লিভারের যেকোনো ধরনের প্রদাহজনিত অসুখকে হেপাটাইটিস বলে। মূলত হেপাটাইটিস ভাইরাস দ্বারা লিভারের প্রদাহজনিত অসুখ হয়ে থাকে। ভাইরাস সংক্রমণের ফলে লিভারের প্রদাহজনিত অসুখকে ভাইরাল হেপাটাইটিস বলে।
হেপাটাইটিস মূলত দুই ধরনের।
লিভারের যেকোনো ধরনের প্রদাহজনিত অসুখকে হেপাটাইটিস বলে। মূলত হেপাটাইটিস ভাইরাস দ্বারা লিভারের প্রদাহজনিত অসুখ হয়ে থাকে। ভাইরাস সংক্রমণের ফলে লিভারের প্রদাহজনিত অসুখকে ভাইরাল হেপাটাইটিস বলে।
হেপাটাইটিস মূলত দুই ধরনের।
একিউট হেপাটাইটিস বা ক্ষণস্থায়ী হেপাটাইটিস : সাধারণত হেপাটাইটিস এ, বি, এবং ই, ভাইরাস দিয়ে একিউট হেপাটাইটিস হয়ে থাকে। একিউট হেপাটাইটিস সাধারণত জন্ডিস, ক্ষুধামন্দা, দুর্বলতা, পেটে অস্বস্তিবোধ, বমিভাব ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে উপস্থাপন করে। একিউট হেপাটাইটিস বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের ভেতর সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যায়।
ক্রনিক হেপাটাইটিস বা দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস : হেপাটাইটিস ‘বি’ এবং ‘সি’ ভাইরাস সংক্রমণের ফলে লিভারে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ হতে পারে।
হেপাটাইটিস প্রতিরোধের কার্যকরী টিকা আছে কি?
হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘বি’ ভাইরাসকে টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাসের কার্যকরী টিকা না থাকলেও শতভাগ কার্যকরী ওষুধ আছে। হেপাটাইটিস ‘ই’ ভাইরাসের টিকা কোনো কোনো দেশে চালু থাকলেও পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই সর্বজনস্বীকৃত টিকা এখনো চালু নেই।
হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের টিকা কখন নেওয়া যায়?
নবজাতকের ক্ষেত্রে জন্মের প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘বি’ ভাইরাসের টিকা দেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে ইপিআই ভ্যাকসিনের সঙ্গে নবজাতকদের হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ চাইলে যেকোনো বয়সে যেকোনো সময় হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের টিকা নিতে পারেন। মনে রাখতে হবে হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের টিকা শুধু জন্ডিসকেই প্রতিরোধ করে না, লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সারকেও প্রতিরোধ করে।
পরীক্ষায় কারো হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস ধরা পড়লে টিকা নিতে পারবে?
পরীক্ষায় কারো হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস ধরা পড়লে টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই আর।
হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের টিকা কয়টি নিতে হয়?
০, ১, ৬ মাস ব্যবধানে একটি করে মোট তিনটি টিকা নিতে হয়।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মুহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন
সহকারী অধ্যাপক
শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা
সম্পর্কিত খবর
বাংলাদেশে ক্যান্সারজনিত বিভিন্ন রোগের মধ্যে মূত্রথলির ক্যান্সার তুলনামূলকভাবে উপেক্ষিত রোগ। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বয়সের মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে ধূমপান করেন এমন ব্যক্তি, অথবা যারা চামড়া, রঙ বা রাসায়নিক জাতীয় শিল্পকারখানায় কাজ করেন তাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি।
মূত্রথলি হলো এক ধরনের থলির মতো অঙ্গ, যেখানে কিডনি থেকে তৈরি হওয়া প্রস্রাব কিছু সময় জমা থাকে।
প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে প্রস্রাবে রক্ত আসা এই রোগের সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
এই রোগ নির্ণয়ের জন্য একাধিক পরীক্ষা পদ্ধতি আছে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ একটি ইউরিনারি সিস্টেমের আলট্রাসনোগ্রাম দিয়েই ক্যান্সারের উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভব হয়। রোগের প্রকৃতি বুঝতে সিটি স্ক্যান, ফ্লেক্সিবল সিস্টোস্কোপি বা ইউরিন সাইটোলজি টেস্টের প্রয়োজন হতে পারে।
এর প্রাথমিক ও প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি হলো অপারেশনের মাধ্যমে টিউমারটি সরিয়ে ফেলা। যদি ক্যান্সার মাংসপেশীতে প্রবেশ করে তবে কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে। রোগের পরবর্তী ধাপে মূত্রথলি সম্পূর্ণ অপসারণের মতো জটিল সার্জারি করাও বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। দুঃখজনকভাবে, এই রোগে আক্রান্ত প্রায় ৬০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে ক্যান্সার আবার ফিরে আসে। এই কারণে রোগীর সারাজীবন ফলোআপে থাকতে হয়। চিকিৎসা পরবর্তী সময়ে প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর আল্ট্রাসনোগ্রাম বা সিস্টোস্কোপি করানো প্রয়োজন। তবে আশার কথা হলো, সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও ফলোআপের মাধ্যমে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ রোগী সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।
