<p>বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের কোনোটা দেয়ালে, আবার কোনোটা টিনের বেড়ায় লাগানো—এমনকি কোনোটা দীর্ঘদিন লাগানো থাকলেও এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যেগুলো দৃশ্যমান রয়েছে সেগুলো কোনো সময়েই কাজে আসছে না। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে এভাবেই পড়ে রয়েছে। অথচ এই বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিনগুলো ক্রয় করতে শিক্ষকদের চাপের মুখে ফেলে নেওয়া হয়েছে ২৫ হাজার টাকা করে, দেওয়া হয়নি কোনো ভাউচার।</p> <p>ময়মনসিংহের নান্দাইলের ১৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিনগুলো কাজে না আসার ফলে ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পানিতে গেলেও লাভবান হয়েছেন একটি চক্র।</p> <p>জানা যায়, শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ময়মনসিংহের নান্দাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একসঙ্গে বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয় প্রায় পাঁচ বছর আগে। তবে সেগুলোতে ডাটাবেস সংযোগ এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এ কারণে স্থাপনের পাঁচ বছরেও একদিনও ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে মেশিনগুলোর মেরামতের মেয়াদও। এসব মেশিন ক্রয় নিয়েও রয়েছে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট মামলায় খালাস পেলেন বিএনপি নেতা দুলু" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/15/1736936675-7c2f974d4d4643877246dd478fcb2acc.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট মামলায় খালাস পেলেন বিএনপি নেতা দুলু</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2025/01/15/1468940" target="_blank"> </a></div> </div> <p>স্থানীয় সূত্র জানায়, নান্দাইলে ১৭৮টি সরকারি বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপন করা হয়। ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে এসব মেশিন কেনা হলেও এগুলো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাজে আসেনি। কেনার পাঁচ বছর পরও মেশিনগুলো চালু হয়নি। ফলে গচ্চা গেছে সরকারের লাখ লাখ টাকা।</p> <p>অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে হাজিরা মেশিনগুলো স্থাপনা করা হয়। এসব মেশিন আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ জুয়েল ও তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যৌথভাবে একটি কম্পানি থেকে কেনেন। এইচআর অটোমেশন’ নামে একটি কম্পানি ‘ইনোভয়েস’ ব্র্যান্ডের হাজিরা মেশিন সরবরাহ করে। এসব কিনতে বিদ্যালয়ের স্লিপ ফান্ডের টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ জুয়েলের নির্দেশে। সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ২৫ হাজার টাকার চেক হাতে তুলে দেন চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি তখনকার আওয়ামী লীগ নেতা কায়ছারুল আলম ফকিরকে। পরে ওই কম্পানির কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা মূল্যে ৬৪টি হাজিরা মেশিনগুলো আনা হয়। বাকি মেশিনগুলো ক্রয় করা হয়নি। সব টাকাই তখন আত্মসাৎ হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="রাজবাড়ী জেলার শীর্ষ পদে তিন নারী" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/15/1736936358-1ecea768c5678fa9ffe2da82b63d250d.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>রাজবাড়ী জেলার শীর্ষ পদে তিন নারী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2025/01/15/1468938" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ওই মেশিনগুলো স্থাপন করে দেন আতিক নামে একজন। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোক বলে জানা গেছে।</p> <p>গত রবিবার, সোমবার, গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার কমপক্ষে ২০টি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিনগুলো প্রধান শিক্ষকের বা শিক্ষকদের কমন কক্ষের এক পাশে অযত্মে অবহেলায় লটকানো রয়েছে। কোথাও কোনো সংযোগ নেই।</p> <p>জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, মেশিন লাগানোর সময় নির্দিষ্ট জায়গা দেখানোর পর সেখানেই বসানো হয়। এরপর আর কোনো কাজে আসেনি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="যুবদল নেতার বাড়িতে গুলিবর্ষণ, আহত বাবার মৃত্যু" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/15/1736935926-b33aba2e961ff0439cf7be2bdeb54271.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>যুবদল নেতার বাড়িতে গুলিবর্ষণ, আহত বাবার মৃত্যু</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2025/01/15/1468936" target="_blank"> </a></div> </div> <p>পাঁচরুখি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক  জানান, ওই সময় তার বিদ্যালয়ের জন্য স্লিপের ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখান থেকে ২৫ হাজার টাকার একটি চেক কায়ছারুল আলম ফকির নামে একজনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।</p> <p>অপর দিকে উপজেলা কাদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম রেজাউল ইসলাম ভুইয়া জানান, তিনি ২৫ হাজার টাকার চেক দিয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি কায়ছারুল আলম ফকিরের কাছে। কিন্তু তিনি হাজিরা মেশিন পাননি। এটা খুবই দুঃখজনক।</p> <p>নান্দাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম আঞ্জু বলেন, ‘সব প্রধান শিক্ষকদের এক রকম প্রেসার দিয়ে তখন ২৫ হাজার টাকা চেক নেওয়া হয়। এতে শিক্ষকদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। তারপরেও যদি মেশিন ভালো মানের ও এখন পর্যন্ত সচল থাকত তাহলে কোনো অভিযোগ ছিল না।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদ আলীর (বীরপ্রতীক) জীবনাবসান" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/15/1736936107-4efdd2f969559e8b1c92e99f32ded48e.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদ আলীর (বীরপ্রতীক) জীবনাবসান</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/dhaka/2025/01/15/1468937" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও নান্দাইল উপজেলা আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ ভুইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তখন এটা এক ধরনের জুলুম হয়েছিল। শিক্ষকদের মতামতের কোনো মূল্যায়ন দেওয়া হয়নি। এখন এত টাকা ব্যয়ের এই হাজিরা মেশিনগুলো কোনো কাজে আসছে না।’</p> <p>চেক উত্তোলনকারী কায়ছারুল আলম ফকির বলেন, ‘আমি তো ওই সময় হাজিরা মেশিনের ব্যাপারে একটি আইটি কম্পানির সঙ্গে কন্ট্রাক করে দিয়েছিলাম। ওই কম্পানির একজন আমার ছাত্র ছিল।’</p> <p>কম্পানির নাম কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন তো নাম মনে নাই।’ এ বিষয়ে কথা বলতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।</p> <p>নান্দাইল উপজেলার তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জানান, ওই সময় তিনি সবকিছু জানলেও শুধু নির্দেশ পালন করেছেন। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।</p> <p>ময়মনসিংহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটা তো অনেক দূরের ঘটনা। আমি এ বিষয়ে কি বলতে পারি? তবে এখন খোঁজ নেবো।’</p>