<p style="text-align:justify">শব্দদূষণ বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুতর পরিবেশগত সমস্যা। শহরাঞ্চলে যানবাহনের হর্ন, নির্মাণকাজ ও মাইকের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে শব্দদূষণ বেড়েই চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী শব্দের সহনীয় মাত্রা ৫০ থেকে ৬০ ডেসিবেল হলেও ঢাকার মতো শহরগুলোতে তা প্রায় ৮৫ থেকে ১১০ ডেসিবেলে পৌঁছে যায়। শব্দ দূষণের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব পড়ছে। এর ফলে ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ, শ্রবণশক্তি হ্রাস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে একাগ্রতা ও শিখন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার আশংকাও দেখা যায়। এমন প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে বসুন্ধরা শুভসংঘ পল্লবী থানা শাখার উদ্যোগে ‘শব্দহীন শান্তি, সুস্থ জীবনের প্রতিশ্রুতি’ শীর্ষক একটি গণসচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">এ সময় বক্তারা বলেন, দেশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় শব্দদূষণ মোকাবেলা জরুরি। হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধ, হর্ন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ, নির্মাণকাজে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নির্ধারিত ‘নীরব এলাকা’ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরেন। শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি এবং এর নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান তারা।</p> <p style="text-align:justify"><strong>বক্তারা শব্দ দূষণের কিছু গুরুতর ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেন -</strong></p> <p style="text-align:justify">শ্রবণশক্তি হ্রাস: দীর্ঘ সময় উচ্চমাত্রার শব্দে থাকা শ্রবণশক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস করতে পারে।<br /> মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: অতিরিক্ত শব্দের কারণে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও হতাশার মতো মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।<br /> ঘুমের ব্যাঘাত: উচ্চ শব্দের কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়, যা স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষমতায় প্রভাব ফেলে।<br /> হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি: শব্দ দূষণ উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।<br /> শিশুদের শিখন ক্ষমতা হ্রাস: শিশুদের একাগ্রতা, মনোযোগ এবং শিখন ক্ষমতা প্রভাবিত হয়।<br /> মাথাব্যথা ও মাইগ্রেন: উচ্চমাত্রার শব্দে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে মাথাব্যথা এবং মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।<br /> বন্যপ্রাণীর উপর প্রভাব: শব্দ দূষণ বন্যপ্রাণীদের প্রজনন, চলাচল এবং আচরণে বিঘ্ন ঘটায়।<br /> সমাজে অসন্তোষ সৃষ্টি: শব্দ দূষণ মানুষের মধ্যে বিরক্তি ও অসন্তোষ সৃষ্টি করে, যা সামাজিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলে।</p> <p style="text-align:justify">বসুন্ধরা শুভসংঘের কার্যনির্বাহী সদস্য ও পল্লবী থানা শাখার সভাপতি তাহমিদ আরেফিন সাজিদ বলেন, ব্যক্তিগত ও সামাজিক পর্যায়ে  সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে শব্দদূষণ রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব। বসুন্ধরা শুভসংঘ সেই লক্ষ্যে আজকের এই কর্মসূচি পালন করছে। আমরা সচেতন হলেই তবে পাল্টাবে দেশ।</p> <p style="text-align:justify">এ সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রাফিক (উত্তর) বিভাগের সার্জেন্ট মো. এরশাদুল হক ও কনস্টেবল মো. মোজাম্মেল হক, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি মো. মোজাম্মেল হোসেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা কলেজ সমন্বয়ক ইমরান হোসাইন, বসুন্ধরা  শুভসংঘ পল্লবী থানা শাখার সভাপতি তাহমিদ আরেফিন সাজিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মবিনুল হায়দার শুভ্র, দপ্তর সম্পাদক মো. মোহতামিম মর্শেদ দিহান, কর্ম ও পরিকল্পনা সম্পাদক মো. ইরাম হোসেন, পল্লবীর ২নং ওয়ার্ড এর কার্যকরী সদস্য হাফিজ আইয়ুব হাসান ও মো.আসিফ হোসাইন এবং ৩ ও ৫নং ওয়ার্ডের নাদিম আহম্মেদ ও এনতাম প্রমুখ। </p>