতে হবে। এসি থাকলে গাউন পরতে সমস্যা কী? তার পরও কেউ যদি গরমে গাউন পরতে অসুবিধা বোধ করেন, আমাদের বললে আমরা সেটি বিবেচনা করব।

চেয়ারম্যান বলেন, নিম্ন আদালতের প্রতিটি কোর্টে যেন এসি থাকে, সেই ব্যবস্থা করা উচিত। সেখানে বিচারপ্রার্থী, আসামি, আইনজীবীসহ অনেক মানুষের উপস্থিতি থাকে।

এসি না থাকলে বিচারকরা কিভাবে বিচার করবেন? গরমে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। আমাদের হাম্বল রিকোয়েস্ট, সব আদালতে যেন এসি দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালে এ সময় চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও চিফ প্রসিকিউটরের পরামর্শক ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যানও উপস্থিত ছিলেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ছুটি শেষে খুলেছে সচিবালয় কাটেনি ঈদের আমেজ

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
ছুটি শেষে খুলেছে সচিবালয় কাটেনি ঈদের আমেজ

ঈদুল ফিতরের টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে গতকাল রবিবার খুলেছে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়। কর্মস্থলে ফিরছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে ঈদের আমেজ এখনো কাটেনি। প্রথম কর্মদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে সহকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে কর্মদিবস শুরু করেছেন।

অফিসে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি ও গল্প করছেন। 

গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশির ভাগই উপস্থিত, আবার অনেক কক্ষে চেয়ার-টেবিল ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অপরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। কোলাকুলি করছেন একে অপরের সঙ্গে।

সচিবালয়ে গাড়ি রাখার স্থানগুলো অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক ছিল। তবে সচিবালয়ের করিডর, লিফটগুলোর সামনে ভিড় ছিল না, আর সচিবালয়ে দর্শনার্থী কক্ষটিও ছিল ফাঁকা। আর গাড়ি রাখার স্থানগুলো অন্যান্য সময়ের মতো গাড়িতে ভরা ছিল না।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার অফিস খুলেছে, তবে অনেকেই ঐচ্ছিক ছুটি উপভোগ করছেন।

ঈদের পরে প্রথম কর্মদিবস মোটামুটি এমনই হয়ে থাকে। খুব একটা কাজ হয় না, আবার অনেকেই ছুটিতে থাকেন। যাঁরা অফিসে এসেছেন তাঁরাও গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে সচিবালয়ের অফিস পুরোদমে শুরু হবে বলে মনে করেন তাঁরা।

গত সোমবার দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে ২৯, ৩০, ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল (শনি, রবি, সোম, মঙ্গল ও বুধবার) সাধারণ ছুটি এবং ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর ৪ ও ৫ এপ্রিল (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। সব মিলিয়ে এবার ঈদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা ৯ দিন ছুটি ভোগ করেছেন। ছুটি শেষে গতকাল অফিস শুরু হয়েছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