বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের প্রস্তাব বাতিল ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগের স্বার্থ সংরক্ষণের দাবিতে গতকাল সোমবার সকালে ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বেবিচকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিমানবন্দর মহাসড়ক অবরোধও করেন তাঁরা। এদিকে বেবিচক বলছে, এমন ধরনের কোনো বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা করা হয়নি।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মাদ কাউছার মাহমুদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সম্প্রতি একটি নির্দিষ্ট সংস্থার নামে ভিত্তিহীন তথ্য প্রকাশ করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনতে হলে তা বোর্ড মিটিং ও দাপ্তরিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যালোচনা করা হয়। এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি।
বেবিচকের ভাষ্য মতে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি বিমানবন্দরগুলোর অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ও যাত্রীসেবা উন্নত করতে বেবিচক নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে মতামত গ্রহণ ও যাচাই-বাছাই করে।
দেশের এভিয়েশন খাতকে আরো শক্তিশালী করতে সরকার বেসরকারি সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতায় একটি আধুনিক, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য এভিয়েশনব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বেবিচক নিরলসভাবে কাজ করবে।
বেবিচক জানায়, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্তমানে এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগ (এভসেক), এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা কাজ করছেন। তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার জন্য তিন হাজার ৪৯২ জন নিরাপত্তা সদস্যসহ মোট পাঁচ হাজার ১১২ জন নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
সিভিল এভিয়েশন কর্মচারীদের বিক্ষোভ
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগের স্বার্থ সংরক্ষণের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বেবিচকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সোমবার সকালে বেবিচক সদর দপ্তরের সামনে তাঁরা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। এক পর্যায়ে তাঁরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কও অবরোধ করেন।
এ সময় তাঁরা ‘এভসেক বিভাগকে অকার্যকর করার সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা, বেবিচকের অধীনে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বন্ধ করা, বেবিচকের অর্গানোগ্রাম পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা, প্রতিষ্ঠানটির কাঠামোগত শক্তিশালীকরণ নিশ্চিত করা, ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার অ্যাক্টের আওতায় সব জনবল প্রত্যাহার করা, ১০ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের বিদ্যমান বৈষম্য দূর করা, বেবিচকের স্বনির্ভরতা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার দাবি জানান।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘আমাদের দাবি যৌক্তিক। বিমানবাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারসহ আমাদের দাবি না মানা হলে আমরা আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দেব।
’
বেবিচক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স (বিএএসএফ) নামের বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা সংস্থা গঠনের উদ্যোগে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে। প্রস্তাবিত বিএএসএফের জন্য ১০ হাজার ৬৩২ সদস্যের ৭০ শতাংশ নেওয়া হবে বিমানবাহিনী থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ বেসামরিক লোকবল থেকে নেওয়া হবে। এই ফোর্স গঠনের খরচ ধরা হয়েছে ৩৯৭ কোটি দুই লাখ টাকা। এই বাহিনী নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বেবিচকের নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে।