ঢাকা, মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫
১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০১ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫
১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০১ শাওয়াল ১৪৪৬

নবীপরিবারের সদস্য হয়েও যারা ঈমান আনেনি

বেলায়েত হুসাইন
বেলায়েত হুসাইন
শেয়ার
নবীপরিবারের সদস্য হয়েও যারা ঈমান আনেনি

হিদায়াত মানবজীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। হিদায়াতপ্রাপ্তিতে মানুষের কোনো হাত নেই। আল্লাহ যাকে চান তাকে হিদায়াত দান করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যাকে ভালোবেসেছেন তাকে হিদায়াত করতে পারবেন না; কিন্তু আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দান করেন।

’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ৫৬)

এ জন্য দেখা যায়, নবীর পরিবারের সদস্য হয়েও হিদায়াত থেকে বঞ্চিত হয়েছে কেউ কেউ। এমন কয়েকটি ঐতিহাসিক ঘটনা তুলে ধরা হলো—

নুহ (আ.)-এর ছেলে :  নুহ (আ.)-এর প্রত্যাখ্যানকারীদের মধ্যে ছিল তাঁর স্ত্রী ও এক পুত্র। কোরআনে এ ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আমি বললাম, তুমি তাতে প্রত্যেক যুগল হতে দুটি করে তুলে নাও। যাদের প্রতি আগেভাগেই শাস্তির কথা নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের বাদে আপনার পরিবারের সদস্যদের এবং যারা ঈমান এনেছে তাদের তুলে নিন।

অবশ্য তাঁর সঙ্গে মাত্র স্বল্পসংখ্যক লোক ঈমান এনেছিল।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৪০)

বন্যা শুরু হলে তিনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমার পুত্র তো আমার পরিবারভুক্ত। আর আপনার প্রতিশ্রুতি অবশ্যই সত্য, আপনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক। তিনি বলেন, ‘হে নুহ, সে তোমার পরিবারভুক্ত নয়, সে অসৎ কর্মপরায়ণ।

’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৪৫ ও ৪৬)

মহানবী (সা.)-এর চাচা : চাচা আবু তালিব ছিলেন নবীজির সংকটকালের আশ্রয়। তিনি আবু তালিবকে খুব ভালোবাসতেন এবং আবু তালিবও তাঁকে প্রাণাধিক স্নেহ করতেন। কিন্তু এই আবু তালিবের ভাগ্যে হিদায়াত জোটেনি। সায়িদ ইবনুল মুসাইয়্যিব থেকে বর্ণিত, আবু তালিব মুমূর্ষু অবস্থায় উপনীত হলে রাসুল (সা.) তাঁকে বললেন,  চাচাজান,  ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ একবার পড়ুন, তাহলে আমি আপনার জন্য আল্লাহর কাছে কথা বলতে পারব। কিন্তু আবু জাহল ও আবদুল্লাহ ইবনে আবু উমাইয়ার প্ররোচনায় তিনি ঘোষণা দেন ‘আমি আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাতের ওপরেই আছি।

’ এর পরও নবী (সা.) তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনার ইচ্ছা করলে আল্লাহ বলেন, ‘নবী ও মুমিনদের পক্ষে উচিত নয় যে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে মুশরিকদের জন্য, যদি তারা নিকটাত্মীয়ও হয়, তবু যখন তাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে তারা জাহান্নামি।’ (সুরা তওবা, আয়াত : ১১৩; মুসনাদে আহমাদ)

ইবরাহিম (আ.)-এর পিতা : ঐতিহাসিকদের দাবি ইবরাহিম (আ.)-এর পিতা ছিলেন মূর্তিপূজারি আজর। কোরআনে তাঁদের কথা এভাবে এসেছে, ‘হে আমার পিতা, আমার কাছে এমন জ্ঞান এসেছে, যা তোমার কাছে আসেনি। অতএব তুমি আমার অনুসরণ কোরো। আমি তোমাকে সরল পথ দেখাব।’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত : ৪৩)

উত্তরে পিতা বলেন, ‘হে ইবরাহিম, তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ? যদি তুমি বিরত না হও, তবে আমি অবশ্যই পাথর মেরে তোমার মাথা চূর্ণ করে দেব। তুমি আমার সম্মুখ থেকে চিরতরের জন্য দূর হয়ে যাও।’ (মারিয়াম, আয়াত : ৪৬)

