<p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাঁশখালী-আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ রক্ষায় ২০১৫-১৮ অর্থবছরে বরাদ্দ হয়েছিল পৃথকভাবে ৭৯৬ কোটি টাকা। কচ্ছপ গতিতে করা ওই সব প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালে শেষ হয়েছিল। মাত্র দুই বছরের মাথায় ঘূর্ণিঝড় ছাড়া শুধু সমুদ্রের জোয়ারের আঘাতেই ২০২৪ সালে তিন কিলোমিটারের বেশির ভাগ বেড়িবাঁধ ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে এবং ভেসে গেছে। বাঁশখালী-আনোয়ারা উপজেলার নবনির্মিত খানখানাবাদ ও রায়পুর এলাকায় বেড়িবাঁধের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের করা একই স্থানগুলোতে আবারও মেগাপ্রকল্পের জন্য ২০২৪-২৭ অর্থবছরে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ৮৭৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অনুমোদিত বাঁশখালী-আনোয়ারা উপজেলার এই মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেতে সংশ্লষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী (নেভি)। প্রকল্পের ৩৪ প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে বাঁশখালীতে ৫৮৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং আনোয়ারায় ৩১৯ কোটি দুই লাখ টাকা বরাদ্দ।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রকল্প পরিচালক) খ ম জুলফিকার তারেক বলেন, চট্টগ্রামের বাঁশখালী-আনোয়ারা উপজেলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ২৮ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) সভায় ৮৭৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকার মেগাপ্রকল্প অনুমোদিত হয়। অনুমোদনের পর পাউবোর পক্ষ থেকে টেন্ডার প্রক্রিয়া গ্রহণের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। গত ১৫ জুলাই প্রকল্পের জিও জারি হওয়ার পর প্রকল্প পরিচালক নিয়োগসহ দরপত্র আহবান করেছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ নৌবাহিনী মেগাপ্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগ্রহ প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। ফলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পাউবোর পক্ষ থেকে উক্ত মেগাপ্রকল্পটির কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আদেশ হলে নৌবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল উক্ত প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদের কাছে ২০১৫-১৮ অর্থবছরে বরাদ্দের কাজ ২০২২ সালে শেষ হওয়া কাজের একই স্থানে আবারও মেগাপ্রকল্প কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আসলে তা সত্যি নয়। বেড়িবাঁধের স্থানের নাম শুধু একই, কাজের স্থান এক নয়। কিছু অংশ আগে ভালো ছিল, এখন খারাপ হয়ে গেছে; তাই আগের বরাদ্দে ওই স্থানগুলো ছিল না। এভাবেই কাজ অংশভেদে পর্যায়ক্রমে চলতে থাকবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২২ সালে শেষ হওয়া কাজ ঘূর্ণিঝড় ছাড়া শুধু সাগরের জোয়ারের আঘাতে ২০২৪ সালে ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। তবে তিনি দাবি করে বলেন, ওই প্রকল্প কাজের সময় তিনি দায়িত্বে ছিলেন না । </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর গ্রামের মাহমুদুল ইসলাম বলেন, আনোয়ারার সমুদ্র উপকূলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ নিয়ে যে তামাশা হয়েছে তা তদন্ত করা হোক। বারবার প্রকল্পের নামে বরাদ্দ হয়, লুটপাট হয়, কিন্তু বেড়িবাঁধের অস্তিত্ব থাকে না। ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরদারি করা হোক। নতুন প্রকল্প নৌবাহিনীর মাধ্যমে করা হলে উপকূলবাসী রক্ষা পাবে। বেড়িবাঁধ টেকসই হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নতুন মেগাপ্রকল্পের ব্যাপারে পাউবো থেকে জানা গেছে, প্রকল্পের অধীনে ৮৮.৭০ হেক্টর বনায়ন, ১১.৫৮৫ কিলোমিটার সমুদ্রতীরবর্তী বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ ও ঢাল সংরক্ষণ কাজ, ০১.১০০ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ হবে। এর মধ্যে বাঁশখালীর বাহারছড়া এক হাজার মিটার, খানখানাবাদে এক হাজার ৩১০ মিটার, ছনুয়ায় দুই হাজার ৮০০ মিটার, সাধনপুরে এক হাজার ১০০ মিটার, খানখানাবাদের মোহনায় পুরাতন বাঁধ শক্তিশালীকরণ এক হাজার ৩০০ মিটার সমুদ্র তীর প্রতিরক্ষা ও সাঙ্গু নদী তীর রক্ষা কাজ হবে। আনোয়ারা অংশের রায়পুরে দুই হাজার ৭৭৫ মিটার, রায়পুরে এক হাজার ২০০ মিটার, জুইদণ্ডীতে এক হাজার ২০০ মিটার সমুদ্র তীর প্রতিরক্ষা ও উপকূলীয় বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ ও ঢাল সংরক্ষণ কাজ হবে। বাঁশখালীতে ৫৮৮ কোটি ৮৩ লাখ ও আনোয়ারায় ৩১৯ কোটি দুই লাখ টাকা মিলে মোট ৮৭৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ৩৪টি প্যাকেজে কাজ হবে।</span></span></p>