<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশের দুর্নীতি রোধে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বদলীয় কমিটি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গঠনের প্রস্তাব দিয়ে পুলিশ সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১১টার দিকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন। এ সময় পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। সফর রাজ হোসেন সুপারিশের বিষয়গুলো সংক্ষিপ্ত আকারে প্রধান উপদেষ্টার সামনে উপস্থাপন করেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, পুলিশের কাজকর্মে ইচ্ছাকৃত দুর্নীতি রোধে স্বল্পমেয়াদি একটি কার্যক্রম হিসেবে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওয়াচডগ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওভার সাইট কমিটি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গঠন করা যায়। প্রতিটি থানায় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বদলীয় কমিটি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গড়ে তুলে স্থানীয় পর্যায়ে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওভার সাইট বডি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হিসেবে কাজ করবে এবং দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া নিরপেক্ষ </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ কমিশন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গঠনের বিষয়েও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে ১৫টি বিষয়ে ১০৭টি সুপারিশ করেছে। বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে পুলিশের বল প্রয়োগ, আটক, গ্রেপ্তার, তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ, মানবাধিকার, প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক পুলিশ বাহিনী গঠন, থানায় জিডি রেকর্ড, মামলা দায়ের, তদন্ত ও পুলিশ ভেরিফিকেশন, যুগোপযোগী আইন ও প্রবিধানমালা, পুলিশের দুর্নীতি ও প্রতিকার, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও চলমান ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, প্রশিক্ষণ সক্ষমতা, নারী, শিশু ও জেন্ডার সচেতনতা, পুলিশের কল্যাণ ও কর্মপরিবেশ, নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি, পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা বা ইউনিট শক্তিশালীকরণ, জনকেন্দ্রিক ও জনবান্ধব পুলিশিং ও বিবিধ পর্যবেক্ষণ। কোনো কোনো বিষয়ে ১৩টি পর্যন্ত সুপারিশ করা হয়েছে।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক পুলিশ বাহিনী গঠনে একটি নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ কমিশন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশন আইনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে নাকি সাংবিধানিক কাঠামোভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান হবে, তা বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে হওয়া বাঞ্ছনীয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুপারিশে আরো বলা হয়, থানায় জিডি গ্রহণ বাধ্যতামূলক, কোনোক্রমেই জিডি গ্রহণ প্রত্যাখ্যান করা যাবে না। ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য একটি বিশেষায়িত দল গঠন করতে হবে, যাদের তদন্তসংক্রান্ত ইউনিট ও থানা ছাড়া অন্যত্র বদলি করা যাবে না। ভবিষ্যতে মামলা পরিচালনা ও তদন্ত একটি ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ের অধীনে পরিচালিত হতে হবে এবং তারা ফৌজদারি মামলা প্রসিকিউশন সংক্রান্ত একটি বিশেষ তদন্তদল হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় পরিচয়পত্রধারী চাকরিপ্রার্থীদের স্থায়ী ঠিকানা অনুসন্ধানের বাধ্যবাধকতা রহিত করা যেতে পারে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রিমান্ডে নেওয়া আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিটি থানায় স্বচ্ছ কাচের ঘোরাটোপ দেওয়া আলাদা জিজ্ঞাসাবাদকক্ষ অবশ্যই থাকতে হবে। নারী আসামিকে শালীনতার সঙ্গে নারী পুলিশের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ভুয়া মামলায় নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অপরিহার্য করতে