শরীয়তপুরে সোহাগ বেপারী নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২০২১ সালে গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় গত শনিবার দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল রবিবার রাতে শহরের চরপালং এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোহাগ বেপারী ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার আগে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
গণ অধিকার পরিষদের মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা
শরিয়তপুর প্রতিনিধি

পালং মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, সোহাগ বেপারী শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চরপালং এলাকার বাসিন্দা। গণ অধিকার পরিষদের শরীয়তপুর জেলা কমিটির সদস্য সচিব শাহজালাল সাজু বাদী হয়ে ৩০ ব্যক্তিকে আসামি করে গত শনিবার পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২১ সালে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মিরা সোহাগ বেপারীর নেতৃত্বে গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মিদের ওপর হামলা করা হয়। শাহজালাল সাজুর দায়ের করা মামলায় সোহাগ বেপারী ২৭ নম্বর আসামি।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী গণ-অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব শাহজালাল সাজু কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর ২০২১ সালের মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের সেই হামলায় আমাদের নেতাকর্মীদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছিল। তখন পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে ছিল না।
জানতে চাইলে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, এজাহার নামীয় আসামি সোহাগ বেপারীকে গণ অধিকার পরিষদের এক নেতার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর

অভয়নগরে আগুনে পুড়ে ছাই তুলার কারখানা-গুদাম
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের অভয়নগরে একটি তুলার মিলের কারখানা ও গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ও স্থানীয়দের চেষ্টায় দুই ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে কেউ হতাহত না হলেও কারখানাটির কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ভাঙ্গাগেট এলাকায় আলীপুর গ্রামে রাজু ওয়েস্ট কটন রিফাইনারী মিলের এই আগুন লাগে।
মিল মালিকের ভাই ও কারখানার পরিচালক মদন সাহা বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কারখানার পেছনে ফেলে রাখা তুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে কারখানাসহ পাশাপাশি ১০টি গুদামে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে নওয়াপাড়া ফায়ার সার্ভিস ও মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ও স্থানীয়দের চেষ্টায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও কারখানার ভেতরের মেশিন ও ১০টি গুদামে মজুদ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নওয়াপাড়া ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ও মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের একটিসহ মোট তিনটি ইউনিটের দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কারখানার পেছন থেকে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দামুড়হুদায় সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় বাংলাদেশ রেলওয়ের জমির গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে কেটে ফেলা গাছের ডাল জব্দ করেছে দামুড়হুদা উপজেলা বন বিভাগ। গতকাল সোমবার (১৭ মার্চ) উপজেলার ছোট দুধপাতিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন, ছোট দুধপাতিলা গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে আনছার আলি, তার ছেলে লোকমান আলি ও জামিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরকারি গাছ কাটার বিষয়টি পুলিশকে জানান স্থানীয়রা। পরে পুলিশ বিষয়টি বন বিভাগকে জানালে ঘটনাস্থলে যান কর্মকর্তারা। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্তরা। পরে পরে বন বিভাগ গাছের ডালগুলো জব্দ করে বন বিভাগের অফিসে নিয়ে আসেন।
তিনি আরো জানান, যাচাই বাছায়ের পর গাছগুলি রেলওয়ের জমির বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরে তিনি রেলওয়ে কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রেলওয়ে মামলা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

যশোরে চাঁদার দাবিতে ইজারাদারকে গুলি করে হত্যা
যশোর প্রতিনিধি

যশোর শহরের রেলরোড পঙ্গু হাসপাতাল এলাকায় মীর সাদী (৩২) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাদী রেলগেট এলাকার মীর শওকতের ছেলে। তিনি শহরের রেল বাজারের ইজারাদার।
নিহতের স্বজনেরা জানান, সাদীর কাছে চাঁদা দাবি করেছিল সন্ত্রাসীরা। তার জেরেই সোমবার রাতে সাদীকে ছয় থেকে সাত রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায় তারা। পরে গুলিবিদ্ধ সাদীকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে ১২টার দিকে মৃত্যু হয় তার।
যশোর ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক খান মাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় পঙ্গু হাসপাতালের সামনে সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন নামে চিহ্নিত এক সন্ত্রাসী সাদিকে গুলি করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে জানিয়েছেন। রেল বাজার নিয়ে কোন্দলে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সাকিরুল জানান, সাদীর বুক ও গলায় দুটি গুলি লেগেছে। তাকে আইসিইউ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী বাবুল জানান, জড়িতদের ধরতে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।

উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগে নতুন দ্বার খুলছে আজ
অনলাইন ডেস্ক

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে উত্তরের সাড়ে তিন কোটি মানুষের আগ্রহের জায়গায় থাকা যমুনা রেল সেতু উদ্বোধন করা হচ্ছে আজ। এর মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দেশের যোগাযোগে একটি নতুন দ্বার খুলছে। দুই লেনের এই সেতুটি ট্রেন চলাচলের জন্য আধুনিক সুবিধা এনে দিয়েছে, যা দেশের রেলপথে দ্রুততার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৫০টি পিলার আর ৪৯টি স্প্যানের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির অবকাঠামোতে দাঁড়িয়ে থাকা ডাবল ট্র্যাকের সেতুটি শত বছর টিকতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যমুনা সেতু দুই লেনের হলেও, সেতুর দুই পাশে সিঙ্গেল লেন থাকার কারণে পুরোপুরি সুফল পাওয়া যাবে না। তবে এই সেতুতে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। এখন থেকে সেতু পার হতে আগে যেখানে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হতো, সেখানে তা কমে এখন হবে মাত্র ৩ মিনিট। এ ছাড়া সেতুতে একযোগে দুই দিক থেকে ট্রেন চলাচল করতে পারবে, যা পূর্বে সম্ভব ছিল না।
আন্তর্জাতিক মালবাহী ট্রেন চলাচলের জন্যও নতুন এই সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যা দেশের বাণিজ্যিক সুবিধা বাড়াবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যমুনা রেল সেতুর পুরোপুরি সফলতা পেতে প্রয়োজন আব্দুলাপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ডাবল লাইন। সেতুটি চালু করলেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে দুই প্রান্তের সিঙ্গেল রেলপথ। জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ১১৭ কিলোমিটার রেলপথটি সিঙ্গেল।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, পশ্চিমাঞ্চল রেলের ১৭০ কিলোমিটার পথ ছুটে চলে ৪০টি আন্তঃনগর, ছয়টি আন্তর্দেশীয় ও ১৮টি মালবাহী ট্রেনকে আর থেমে যেতে হবে না সিরাজগঞ্জের যমুনা পাড়ে। এতে ভারত থেকে আমদানি করা পণ্য সহজেই পৌঁছানো যাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন জানান, সেতুর দুই পারের রেলপথ ডাবল করার প্রকল্প রয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করা হয়েছে। দ্রুত বাস্তবায়ন করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
দুই প্রান্তের সিঙ্গেল ট্র্যাকের কারণে যমুনা রেল সেতুর পুরোপুরি সুবিধা পেতে দেরি হলেও সেতুটি নির্মাণের ফলে উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) এবং যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, ‘আগে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যেখানে ২০-২৫ মিনিট লেগেছে, নতুন যমুনা সেতু দিয়ে মাত্র আড়াই থেকে তিন মিনিট সময় লাগবে সেতু পার হতে। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের যমুনা রেল সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ ১২০ কিমি বেগে দুটি ট্রেন পাশাপাশি চলাচল করবে।’