মূত্রথলির ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতন জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে পরিহার করা, সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান করা, ঘন ঘন ইউরিন ইনফেকশন প্রতিরোধে সতর্ক থাকা, রঙ বা কেমিকেল সংশ্লিষ্ট কারখানায় কাজের সময় সুরক্ষা নেওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় রেডিয়েশনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা এসব অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে এই রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। পাশাপাশি মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামও দেহকে ক্যান্সার প্রতিরোধে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
মূত্রথলির ক্যান্সার একটি ভয়াবহ রোগ হলেও এটি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসাযোগ্য। সচেতনতা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং সময়মতো চিকিৎসা মূত্রথলির ক্যান্সার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
লেখক
অধ্যাপক (ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) ডা. এসএম শামীম ওয়াহিদ
সিনিয়র কনসালটেন্ট- ইউরোলজি, এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডায়াবেটিস একা আসে না, আরো নানা শারীরিক সমস্যা সঙ্গে নিয়েই আসে। এই রোগ ধরা পড়লেই শুরু হয় আতঙ্ক। ক্ষতি হয় হার্ট, লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গের। আর যে অঙ্গটির ক্ষতি বেশি হয়, তা হলো চোখ।
২০২২ সালের এক সমীক্ষায় গবেষকেরা দাবি করেছেন, ডায়াবেটিসের কারণে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে অথবা তা চলেও যেতে পারে। ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে এই বিষয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ভারতে অন্তত ৮ হাজার ডায়াবেটিক রোগীর মধ্যে ১২.৫ শতাংশই ভুগছেন দৃষ্টিশক্তির সমস্যায়।
ডায়াবেটিসের কারণে রেটিনার ক্ষতি হলে তাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ‘ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি’। রেটিনা চোখের সবচেয়ে সংবেদনশীল পর্দা।
আবার কখনো রক্তনালিতে ছিদ্র তৈরি হয়ে সেখান থেকে রক্ত চুইয়ে বাইরে বের হয়ে আসে।
সমস্যা শুরু হয় চোখে ব্যথা দিয়ে। দূরের জিনিস শুধু নয়, কাছের জিনিস দেখতেও সমস্যা হয়। দুই পাশের দৃশ্য দেখাতেও সমস্যা হয় অনেক সময়েই। রং বুঝতে পারবেন না রোগী, হঠাৎ চারদিক অন্ধকার দেখা, নির্দিষ্ট কোনো অংশ দেখতে না পাওয়া এবং আচমকা আলোর ঝলকানি দেখা— এসবও ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির লক্ষণ।
ডায়াবেটিক রোগীরা চোখে এই ধরনের সমস্যা অনুভব করলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি, চোখের স্ক্যানের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করেন। লেজার থেরাপি, চোখের ইঞ্জেকশন বা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিয়ে দৃষ্টিশক্তি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও হয়। ছয় মাস অন্তর চোখ পরীক্ষা করালে বিপদের ঝুঁকি অনেক কম থাকবে।
সূত্র : আনন্দবাজার
সারা দিনের পরিশ্রম শেষে বিছানায় গা এলিয়ে দেন প্রায় সবাই। কিন্তু বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করেই রাত কেটে যায় অনেকের। ঘুম আর আসে না। সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরও দুই চোখের পাতা এক হয় না।
শরীর প্রচণ্ড ক্লান্ত হলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ আর থাকে না। ফলে ঘুম হয় না।
এ ক্ষেত্রে তন্দ্রাভাবও আসে না আমাদের। ঘুমাতে চাইলেও নানা রকমের ভাবনা ভর করে মনে।
দৈনন্দিন জীবনযাপন যেমন হয়, শরীর তার সঙ্গে সহজাত হয়ে ওঠে। রাত জাগার অভ্যাস যদি থাকে, তাহলে যত ক্লান্তই হন না কেন, নির্ধারিত সময়ের আগে ঘুম আসবে না।
প্রথমেই তাই নিজের শরীরকে বুঝতে হবে।
ঘুমাতে যাওয়ার সময় ফোন, ল্যাপটপ, এমনকি টিভিও চালাবেন না। এতেও শরীরের সময়জ্ঞান ঘেঁটে যায়।
ঘুমানোর আগে গোসল করলে সহজে চোখের পাতা এক হয়। খুব ভারী খাবার খাবেন না রাতে। ক্য়াফিন যুক্ত পানীয়, অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এতে অভ্যাস হয়ে যাবে শরীরের। তবে কিছুতেই কিছু না হলে অবশ্যই চিকিৎসা করান।
সূত্র : এবিপি লাইভ
মেয়েদের মতো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রূপচর্চা কয়জন পুরুষ করেন? কেউ কেউ দাড়ি কামানোর পরে সামান্য ক্রিম বা শীতকালে একটু ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন। কিন্তু সকালে কাজে বেরোনোর সানস্ক্রিন ব্যবহার করার অভ্যাস কয়জনের রয়েছে?
গবেষণা বলছে, পুরুষদের ত্বক মহিলাদের তুলনায় অনেক বেশি স্পর্শকাতর। যদিও পুরুষদের ত্বক মহিলাদের থেকে ২০-২৫% পুরু। তবুও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে পুরোপুরি রক্ষা পায় না।
পুরুষেরা যেভাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন
ত্বক তৈলাক্ত হলে বেশি ঘাম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
রোদে বেরোনোর পর ঘামের কারণে সানস্ক্রিন কিছুক্ষণের মধ্যেই উঠে যায়, তাই সারা দিনে দুই ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন লাগানো প্রয়োজন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সানস্ক্রিন সাথে রাখুন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা