<p>পাঠ্যবই ছাড়াই ক্লাশ করছে শিশু ও কিশোররা। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সরেজমিনে উপজেলার বিদ্যালয়গুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। ফরিদপুর চরভদ্রাসনে নতুন বছরের বই পায়নি ২০ হাজার শিক্ষার্থী।</p> <p>উপজেলা সদরে বিএস ডাঙ্গী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বই ছাড়াই ক্লাসের শিশুদের পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা মুখে মুখে কোমলমতি শিশুদের মৌলিক শিক্ষা দিয়ে চলেছেন। </p> <p>বছর ঘুরে নতুন শ্রেণিতে উঠেও নতুন বই প্রাপ্তির আনন্দ বঞ্চিত শিশুরা শ্রেণিকক্ষে বসে শুধু শিক্ষকের মুখ থেকে লেকচার শুনছে। কিন্তু নতুন বইয়ের অভাবে এ বছর এখনো বাড়িতে অধ্যয়ন করার কোনো সুযোগ হয়নি শিক্ষার্থীদের। ফলে স্কুলে বই ছাড়া উৎসব বিমুখর পাঠদান উপজেলার শিশু-কিশোরদের মধ্যে অনাগ্রহতা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। </p> <p>বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, 'আমাদের বই লাগে না, আমরা নিজেরাইতো এক একটা বই।' </p> <p>বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক শিরিন সুলতানা জানান, 'এ বছর এখনো আমরা কোনো বই পাইনি তবুও রীতিমতো ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি।'</p> <p>দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থী ঋষিতা খানম জানায়, 'নতুন বই না হলে স্কুলে আসা আনন্দ লাগে না। তাই স্কুলে কম যাই।'</p> <p>মঙ্গলবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষা অফিসার স্কুল ভিজিটে গেছেন। সহকারী শিক্ষা অফিসার জামাল হোসেন জানান, 'এ বছর এখনো উপজেলায় কোনো নতুন বই আসেনি। গতকাল আমরা প্রেসে কথা বলেছি, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কিছু বই আসতে পারে। </p> <p>উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া জানান, গতকাল শুধু সপ্তম ও দশম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত এই তিন বিষয়ের বই এসেছে কিন্তু বিতরণ হয়নি। অন্য কোনো শ্রেণির বই এ বছর এখনো আসেনি।</p> <p>সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলায় রয়েছে ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি দাখিল মাদ্রাসা ও ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া উপজেলার আরো ১০টি কেজি স্কুলের শিক্ষার্থী মিলে প্রায় ২০ হাজার শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী এখনো হাতে কোনো নতুন বই পায়নি। এদের মধ্যে উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ১২ হাজার ১০৮ সেট নতুন বই, মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় ছয় হাজার ৯১০ সেট বই এবং মাদ্রাসা পর্যায়ে আরো প্রায় ৫০০ সেট বইসহ মোট প্রায় ২০ হাজার সেট নতুন বইয়ের অভাবে ঝিমিয়ে পড়েছে উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। </p>