<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ নিজেই এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">টিউলিপ এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) তাঁর পদত্যাগের কথা জানান। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো পদত্যাগপত্রের ছবিও পোস্ট করেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, অভিযোগ পর্যালোচনার পর ব্রিটিশ সরকারের ইনডিপেনডেন্ট এথিকস অ্যাডভাইজার (স্ট্যান্ডার্ডস ওয়াচডগ) স্যার লাউরি ম্যাগনাস নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি মন্ত্রী হিসেবে কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেননি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় টিউলিপকে লেখা স্টারমারের একটি চিঠি প্রকাশ করেছে। সেখানে তিনি লিখেছেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার পাশাপাশি আমি এটাও স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্বাধীন উপদেষ্টা হিসেবে স্যার লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন যে তিনি মন্ত্রী হিসেবে আপনার বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন ও আর্থিক অনিয়মের কোনো অভিযোগের ঘটনা পাননি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি মন্ত্রী থাকলে সরকার তার কাজে মনোযোগ দিতে পারবে না</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এমন কথা উল্লেখ করে টিউলিপ বলেছেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ কারণে আমি আমার মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কনজারভেটিভ পার্টির ১৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে গত জুলাইয়ে ক্ষমতায় আসা লেবার পার্টি ক্রমাগত ধুঁকছে। এর মধ্যে ৪২ বছর বয়সী টিউলিপের পদত্যাগ স্টারমারের নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠায় চাপে পড়েন যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে থাকা টিউলিপ। গত সোমবার বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দ্বিতীয় তদন্ত শুরু করার ঘোষণা দেয়। রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে একটি জমি দখলের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। রাশিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের অভিযোগে এরই মধ্যে টিউলিপ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলছে। টিউলিপের লেনদেনসংক্রান্ত বিবরণী জমা দিতে দেশের ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন তদন্তকারীরা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে টিউলিপকে বরখাস্ত করতে যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানান একজন বিরোধীদলীয় এমপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি লেখেন। মন্ত্রীদের আচরণ ও নৈতিকতার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়ে থাকেন ম্যাগনাস। ওই তদন্ত চলাকালেই পদত্যাগ করলেন টিউলিপ। পদত্যাগপত্রে টিউলিপ লেখেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আপনি জানেন, আমার অনুরোধে বিষয়টি গভীর পর্যালোচনা করে ম্যাগনাস লরি নিশ্চিত করেছেন যে আমি মন্ত্রী হিসেবে কোনো বিধি লঙ্ঘন করিনি। আমার মালিকানাধীন বা বসবাসকারী সম্পত্তির বিষয়ে কোনো অনিয়মের প্রমাণ মেলেনি। আমার কোনো সম্পত্তি বৈধ ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে এসেছে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এমন ধারণারও ভিত্তি নেই।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমার পরিবারের বিষয়টি সবাই জানে এবং মন্ত্রী হওয়ার পর আমি সরকারকে আমার পারিবারিক সম্পর্ক ও ব্যক্তিগত স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে অবগত করেছি। সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শের পর আমার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে উল্লেখ করতে বলা হয়েছিল যে আমার খালা বাংলাদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং স্বার্থের সংঘাত এড়াতে বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিষয় থেকে নিজেকে দূরে রাখতে বলা হয়েছিল। আমি সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং সরকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করেছি ও করছি বলে আপনাকে আশ্বস্ত করছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> টিউলিপের পদত্যাগপত্রের জবাবে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার লেখেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছি। স্বাধীন উপদেষ্টার কাছে নিজেকে সমর্পণ করায় এবং সত্য উদঘাটনে পুরোপুরি সহযোগিতা করায় আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আপনার জন্য ভবিষ্যতে দরজা সব সময় খোলা রয়েছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১৩ সালে শেখ হাসিনার মস্কো সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সময় টিউলিপ সিদ্দিকও উপস্থিত ছিলেন। বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম তাঁর সেই ছবি এ সময় ফলাও করে প্রচার করে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি বেইদেনকস বেশ কয়েকজন বিরোধীদলীয় নেতা টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিত খবর ও সম্পাদকীয় প্রকাশিত হতে থাকে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী এখনো টিউলিপের ওপর আস্থা রাখলেও তাঁর সম্ভাব্য বিকল্পের শর্টলিস্ট তৈরি করছেন। গত সোমবার টিউলিপকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায় দুর্নীতিবিরোধী প্রধান দুটি সংস্থা। তারা মনে করছে, ব্রিটেনের সুনামের স্বার্থেই টিউলিপকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সোমবার ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি দমনবিষয়ক দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী জোট অক্সফাম এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতো দাতব্য সংস্থাগুলো। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফিন্যানশিয়াল টাইমস জানিয়েছে, পেনশনমন্ত্রী এমা রেনল্ডস টিউলিপ সিদ্দিকের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">চুরি হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : সিএ প্রেস উইং</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">চুরি হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। গতকাল রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিসের এক বিবৃতিতে সরকারের এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিবৃতিতে বলা হয়, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমরা জবাবদিহি ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং চুরি হওয়া অর্থ বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফেরত আনতে বিশ্বজুড়ে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করব।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> অর্থপাচারের ঘটনায় বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ন্যায়বিচার দাবি করে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জনগণের অর্থ ও সম্পদ চুরির ঘটনা এবং বিগত সরকারের লোকজন যাঁরা এই সম্পদ চুরির সঙ্গে জড়িত, তা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আওতায় আনা প্রয়োজন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সূত্র : বাসস, এএফপি, বিবিসি</span></span></span></span></span></p>