লুত (আ.)-এর স্ত্রী : আল্লাহর নবী লুত (আ.)-এর স্ত্রীকে জাহান্নামি বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাআলা কাফেরদের জন্য নুহ-পত্নী ও লুত-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তারা ছিল আমার দুই ধর্মপরায়ণ বান্দার ঘরে। অতঃপর তারা তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল। ফলে নুহ ও লুত তাদের আল্লাহ তাআলার কবল থেকে রক্ষা করতে পারল না এবং তাদের বলা হলো, জাহান্নামিদের সঙ্গে জাহান্নামে চলে যাও।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত : ১০)

আদম (আ.)-এর ছেলে : আদম (আ.)-এর ছেলে কাবিল নবীর ঘরে জন্ম নিয়েও ঈমান লাভ করতে পারেনি। নিজ ভাই হাবিলকে হত্যা করে। পবিত্র কোরআনে তার পাপের বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘পরিশেষে তার মন তাকে ভ্রাতৃহত্যায় প্ররোচিত করল। সুতরাং সে তার ভাইকে হত্যা করে ফেলল এবং অকৃতকার্যদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৩০)

আল্লাহ আমাদের সুপথ দান করুন। আমিন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

প্রশ্ন-উত্তর

    সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা
শেয়ার
প্রশ্ন-উত্তর

ঋণ দেওয়া টাকার জাকাত

প্রশ্ন : আমি একজনকে পাঁচ লাখ টাকা ধার দিয়েছি এই চুক্তিতে যে তিনি তা দুই বছর পর পরিশোধ করবেন। আমাকে কি এই টাকার জাকাত দিতে হবে?

ইহসাক, মাদারীপুর

উত্তর : নগদ টাকা ঋণ দিলে ওই টাকা নিসাব পরিমাণ হলে ঋণদাতাকে ওই টাকার জাকাত আদায় করতে হবে। ঋণের টাকা হাতে আসার পর বিগত বছরগুলোর জাকাত একসঙ্গে আদায় করবে। তবে টাকা হাতে আসার আগে আদায় করলেও জাকাত আদায় হয়ে যাবে।

(বাদায়েউস সানায়ে : ২/১০, আল বাহরুর রায়েক : ২/২০৭, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৫/২৭১)

মন্তব্য

কোরআন থেকে শিক্ষা

    পর্ব : ৭৩৬
শেয়ার
কোরআন থেকে শিক্ষা

আয়াতের অর্থ : তারা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর শপথ করে বলে যে তুমি তাদেরকে আদেশ করলে তারা অবশ্যই বের হবে। তুমি বোলো, শপথ কোরো না, যথার্থ আনুগত্যই কাম্য। তোমরা যা করো নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। ...তিনি অবশ্যই তাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দ্বিনকে, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্য নিরাপত্তা দান করবেন।

তারা আমার ইবাদত করবে, আমার কোনো শরিক করবে না, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারা সত্যতাগী। (সুরা : নুর, আয়াত : ৫৩-৫৫)

আয়াতগুলোতে অর্থহীন কসম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

 

শিক্ষা ও বিধান

১. মুনাফিকরা স্বার্থসিদ্ধির জন্য কসমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।

২. সত্ভাবে জীবন যাপন করাই মানুষের আস্থা অর্জন করার সর্বোত্তম উপায়।

অর্থহীন কসম মানুষের গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করে।

৩. আল্লাহর নির্দেশের মতো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশও মান্য করা ওয়াজিব। অর্থাৎ কোরআন ও সুন্নাহ উভয়টি মেনে চলা আবশ্যক।

৪. খোলাফায়ে রাশেদার শাসনামলকে (৫৫ নং) আয়াতের প্রতিফলন মনে করা হয়।

কেননা তাদের আমলেই মুসলমানরা বিশ্বের বিস্তৃত অংশ জয় করে।

৫. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমার পর খেলাফত ৩০ বছর। এ হিসেবে আবু বকর (রা.), ওমর (রা.), উসমান (রা.) ও আলী (রা.)-এর শাসনামল খেলাফতে রাশেদার অন্তর্ভুক্ত।

