<p>হার্ট অ্যাটাক বর্তমান যুগে বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি। প্রতিবছর হার্ট অ্যাটাকের কারণে অকালে ঝরে যাচ্ছে। হার্ট অ্যাটাকের অনেক কারণ আছে। সবচেয়ে বড় কারণগুলো আপনার হাতেই রয়েছে। সেগুলো হলো কিছু বদ-অভ্যাস। এই অভ্যাসগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।</p> <p><strong>ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহার</strong><br /> ধূমপান হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ। এ বিষে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল ড. ডেভিড জে. মারিস বলেন,  ‘ধূমপান হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকের মধ্যে থাকা নিকোটিন এবং কার্বন মনোক্সাইড রক্তচাপ বাড়ায় এবং ধমনীতে চর্বি জমার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। ফলে রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি হয়।’</p> <p>হার্ট অ্যাটাক এড়াতে ধূমপান পুরোপুরি বন্ধ করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি গ্রহণ করুন।</p> <p><strong>অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস</strong><br /> স্পেনের কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ সেন্টারের গবেষক  ড. আনা মারিয়া গার্সিয়া ‘অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যেমন অতিরিক্ত ফাস্টফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই ধরনের খাবার ধমনীর দেয়ালে চর্বি জমার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে, যা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।’ </p> <p>এর থেকে বাঁচতে বেশি করে শাকসবজি, ফল, এবং আঁশযুক্ত খাবার খান। খাবারের তালিকা থেকে লবণ ও চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনুন। বাড়িতে রান্না করা স্বাস্থ্যকর খাবার খান।</p> <p><strong>অলসতা ও শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি</strong><br /> অধিকাংশ মানুষ এখন সারা দিন অফিসে বা ঘরে বসে কাজ করেন। নিয়মিত ব্যায়ামের অভাবে ওজন বাড়ে, রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দাঁতে কি পোকা হয়? বিজ্ঞান কী বলে?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/19/1734601938-c22febb739158ebfd895fcb43d8f3d03.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দাঁতে কি পোকা হয়? বিজ্ঞান কী বলে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/12/19/1459151" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এর থেকে মুক্তি পেতে, দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন। অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ না করে, মাঝে মাঝে উঠে হাঁটুন।</p> <p><strong>অতিরিক্ত মানসিক</strong><br /> অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা স্ট্রেস শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। এটা রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।</p> <p>মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করুন। পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটান। প্রয়োজনে পরামর্শকের সঙ্গে কথা বলুন।</p> <p><strong>পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব</strong><br /> পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমে যায়। ঘুমের অভাবে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।</p> <p>প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান। ঘুমানোর সময় স্ক্রিন (মোবাইল/ল্যাপটপ) ব্যবহার বন্ধ করুন।</p> <p><strong>মদ্যপান</strong><br /> অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং এটি হার্টের পেশিকে দুর্বল করে ফেলে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।</p> <p>সুস্থ থাকতে মদ্যপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করুন। স্বাস্থ্যকর পানীয় যেমন পানি, গ্রিন টি বা ফলের রস পান করুন।</p> <p><strong>ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখা</strong><br /> ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ধমনীতে চর্বি জমে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এটি হৃদপিণ্ডের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।</p> <p>নিয়মিত রক্তচাপ ও রক্তের সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন।</p> <p><strong>অতিরিক্ত ওজন</strong><br /> স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন হার্টের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে এবং কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের মাত্রা বাড়ায়। এটা হৃদরোগের বড় কারণ।</p> <p>স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করুন, শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ বাড়ান।</p> <p><br /> <strong>পর্যাপ্ত পানি পান না করা</strong><br /> পানি শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। পানি কম পান করলে রক্ত ঘন হয়ে হার্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। </p> <p>দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে পানি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।</p> <p>হৃদরোগ থেকে মুক্ত থাকতে জীবনযাপনে নিয়মিততা ও সচেতনতা আনতে হবে। ছোট ছোট বদ-অভ্যাসই ধীরে ধীরে বড় বিপদের কারণ হতে পারে। তাই এসব অভ্যাস পরিত্যাগ করে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুরু করুন। মনে রাখবেন, সুস্থ হৃদয় মানেই দীর্ঘ এবং আনন্দময় জীবন।</p> <p>সূত্র : ল্যানসেট</p>