বৃষ্টিপাতের ফলে দক্ষিণ কোরিয়ায় গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা ভয়াবহ দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষ আজ শুক্রবার এই খবর জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ২০২৪ সালে রেকর্ড তাপমাত্রার অভিজ্ঞতা অর্জনের পর কয়েক মাস ধরে এই অঞ্চলে গড়ের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
তবে বৃহস্পতিবার রাতভর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে দমকলকর্মীরা সবচেয়ে ভয়াবহ কিছু দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।
এএফপির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় দাবানলে বিস্তীর্ণ এলাকা পুড়ে গেছে। প্রায় ৩৭ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আগুনে উইসং শহরের ১ হাজার ৩০০ বছরের পুরনো একটি মন্দির পুড়ে গেছে। যেখান থেকে অনেক সাংস্কৃতিক নিদর্শন সরিয়ে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছিল। গত শুক্রবার সানচেং কাউন্টিতে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং পরে তা উইসেওং কাউন্টিতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রবল ও শুষ্ক বাতাসের কারণে দাবানল পার্শ্ববর্তী কাউন্টি গিয়ংবুক, উইসেওং, আন্দং, চেওংসং, ইয়ংইয়ং এবং সানচেং-এ ছড়িয়ে পড়ে।
আরো পড়ুন
ভয়াবহ দাবানলে দ.কোরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ২৪
আগুনের কারণে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যানজটে আটকে থাকা গাড়িগুলোর ওপরও আগুনের গোলা পড়ায় জনসাধারণ এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মোট ২৮ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে নয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তিনি জানান।
নিহতদের মধ্যে একজন পাইলট রয়েছেন যার, হেলিকপ্টার গত বুধবার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল।
অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আগুনের কবলে আটকা পড়ে চারজন দমকলকর্মী এবং অন্যান্য কর্মীও প্রাণ হারায়।ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হান ডাক-সু বলেছেন, ‘আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল এটি।’
দক্ষিণ কোরিয়া স্বাভাবিকের চেয়ে শুষ্ক পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বছর ইতিমধ্যেই ২৪৪টি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৪ গুণ বেশি। সরকার দাবানলের অন্যতম প্রধান কারণ অবৈধভাবে কিছু পোড়ানোর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ জোরদার করার এবং ব্যক্তিগত অসাবধানতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সূত্র : এএফপি, বিবিসি