(তাফসিরে কুরতুবি : ১৫/৩১৯)

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

তারাবিতে কোরআনের বার্তা

    পর্ব : ২৯
শেয়ার
তারাবিতে কোরআনের বার্তা

সুরা  মুজ্জাম্মিল

এ সুরায় রাসুল (সা.)-কে দাওয়াতের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করো। (আয়াত : ১-৩)

২. ধীরস্থিরভাবে কোরআন পাঠ করো। (আয়াত : ৪)

৩. সৌজন্যের সঙ্গে শত্রুকে পরিহার করো।

(আয়াত : ১০)

৪. আল্লাহ সাহাবিদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। (আয়াত : ২০)

সুরা  মুদ্দাসসির

রাসুল (সা.)-এর দাওয়াতি-জীবনের কিছু নির্দেশনা এ সুরাতে স্থান পেয়েছে। শিরকের বাহকদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন সতর্কবাণী।

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করো।

(আয়াত : ১-৩)

২. শরীর ও মনে পবিত্রতা অর্জন করো। (আয়াত : ৪-৫)

৩. বেশি পাওয়ার আশায় দান কোরো না। (আয়াত : ৬-৭)

৪. সামর্থ্য থাকার পরও অভাবীকে আহার না দেওয়া জাহান্নামে যাওয়ার কারণ। (আয়াত : ৪২-৪৪)

৫. কোরআন সবার জন্য উপদেশ।

(আয়াত : ৫৪)

সুরা কিয়ামাহ

এ সুরায় দ্বিন ও ঈমানের মূলনীতি, মৃত্যু, পুনরুত্থান ও সৃষ্টির শুরুলগ্নএসব বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. কোরআন হেফাজতের দায়িত্ব আল্লাহর। (আয়াত : ১৭-১৮)

২. নবীজি (সা.) কর্তৃক প্রদত্ত কোরআনের ব্যাখ্যাও আল্লাহর পক্ষ থেকে। (আয়াত : ১৯)

৩. পরকালে পাপীদের চেহারা বিবর্ণ হবে। (আয়াত : ২৪-২৫)

৪. মানুষের অবয়ব সুন্দর ও সুঠাম।

(আয়াত : ৩৮)

সুরা দাহর

এ সুরায় আখিরাতের আলোচনা গুরুত্ব পেয়েছে। কোরআন সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ তা জানানো হয়েছে।

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. জান্নাতবাসীরা দুনিয়ায় কর্তব্যপরায়ণ হয়। (আয়াত : ৭)

২. জান্নাতবাসীরা দুনিয়ায় মানবিক হয়। (আয়াত : ৮)

৩. কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করো। (আয়াত : ৯)

৪. মানুষের প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দাও। (আয়াত : ২২)

৫. সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহকে স্মরণ করো। (আয়াত : ২৫-২৬)

৬. পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়ো না। (আয়াত : ২৭)

সুরা মুরসালাত

সুরায় পুনরুত্থানের প্রাথমিক বিষয়াবলি, আল্লাহর কুদরত ও একত্ববাদের দলিল উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি কাফিরদের ভর্ত্সনা করা হয়েছে।

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. মানবদেহের কাঠামো সুনিপুণ। (আয়াত : ২৩)

২. কিয়ামতের দিন মানুষের কণ্ঠস্বর থেমে যাবে। (আয়াত : ৩৫-৩৬)

৩. দুনিয়ার সুখ-ভোগ সাময়িক। (আয়াত : ৪৬)

সুরা নাবা

১. নির্ধারিত সময়েই কিয়ামত হবে। (আয়াত : ১৭-১৮)

২. পরকাল অস্বীকার কোরো না। (আয়াত : ২৭-২৮)

৩. আল্লাহ সব কিছু সংরক্ষণ করেন। (আয়াত : ২৮)

সুরা নাজিয়াত

১. অবিশ্বাসীদের জীবন কেড়ে নেওয়া হয় নির্মমভাবে। (আয়াত : ১)

২. মুমিনের জীবনাবসান হয় কোমলভাবে। (আয়াত : ২)

