<p>সূর্য থেকে দূরে অবস্থান এদের। অনেকটা বরফ ও পাথরের একটা বলের মতো। মাত্র কয়েক কিলোমিটার পরিসর নিয়ে যার অবস্থান। জমাট অন্ধকারের ভেতর দিয়ে ধীর লয়ে এগিয়ে চলে। মূলত উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান উজ্জ্বল কেন্দ্র ও অনুজ্জ্বল লেজের গ্যাসীয় জ্যোতিষ্কই ধূমকেতু। জড়, নোংরা বরফের বল হিসেবে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটায়। এরপর ধীরে ধীরে এটি নিজের ভেতরেই গুঁটিয়ে যায়। </p> <p>সূর্যের উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ধূমকেতুরও বাইরের পৃষ্ঠ উষ্ণ হয়। এই উষ্ণতার প্রভাবে বরফ বাষ্পীভূত বাষ্প হয়ে কাঠামোটি ছড়িয়ে যায়। বিচ্ছুরিত আলোর মতো। বাষ্পীয় এই ‘কোমা’ হাজার হাজার কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বিচ্ছুরিত অবস্থাটাই সক্রিয় ধূমকেতুর আসল রূপ বা আচরণ। ধীরে ধীরে কাঠামোটি উত্তপ্ত অভ্যন্তরীণ সৌরজগতের দিকে ধাবিত হয় ও পতন ঘটে। তারও আগে নিজ দেহ কাঠামোর পদার্থ ছেড়ে দিতে থাকে। দুটো লেজ কোমা থেকে লাখ লাখ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। </p> <p>একটা লেজ বাঁকা গঠনের। হলুদ বর্ণের সেটা। সূর্যালোকের ধূলিকণা ও নিউক্লিয়াস বিস্ফোরণে সৃষ্ট এই অংশ। হলুদাভ লেজটি ধীরে পেছনে চলে যায়। দ্বিতীয় লেজটি নীলাভ। চৌম্বকীয় সৌরবায়ুতে বন্দি প্লাজমা থেকে সৃষ্ট, সূর্য থেকে দূরে সোজা লেজ। বরফীয় যেকোনও কাঠামো থেকে ধূমকেতুর জন্ম হতে পারে। <br /> দূরবর্তী ওর্ট মেঘ বা কুইপার বেষ্টনী থেকে অনিয়মিত ছোট কক্ষপথে এসে মানব-ইতিহাসের নজির হয়ে থাকে ধূমকেতুগুলো। হ্যালির ধূমকেতু তেমনই একটা উদাহরণ।</p> <p>হ্যালির এই ধূমকেতু ৭৫-৭৬ বছরে একবার আকাশে দেখা যায়। একটা সময় পর ধূমকেতু নিষ্ক্রিয় হয়ে গ্রহাণুতে পরিণত হয়। কারণ, সূর্য একসময় ধূমকেতুর জ্বালানি কেড়ে নেয়। সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এমন ঘটে মূলত যখন ধূমকেতুটি তার সফর শেষ করে ফেলে। ৭৬ বছরের সূর্যের সফর পুরো করে হ্যালির ধূমকেতু আমরা আবারও দেখতে পারব ২০৬১ সালে। ধূমকেতুর লেজ গঠনটিকে ঝাঁটার আকার দেয় বলে বাংলায় একে ‘ঝাঁটাতারা’ও বলা হয়।</p> <p>রাতের আকাশ জুড়ে সুন্দর ধূমকেতুর মতো জ্বলজ্বল করে যারা এরা মোটেও স্থির নয়। নয় ধ্রুব বা সুস্থির। বরং সম্পূর্ণ ক্ষণস্থায়ী বিষয়। এদের গঠন পুরো হয়নি, হচ্ছে। কিংবা বিকাশ প্রক্রিয়া চলমান। </p> <p>পরিমণ্ডল<br /> পৃথিবী যখন মাত্র গড়ে ওঠছে। তখন বিশাল সংঘর্ষে তরুণ পৃথিবীর সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডল বিস্ফারিত অবস্থাপ্রাপ্ত হয়। সংঘর্ষের পর পৃথিবীর আবরণে আটকে থাকা বিচ্ছিন্ন অংশ থেকে পৃথিবী পেয়েছে পানি, অপরিচিত গ্যাস। অবশ্য বিজ্ঞানীদের ধারণা, পানিসমৃদ্ধ ধূমকেতুর আছড়ে পড়াতে পৃথিবীর হাইড্রোস্ফিয়ারে অবদান রাখলেও রাখতে পারে। প্রতিরক্ষামূলক বায়ুমণ্ডল ও উল্লেখযোগ্য পানি যদি পৃথিবী না পেত, তবে প্রাণের অস্তিত্ব কখননোই সম্ভব ছিল না।</p> <p>সম্পর্কিত বিষয়<br /> গ্রহাণু<br /> এরিস, প্লুটো ও বামন গ্রহ</p> <p><strong>বিজ্ঞানী</strong><br /> <strong>ইয়ান ওর্ট</strong><br /> ১৯০০-১৯৯২<br /> ডাচ্ জ্যোতির্বিজ্ঞানী। ধূমকেতুর ওর্ট মেঘের নামকরণ নিজের নামে করেন।<br /> <strong>ফ্রেড হুইপল</strong><br /> ১৯০৬-২০০৪<br /> মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী। যিনি ধূমকেতুর নিউক্লিয়াসকে বরফ-সমষ্টি বা ‘নোংরা তুষারবল’ হিসেবে প্র</p> <p><strong>বর্ণনা</strong><br /> জ্যাচরি কে. বার্টা।<br />  </p>