<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জবাবদিহি আছে এমন রাষ্ট্রব্যবস্থায় রাষ্ট্রের প্রতিটি কাজের পেছনে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে। কিন্তু নিকট অতীতে বাংলাদেশের জনপ্রশাসনের অনেক কাজেই সে ধরনের সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া যায় না। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণের নামে গত ১৫ বছরে ৪৭৫ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করেছে। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারকে শক্তিশালীকরণ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> প্রকল্পের আওতায় এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হলেও রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে তা তেমন কোনো কাজেই আসেনি। এর প্রধান কারণ, তাঁদের অভিজ্ঞতা ও অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনার অভাব। এ অবস্থায় আবারও এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, গত ১৫ বছরে বিসিএস কর্মকর্তাদের মধ্যে বিদেশে পিএইচডি করেছেন ১৩ জন, মাস্টার ডিগ্রি নিয়েছেন ৮৭৪ জন, ডিপ্লোমা করেছেন ১৭৬ জন, রিফ্রেশার্স কোর্স করেছেন ৪৪ জন সচিব এবং সংক্ষিপ্ত কোর্স করেছেন এক হাজার ২৫২ জন অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব। এর মধ্যে বেশির ভাগ কর্মকর্তা যুক্তরাজ্যের হার্ভার্ড, ডিউক, আইটিসি-আইএলও, ম্যাকক্যারি, কার্টিন, সাসেক্স, অক্সফোর্ড ও বার্মিংহাম এবং যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, অস্ট্রেলিয়ার নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। যাঁরা যে বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ বা ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন, তাঁরা এখানে তাঁদের সে জ্ঞান প্রয়োগ করতে পারছেন না। তাঁদের পদায়ন করা হয় এমন সব খাতে, যেখানে তাঁদের অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগের কোনো সুযোগই নেই। তাহলে রাষ্ট্রের এত বিপুল অর্থ ব্যয়ের উদ্দেশ্য কী? জানা যায়, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের উপসচিব (প্রত্যাবাসন শাখা) মো. তালুত মাস্টার্স ও পিএইচডি করেছেন টেকসই জ্বালানি নীতি নিয়ে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে প্রকৌশলী এই কর্মকর্তাকে রাখা হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। এমন প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে। একজন প্রশিক্ষণ বা ডিগ্রি নিয়েছেন পরিবেশ বিষয়ে, কিন্তু তাঁকে হয়তো পদায়ন করা হয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়ে, কৃষিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে হয়তো পাঠানো হয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও উচ্চতর জ্ঞান অর্জনকে কাজে লাগানো না গেলে কেবল প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা মনে করি, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা ও প্রশিক্ষণকে সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকতে হবে। প্রশাসনকে ক্রমান্বয়ে আরো দক্ষ ও সুসংহত করতে হবে।</span></span></span></span></p>