৩. আত্মশুদ্ধিতে আগ্রহী হও। (আয়াত : ১৮-১৯)

সুরা আবাসা

১. কে সুপথ পাবে তা কেউ জানে না। (আয়াত : ১-৩)

২. কাউকে পরিশুদ্ধ করা প্রচারকের দায়িত্ব নয়। (আয়াত : ৬-৭)

৩. দ্বিন প্রচারকরা কাউকে উপেক্ষা করবে না। (আয়াত : ৮-১১)

৪. কোরআন শেখার অধিকার সবার। (আয়াত : ১২-১৪)

৫. খাদ্য নিয়ে চিন্তা করো না। (আয়াত : ২৪-২৭)

সুরা তাকভির

১. মেয়ে ভ্রূণ হত্যা কোরো না। (আয়াত : ৮-৯)

২. কোরআনের বাহকরা ইহকালে ও পরকালে সম্মানিত। (আ : ১৯)

৩. কোরআনের পথ পরিহার কোরো না। (আয়াত : ২৬-২৭

৪. মানুষের ইচ্ছা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। (আয়াত : ২৯)

সুরা ইনফিতার

১. স্রষ্টা সম্পর্কে বিভ্রান্ত হয়ো না। (আয়াত : ৬)

২. সুঠাম দেহ আল্লাহর দান। (আয়াত : ৭)

সুরা মুতাফফিফিন

১. ওজনে কম দিয়ো না। (আয়াত : ১-৩)

২. পুনরুত্থান দিবস ভুলে যেয়ো না। (আয়াত : ৪-৬)

৩. পাপ মানবহৃদয় কলুষিত করে। (আয়াত : ১৩-১৪)

সুরা ইনশিকাক

১. আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করো। (আয়াত : ৬)

২. পুণ্যবানদের হিসাব সহজ হবে। (আয়াত : ৭-৮)

৩. জীবনের পথে এগিয়ে যাও ধীরে ধীরে। (আয়াত : ১৮-১৯)

সুরা বুরুজ

১. বিশ্বাসীরা যুগে যুগে ঈমানের পরীক্ষা দিয়েছে। (আয়াত : ৮)

২. জগতের সর্বময় কর্তৃত্ব আল্লাহর। (আয়াত : ৯)

৩. মুমিনের প্রতি অবিচার কোরো না। (আয়াত : ১০)

৪. আল্লাহর পাকড়াও বড়ই কঠিন। (আয়াত : ১২-১৩)

সুরা তারিক

১. মহাপরীক্ষার দিন মানুষ বন্ধু পাবে না। (আয়াত : ৯-১০)

২. কোরআন মীমাংসাকারী বাণী। (আয়াত : ১৩-১৪)

সুরা আলা

১. আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো। (আয়াত : ১-২)

২. সৃষ্টির বিকাশ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে। (আয়াত : ৩-৫)

৩. হতভাগ্যরা উপদেশ অস্বীকার করে। (আয়াত : ১১-১৩)

সুরা আলা, গাশিয়া ও ফজর

১. আত্মশুদ্ধি সাফল্যের পথ। (আলা : ১৪-১৫)

২. পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়ো না। (আলা : ১৬-১৭)

৩. জান্নাতিরা কর্ম-সাফল্যে পরিতৃপ্ত হবে। (গাশিয়া : ৮-১০)

৪. এতিমকে সম্মান করো। (ফাজর : ১৭)

৫. অভাবগ্রস্তদের খাবার দাও। (ফাজর : ১৮)

৬. উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দাও। (ফাজর : ১৯-২০)

৭. প্রশান্তচিত্তে দ্বিন আল্লাহর ইবাদত করো। (ফাজর : ২৭-২৮)

সুরা বালাদ, শামস ও লায়ল

১. সম্পদের অন্যায় ব্যবহার কোরো না। (বালাদ : ৬-৭)

২. দেহ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর দান। তাই মানুষ চাইলেই তার অপব্যবহার করতে পারে না। (বালাদ : ৮-১০)

৩. দুর্ভিক্ষে খাদ্যদান করো। (বালাদ : ১২-১৬)

৪. মুমিন পরস্পরকে সাহস জোগায়। (বালাদ : ১৭-১৮)

