<p>গত বছরের জুলাই ও আগস্টে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান ঘটায়  ছাত্র-জনতা। আপামর জনসাধারণ যে ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলন করে, তাতে বড় ভূমিকা ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের। ওই আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন। নানা সংকটে ধুঁকছে তাদের পরিবার। ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভক্ষণে প্রিয়জন হারানো এসব পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের জনপ্রিয় পত্রিকা কালের কণ্ঠ। তাদের বিনম্র্র শ্রদ্ধা জানিয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন পত্রিকাটি। </p> <p>বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠ’র ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দুই দিনব্যাপী আয়োজনের প্রথম দিন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এই পাঁচজন শহীদ সাংবাদিকের পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। যার মধ্যে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক ভিডিও জার্নালিস্ট তাহির জামান প্রিয়র পরিবারও সহায়তা গ্রহণ করে। কালের কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রিয়র মা। তার হাতে দুই লাখ টাকার চেক তুলে দেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আমার মেয়ে বাবাকে খোঁজে, উত্তর দিতে পারি না : শহীদ হাসান মেহেদীর স্ত্রী" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/09/1736429623-dc62a55dd20ee1f1744dab304183a127.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আমার মেয়ে বাবাকে খোঁজে, উত্তর দিতে পারি না : শহীদ হাসান মেহেদীর স্ত্রী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2025/01/09/1466918" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এ ছাড়া ৫ শহীদের পরিবারকে এক কোটি টাকা প্রদানের ঘোষণাও করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। সহায়তা প্রদান করে আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘আজকে আনন্দঘন মুহূর্তে পাঁচজন সাংবাদিককে ১ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি। নিহত সাংবাদিকের পরিবারের পাশে বসুন্ধরা থাকবে।’ নিহত সাংবাদিকদের পরিবারের সঙ্গে সমবেদনা জানান তিনি।</p> <p>সাংবাদিক শফিক রেহমান বলেন, ‘নিহত সাংবাদিকদের জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাদের অবদানে আজ আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। তাদের অবদান ভুলে যাওয়ার নয়। এসব তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের দাবি করেন।</p> <p>কালের কণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হায়দার আলী বলেন, ‘আগের সরকারের সবচেয়ে ঘনিষ্ট বেনজিরের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিবেদন করেই কিন্তু কালের কণ্ঠ সরকারের পতন ত্বরাণ্বিত করেছিল। আমাদের মালিকপক্ষ কখনই প্রতিবেদন করতে বাধা দেয়নি। শতাধিক এমপির বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবেদন আছে, যেগুলো সরকার পতনের আগের।’</p> <p>সহায়তা গ্রহণ করে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়’র মা বলেন, ‘সন্তান হারানোর কষ্ট আমি মানতে পারি না। আজকে তো আমার সন্তানের এখানে থাকার কথা ছিল। আমার ছেলে অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখেছিল। আমার ছেলেকে সাইন্সল্যাব মোড়ে গুলি করা হয়েছিল। আমার ছেলে অনেক পড়াশোনা করতো। ভাল ছবি তুলতো। ওর একটা বাচ্চা আছে।’ </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সন্তানকে হারিয়ে আমি আজকে নিঃস্ব : শহীদ শাকিলের পিতা" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/09/1736430295-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সন্তানকে হারিয়ে আমি আজকে নিঃস্ব : শহীদ শাকিলের পিতা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2025/01/09/1466922" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময়কালের কথা স্মরণ করে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একসময় আমি পত্রিকা পড়া ছেড়েই দিয়েছিলাম, টিভির খবরও দেখতাম না। কারণ তখন একজনের একনায়কতন্ত্র চলতো। অনেক সাংবাদিক হয়রানি, গুমের শিকার হয়েছেন। আজকে আমি স্বৈরাচার, খুনি, আওয়ামী, তাদের নেত্রীর বিচার চাই। যারা ভারতীয় মদতপিষ্ট সাংবাদিকতা করেছেন তাদের বিচার চাই সবার আগে। যারা হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে তাদেরও বিচার চাই। আমি মা হলেও মুর্খ মা নই। আমি সমাজ নিয়ে কাজ করি। আমি সেই মা।’ </p> <p>মিডিয়ার কর্ণধারদের প্রতি তিনি আহ্বান করে বলেন, ‘দেশ থেকে স্বৈরাচারদের হটানো গেছে। দেশ যেহেতু পরিবর্তন হয়েছে, আপনারা এবার এই সন্তানদের দেখুন। এই তরুণ প্রজন্মের সাংবাদিকদের দেখুন। তবেই ওরা আপনাদের জন্য নিজেদের নিবেদিত করতে পারবে।’</p> <p>দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক ভিডিও জার্নালিস্ট প্রিয় ১৯ জুলাই ধানমণ্ডির সেন্ট্রাল রোডে সংঘর্ষ চলাকালে শহীদ হন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। স্বপ্ন ছিল চলচ্চিত্র নির্মাণের। চিত্রকর্ম, ফটোগ্রাফিসহ সৃজনশীল কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন সিনেমা ও সিরিজ নিয়ে পর্যালোচনা (রিভিউ) করার বিষয়ে তাঁর ছিল বিশেষ দক্ষতা ও আগ্রহ। পাঠশালা-সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট থেকে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি (পেশাদার আলোকচিত্র) কোর্সের ওপর ডিপ্লোমা করেন তিনি।</p>