ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫
৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫
৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ রমজান ১৪৪৬

প্রশাসনে সমতা আনতে নতুন সার্ভিসের প্রস্তাব

উবায়দুল্লাহ বাদল
উবায়দুল্লাহ বাদল
শেয়ার
প্রশাসনে সমতা আনতে নতুন সার্ভিসের প্রস্তাব

প্রশাসন ক্যাডারের ক্ষমতা কমাতে ও আন্ত  ক্যাডার বৈষম্য দূর করতে সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস (এসইএস) নামে নতুন একটি সার্ভিস গঠনের প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। সরকারের উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত কর্মকর্তারা এই সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এই সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমেই পূরণ করা হবে প্রশাসনের শীর্ষ পদ মন্ত্রিপরিষদসচিব, মুখ্যসচিবসহ সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের পদ।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের জন্য আলাদা সার্ভিস কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

এসব সার্ভিস ও অন্য ক্যাডার কর্মকর্তারাও সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্তির জন্য পরীক্ষা দিতে পারবেন। উত্তীর্ণ কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার  থেকে  ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডার বা সার্ভিস থেকে ৫০ শতাংশ পদ পুরণ করা হবে। উল্লিখিত বিষয়সহ  দেড় শতাধিক সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও কমিশন সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনারকে প্রশাসন ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। সমবায় ও খাদ্য  ক্যাডারকে প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে একত্রকরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া টেকনিক্যাল ক্যাডারগুলোর সমন্বয়ে প্রকৌশল সার্ভিস, কৃষি, বাণিজ্যসহ এ জাতীয় ক্যাডারগুলোর সমন্বয়ে কৃষি সার্ভিস এবং রাজস্ব সার্ভিস, তথ্য সার্ভিস নামে ১১ থেকে ১২টি সার্ভিস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

দেশের পুরনো চারটি বিভাগকে চারটি প্রদেশ করার সুপারিশ করার পাশাপাশি বিদ্যমান আটটি প্রশাসনিক বিভাগের বাইরেও কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে নতুন বিভাগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

যোগাযোগব্যবস্থা ও ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় রংপুরের দুটি উপজেলা, ঢাকা বিভাগের দু-একটি জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করে ময়মনসিংহ বিভাগ পুনর্গঠন করার প্রস্তাব রয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনটি আগামীকাল ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন কমিশনপ্রধান ড. আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।

কমিশনের সদস্যসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী দেশের পুরনো এই চার বিভাগকে চারটি প্রদেশ করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি তিনি।

নতুন সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস গঠনের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সচিবালয়ের উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত পদগুলোতে নিয়োগ পাওয়ার প্রত্যাশা বিভিন্ন সার্ভিস কর্মকর্তাদের আকাঙ্ক্ষা থাকে।

যেহেতু সিভিল সার্ভিস কাঠামোটি পিরামিডের মতো, সেহেতু শীর্ষ পদে সবার যাওয়ার সুযোগ রাখা যায় না। সে ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে (মেরিটোক্রাসি) উচ্চতর পদগুলোতে আরোহণের সুযোগ সৃষ্টি করাই যুক্তিসংগত। বিশ্বের বহু দেশেই এই নীতি অনুসরণ করা হয়।

অতীতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন (২০০০) এবং বেতন ও চাকরি কমিশন (১৯৭৭) এবং প্রশাসনিক ও পরিষেবা পুনর্গঠন কমিটি (১৯৭২)-এর উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদগুলো নিয়ে একটি পৃথক সিনিয়র সার্ভিস গঠন করার সুপারিশ করেছিল। এমন পরিস্থিতিতে কমিশন মনে করে, মন্ত্রণালয়ের উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত পদগুলো নিয়ে সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস গঠিত হতে পারে। সরল সার্ভিস থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ভিত্তিতে এসইএসে নিয়োগ করা হলে মেধার প্রাধান্য নিশ্চিত হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মাধ্যমে আন্ত সার্ভিস বৈষম্য দূর হবে। বাস্তবতার নিরিখে প্রশাসনিক সার্ভিসের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় বর্তমানে উপসচিব পদের ৭৫ শতাংশ ওই সার্ভিসের জন্য সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা রাখা আছে। আন্ত সার্ভিস বৈষম্য দূর করার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন প্রশাসনিক সার্ভিসের ৭৫ শতাংশ কোটা হ্রাস করে ৫০ শতাংশ করার বিষয়টি অধিকতর যৌক্তিক মনে করছে। অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ পদ অন্যান্য সার্ভিসের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলার রায় ও পর্যবেক্ষণ রয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টির আইনগত দিক পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিশনের একাধিক সদস্য জানান, ২৬টি ক্যাডারকে সার্বিক বিষয় বিচেনায় নিয়ে ১১ থেকে ১২টি সার্ভিসে ভাগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যেসব ক্যাডারের কাজকর্ম এক ধরনের বা বৈশিষ্ট্যের, সেসব ক্যাডারকে এক করে সার্ভিস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ছোট দুটি ক্যাডারকে প্রশাসনিক (প্রশাসন) ক্যাডারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমান পিএসসি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডার বাদে সব নিয়োগ দেবে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সার্ভিস কমিশন এই দুটি সেক্টরের ক্যাডার নন-ক্যাডার সব ধরনের নিয়োগ দেবে। এ ছাড়া দেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতি বিবেচনা করে চার পুরনো বিভাগকে প্রদেশ এবং কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে নতুন বিভাগ করার কথা বলা হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগকে পুনর্গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অংশীজনদের মতামত নেওয়ার পর কয়েক দিন ধরে সিরিজ বৈঠক করে কমিশনের রিপোর্ট চূড়ান্ত করে। গত শনিবার শেরেবাংলানগরে সকাল ১১টা থেকে সাত ঘণ্টার বৈঠকে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে কমিশন। অন্তর্বর্তী সরকার গত সেপ্টেম্বরে কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে। গত ৩১ ডিসেম্বর কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও কাজ অসমাপ্ত থাকায় সরকার কয়েক দফায় সময় বাড়িয়েছে।

কমিশনের প্রতিবেদন চূড়ান্ত হওয়ায় প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ও হাতাশার সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার রাতে রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএসএ) জরুরি সভা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব নজরুল ইসলাম। বৈঠকে সংস্কার কমিশনের কিছু প্রস্তাব নিয়ে নবীন কর্মকর্তাদের মতামত নেওয়া হয়। উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পরীক্ষা পদ্ধতি ও কোটা ৭৫ থেকে ৫০ শতাংশ হওয়ায় মাঠ প্রশাসন ও সচিবালয়ের নবীন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ব্যাচের প্রতিনিধিরা তাঁদের উদ্বেগ ও হতাশার কথা জানান।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য কিনতে মানুষের ভিড়

শেয়ার
ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য কিনতে মানুষের ভিড়
ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য কিনতে মানুষের ভিড়। গতকাল রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে। ছবি : লুৎফর রহমান
মন্তব্য

গরমের তীব্রতা

শেয়ার
গরমের তীব্রতা
গরমের তীব্রতা বাড়ছে। একটু স্বস্তি পেতে পানিতে নেমে সাঁতার কাটছে দুই শিশু। গতকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা। ছবি : ফোকাস বাংলা
মন্তব্য
জামায়াতের আমির

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য থাকা উচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য থাকা উচিত
শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকতে পারে। তবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য থাকা উচিত। গতকাল রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দ্য ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ভিন্নমত গণতন্ত্রের সৌন্দর্যের অংশ, যাকে সম্মান জানিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশে প্রতিহিংসার অবসান ঘটবে এবং মানবিক মূল্যবোধের বিজয় হবে।

তিনি বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের রায় হাইকোর্টে প্রত্যাশিতভাবে এসেছে। তিনি এ রায় দ্রুত কার্যকর করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে আবরারের পরিবার কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে।

শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহ তাআলা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন।

মানুষকে তিনি ভালো-মন্দের জ্ঞান বা বিবেক দিয়েছেন। প্রকৌশলীরা হচ্ছেন মানুষের মধ্যে অন্যতম সেরা মেধাবী। কিন্তু একজন মানুষের মাঝে শুধু জ্ঞান ও দক্ষতা থাকলেই হবে না, তাকে একই সঙ্গে সত্ হতে হবে। তাহলেই তার দ্বারা দেশ এবং জাতি উপকৃত হবে।

ফোরামের সভাপতি প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও দ্য ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সাইফুল আলম খান মিলন ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।

 

 

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক মানের ভোট চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আন্তর্জাতিক মানের ভোট চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন দেখতে চায়। ইসিও এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নিরপেক্ষভাবে কাজ করছি আমরা।