৫. আত্মশুদ্ধি অর্জনকারীই সফল। (শামস : ৯-১০)

৬. মানুষের কর্মপ্রচেষ্টা বিভিন্ন। (লায়ল : ৩-৪)

৭. কার্পণ্য জীবনকে কঠিন করে। (লায়ল : ৮-১০)

৮. দান আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। (লায়ল : ১৮-১৯)

সুরা দুহা, তীন ও আলাক

১. মুমিন সুদিনের আশা রাখে। (দুহা : ৩-৪)

২. এতিমকে আশ্রয় দাও। (দুহা : ৬)

৩. সাহায্যপ্রার্থীর প্রতি কঠোর হয়ো না। (দুহা : ৯-১০)

৪. কর্মদোষে মানুষ হীনতমে পরিণত হয়। (তীন : ৪-৫)

৫. পাঠ করো মহান স্রষ্টা আল্লাহর নামে। (আলাক : ১)

৬. নামাজে বাধা দিয়ো না। (আলাক : ৯-১০)

সুরা কাদর, বাইয়িনা ও জিলজাল

১. কদরের রাতের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে বেশি। (কাদর : ১-৩)

২. কোরআন মানুষকে সঠিক বিধান দিয়েছে। (বাইয়িনা : ২-৩)

৩. বিশুদ্ধ মনে আল্লাহর ইবাদত করো। (বাইয়িনা : ৫)

৪. কিয়ামতে মানুষ বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত হবে। (জিলজাল : ৬)

৫. অণু পরিমাণ পাপেরও হিসাব হবে। (জিলজাল : ৭-৮)

সুরা আদিয়াত, কারিআ ও তাকাসুর

১. সম্পদে আসক্ত হয়ো না। (আদিয়াত : ৮-৯)

২. নেকের পাল্লা ভারী করো। (কারিআ : ৬-৭)

৩. প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা কোরো না। (তাকাসুর : ১-২)

৪. জ্ঞান মানুষকে মোহমুক্ত করে। (তাকাসুর : ৫)

আসর, হুমাজা, ফিল, কুরাইশ ও মাউন

১. ধৈর্য মানুষকে ক্ষতিমুক্ত রাখে। (আসর : ২-৩)

২. মানুষের নিন্দা কোরো না। (হুমাজা : ১)

৩. অর্থ মানুষকে অমর করে না। (হুমাজা : ৬-৮)

৪. আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের ধ্বংস করেন। (ফিল : ১-২)

৫. নিরাপত্তা আল্লাহর হাতে। (কুরাইশ : ৩-৪)

৬. অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দাও। (মাউন : ৩)

৭. লোক-দেখানোর জন্য ইবাদত কোরো না। (মাউন : ৪-৬)

সুরা কাউসার, কাফিরুন ও নাসর

১. কোরবানি করো আল্লাহর নামে। (কাউসার : ১-২)

২. ইসলামের ওপর অটল থাকো। (কাফিরুন : ৫-৬)

৩. আল্লাহর সাহায্যে দ্বিন অগ্রসর হয়। (নাসর : ১-২)

৪. আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো। (নাসর : ৩)

লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাস

১. সম্পদ আল্লাহর শাস্তি রোধ করতে পারে না। (লাহাব : ১-৩)

২. কেউ আল্লাহর সমতুল্য নয়। (ইখলাস : ৩-৪)

৩. আল্লাহর আশ্রয় কামনা কোরো। (ফালাক : ১-২)

৪. অন্ধকার রাতের অনিষ্ট থেকে বাঁচো। (ফালাক : ৩)

৫. হিংসুকের হিংসা থেকে সাবধান। (ফালাক : ৫)

৬. কুমন্ত্রণাদাতা থেকে আত্মরক্ষা করো। (নাস : ৪)

৭. কুমন্ত্রণা দেয় মানুষ ও জিন। (নাস : ৫-৬)

গ্রন্থনা : মুফতি আতাউর রহমান

মন্তব্য

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

হাদি-উল-ইসলাম
হাদি-উল-ইসলাম
শেয়ার
ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজ দুই রাকাত এবং তা পড়া ওয়াজিব। এতে আজান ও ইকামত নেই। যাদের ওপর জুমার নামাজ ওয়াজিব তাদের ওপর ঈদের নামাজও ওয়াজিব।