হবে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও আহত করার জন্য দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুপারিশে আরো বলা হয়, প্রশিক্ষণের জ্ঞান ও ফলাফল পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নিতে হবে। নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে এসপি, ওসি পদায়নের জন্য ফিটলিস্ট প্রস্তুত করে নিয়মিত বিরতিতে হালনাগাদ করতে হবে। ওই তালিকা থেকে এসপি ও ওসিদের পদায়ন করা হবে। কনস্টেবল থেকে এসআই পদোন্নতিতে প্রতিবছর পরীক্ষা দেওয়া ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার রীতি বাতিল করে একবার উত্তীর্ণ হলে তাকে শারীরিক যোগ্যতা সাপেক্ষে পরবর্তী তিন বছরের জন্য পদোন্নতির যোগ্য বিবেচনা করতে হবে। নারী পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বর্তমান অর্গানোগ্রামে পদ সৃষ্টি করতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রধান উপদেষ্টার সামনে যা বললেন সফর রাজ হোসেন </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদন জমা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সামনে সফর রাজ হোসেন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৭/১৮ কোটি মানুষের দেশে পুলিশ বাহিনীর সদস্য রয়েছেন দুই লাখ ২০ হাজার। তাঁদের প্রায় তিন হাজার আইনকানুন ডিল করতে হয়। যে ধরনের আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে জনসাধারণের কষ্ট লাঘব হবে ওই আইনকানুনগুলো খতিয়ে দেখেছে সংস্কার কমিশন। যে সুপারিশমালা দিয়েছি সেখানে বলা হয়েছে এর মধ্যে কোন কোন আইন পরিবর্তন করতে হতে পারে। প্রাথমিকভাবে অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য কয়েকটি আইন আমরা আইডেন্টিফাই করেছি। যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাকরি করতে গিয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগে, যেটার ক্ষেত্রে খুব ইজি করা সম্ভব। কারণ এখন ন্যাশনাল আইডি কার্ড হয়েছে। এ ছাড়া চাকরির ক্ষেত্রে তার আত্মীয়-স্বজন রাজনীতি করে কি না দেখা হতো। এটি ১৯২৮ সালের এসবি ম্যানুয়াল, সেটা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এসবির সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুপারিশ করেছি, যাতে ইজিয়ার হয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেক সময় ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করে। সেখানে বেশ কিছু নিয়মকানুন বলা আছে সেকশন ৫৪-এ। আরেকটি হলো ১৬৭ ধরায় রিমান্ডে নেওয়া। দুটি ক্ষেত্রেই বেশ কিছু মামলা-মোকদ্দমা হয়েছে এবং হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের কিছু রায় আছে। নির্দেশনা আছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশনাগুলো যদি বাস্তবায়ন করা যেত তাহলে হয়তো জনসাধারণের কষ্ট লাঘব হতো। সরকারের পক্ষ থেকে আবার একটি রিভিউ পিটিশন দেওয়া আছে সুপ্রিম কোর্টে, যার ফলে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আমরা সুপারিশ করেছি, এই রিভিউ পিটিশনটি যেন সরকার উইথড্র করে। উইথড্র করলে হাইকোর্টের যে নির্দেশনা রয়েছে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইউজ অব ফোর্স এগেইনস্ট মব। ক্রাউড কন্ট্রোলের জন্য বিশেষ কিছু নিয়মকানুন আছে। আইনে ক্রাউড কন্ট্রোলের বিষয়ে বলা আছে। কিন্তু পিআরবি ফলো করা হয় না। আমাদের পুলিশ যখন শান্তি রক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে যায়, তখন তাদের ক্রাউড কন্ট্রোলের জন্য জাতিসংঘের কিছু নির্দেশনা দেওয়া আছে। বেস্ট প্র্যাকটিস হিসেবে আমরা প্রতিবেদনে ইউকের মডেলটি ফলো করতে বলেছি। একটি গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের নির্দেশনা অনুযায়ী পাঁচটি ধাপ রয়েছে ক্রাউড কন্ট্রোলের ক্ষেত্রে। এগুলো ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে প্রাণহানি ঘটবে না। আমরা ২২টি আইন আইডেন্টিফাই করে এগুলোর কোনটি পরিবর্তন, পরিমার্জন, কোনটি রিপ্লেস করতে হবে তার সুপারিশ করেছি। মহিলা পুলিশের জন্য যেন আলাদা একটি ডেস্ক থাকে, তারও সুপারিশ করা হয়েছে, যেখানে একজন এসআই সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া সংস্কার প্রতিবেদনে দেশের কয়েকটি জেলায় ভাসমান থানা গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>