গতকাল রবিবার বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা বলেন তিনি।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ বৈঠকে সিইসির সঙ্গে ইসি সচিবও উপস্থিত ছিলেন।

ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সিইসি বলেন, মূলত আগামী নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি কী আছে, তা উনারা জানতে চেয়েছিলেন। আমরা যা যা করছি তাঁদের জানিয়েছি। নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুতির সব কিছু জানিয়েছি।

উনারা জানতে চেয়েছিলেন, ভোটের বাজেট কত, টাকা-পয়সা ঠিকমতো আছে কি না, কোনো রকম অসুবিধা আছে কি না। আমরা বলেছি, আমাদের টাকা-পয়সার কোনো অসুবিধা নেই। সরকারের কাছে বাজেট চেয়েছি। তবে উনারা (ইইউ) আমাদের সাহায্য করতে চান।

সিইসি বলেন, আমাদের কী প্রয়োজন, সেটি জানতে চান তাঁরা। আমরা বলেছি, ইউএনডিপি এরই মধ্যে একটা নিড অ্যাসেসমেন্ট করেছে। একটা টিম পাঠিয়েছিল, কী কী সাহায্য প্রয়োজন হতে পারে, এরই মধ্যে প্রজেক্টও বানিয়েছে। নির্বাচনের জন্য যে ধরনের সহায়তা প্রয়োজন হবে তা দিতে তাঁরা প্রস্তুত আছেন। নির্বাচন কমিশনকেই শুধু নয়, বাংলাদেশের উন্নয়নেও সহায়তা করতে চান তাঁরা।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, তাঁরা আগামী মাসে একটি কর্মশালা করবেন। এতে ইসি সচিবসহ ইসির প্রতিনিধিরা যাবেন। সেখানে সিভিল সোসাইটি থাকবে। আমরা জোর দিয়েছি দলের পোলিং এজেন্ট, ভোটার এডুকেশন ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে।

সিইসি জানান, ইসি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের কিভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় সে বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। ভোটার এডুকেশন ও পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছেন তাঁরা। আরো সহায়তা লাগলে জানানো হবে, সর্বতোভাবে সহায়তায় প্রস্তুত রয়েছেন তাঁরা।

সিইসি বলেন, উনারা চান যে আন্তর্জাতিক মানের একটি নির্বাচন হোক। আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন উনারা দেখতে চান। আমরাও তো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখানে আমাদের দ্বিমত নেই। তাঁরা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চান, যেটা আমাদেরও ওয়াদা। এটা আমরাও চাই। নিরপেক্ষভাবে আমরা কাজ করব, এটা তো আমরা ঘোষণা দিয়েছি। আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছি।

যা বললেন মিলার : ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের প্রধান মাইকেল মিলার সাংবাদিকদের জানান, এটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তাঁদের দ্বিতীয় সভা।

তিনি বলেন, আমরা আলোচনা করেছি এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বর্তমানে যে কাজ করছে সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে জানতে পেরেছি।

মিলার বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ তার রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেহেতু (সিইসির কাছে) তিনটি বার্তা পেশ করেছি। প্রথমত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই দেশের জন্য একটি দৃঢ় অংশীদার এবং আমরা এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময়ে আপনার পাশে আছি। দ্বিতীয়ত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে তার অংশীদারিকে সব দিকে শক্তিশালী করতে চায় এবং আমরা এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করতে এসেছি, যাতে তারা গত বছর আপনার নিজস্ব নাগরিকদের প্রকাশিত প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে এবং তৃতীয় বার্তাটি হলো, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই দেশে নির্বাচন পরিচালনাকে সমর্থন করবে।

মিলার জানান, নির্বাচন কমিশনকে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক বিষয়েও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ইইউ। বিদেশি পর্যবেক্ষক মোতায়েনের বিষয়েও নির্বাচন কমিশনকে অবগত করা হয়েছে।

আজ ওআইসি মিশনপ্রধানদের বৈঠক : আজ সোমবার ইসলামী সহযোগিতা সংস্থাভুক্ত (ওআইসি) দেশগুলোর বাংলাদেশ মিশনপ্রধানদের কাছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইসির সঙ্গে বৈঠক হতে যাচ্ছে।

এই বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার জন্য আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, ব্রুনেই দারুসসালাম, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মরক্কো, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, কাতার, সৌদি আরব, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিশনপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