জুমার নামাজের মতো উচ্চ আওয়াজে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়।

তবে ঈদের নামাজের পার্থক্য হলোঅতিরিক্ত ছয়টি তাকবির দিতে হবে। প্রথম রাকাতে আল্লাহু আকবার বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়বে। আর দ্বিতীয় রাকাতে সুরা মেলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে রুকুতে যাবে।

ঈদের নামাজ মাঠে-ময়দানে পড়া উত্তম।

শহরের মসজিদগুলোতেও ঈদের নামাজ জায়েজ আছে। (বুখারি : ১/১৩১, ফাতাওয়া শামি : ১/৫৫৫, ১/৫৫৭)

সূর্য উদিত হয়ে এক বর্শা (অর্ধহাত) পরিমাণ উঁচু হওয়ার পর থেকে শুরু হয়ে দ্বিপ্রহর পর্যন্ত ঈদের নামাজের সময় থাকে। তবে ঈদুল ফিতরের নামাজ একটু দেরিতে পড়া সুন্নত, যেন নামাজের আগেই বেশি বেশি সদকাতুল ফিতর আদায় হয়ে যায়। (ফাতহুল কাদির : ২/৭৩, আল-মুগনি : ২/১১৭)

নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করার প্রয়োজন নেই।

মনে মনে নির্দিষ্ট করতে হবে যে আমি এই ঈদের নামাজ কিবলামুখী হয়ে এই ইমামের পেছনে অতিরিক্ত ছয় তাকবিরের সঙ্গে আদায় করছি।

ঈদের নামাজে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবির বলা ওয়াজিব। প্রথম রাকাতে তাকবিরে তাহরিমা ও সানার পর তিনটি তাকবির।

দ্বিতীয় রাকাতে কিরাতের পর রুকুতে যাওয়ার আগে তিনটি তাকবির। এই তাকবিরগুলো বলার সময় ইমাম-মুক্তাদি সবাইকে হাত উঠাতে হবে।

তৃতীয় তাকবির ছাড়া প্রতি তাকবিরের পর হাত ছেড়ে দিতে হবে। কেউ যদি এই তাকবিরগুলো না পায়, তাহলে সে রুকুতে থাকা অবস্থায় আদায় করে নেবে। কারো পূর্ণ এক রাকাত ছুটে গেলে সে দ্বিতীয় রাকাতে কিরাতের পর তাকবিরগুলো আদায় করে নেবে।

নামাজের ধারাবাহিকতা এমন :

প্রথম রাকাত

১. তাকবিরে তাহরিমা

    ঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধা।

২. সানা পড়া

৩. অতিরিক্ত তিন তাকবির দেওয়া।

    এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেওয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেঁধে নেওয়া।

৪. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া

৫. সুরা ফাতিহা পড়া

৬. সুরা মেলানো। অতঃপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সিজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাত শেষ করা।

দ্বিতীয় রাকাত

১. বিসমিল্লাহ পড়া

২. সুরা ফাতিহা পড়া

৩. সুরা মেলানো।

৪. সুরা মেলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দেওয়া। প্রথম রাকাতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেওয়া; অতঃপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।

৫. তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।

৬. সিজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।

    তারপর খুতবা। ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম দুটি খুতবা দেবেন আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবেন।

    নামাজ শেষে খুতবা প্রদান ইমামের জন্য সুন্নত; তা শ্রবণ করা নামাজির জন্য ওয়াজিব। (ফাতাওয়া শামি : ১/৫৫৯, ৫৬০)

    কারো ঈদের নামাজ ছুটে গেলে শহরের অন্য কোনো জামাতে শরিক হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পরিশেষে যদি নামাজ ছুটেই যায়, তাহলে এর কোনো কাজা নেই। তবে চার রাকাত ইশরাকের নফল নামাজ আদায় করে নেবে এবং তাতে ঈদের নামাজের মতো অতিরিক্ত তাকবির বলবে না। (ফাতাওয়া শামি : ১/৫৬১)

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