<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন কর্মী ও ২০২৩ সালে ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ৪৫৩ জন কর্মী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। আর চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ লাখ ৭১ হাজার ৪৪১ জন কর্মী বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। চলতি বছর ২০২২ সালের তুলনায় ১৪.৪৮ শতাংশ ও ২০২৩ সালের তুলনায় ২৫.৫৯ শতাংশ কর্মী কম গেছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিবাসনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে সিন্ডিকেট, অনিয়ম, প্রতিশ্রুত চাকরি ও বেতন নিশ্চয়তার অভাবে মালয়েশিয়া এবং ওমানের শ্রমবাজার বন্ধ হয়। এ ছাড়া আগস্ট থেকে অঘোষিতভাবে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। ওমান, দুবাই ও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার কারণেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়ে কর্মী যাওয়ার হার কমেছে। এ ছাড়া জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাবে সে সময় কর্মী যাওয়ার সংখ্যা কমে গিয়েছিল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষ কর্মী তৈরি ছাড়া কর্মসংস্থান বাড়বে না। নতুন শ্রমবাজার তৈরি ও পুরনো শ্রমবাজার চালু করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, বাজার সম্প্রসারণে নিয়মিত চেষ্টা চলছে। যেহেতু দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে, সেহেতু কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে জোর দিচ্ছে মন্ত্রণালয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পড়েছে মালয়েশিয়া-ওমান বন্ধের প্রভাব</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য বলছে, সৌদি আরবের পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান ও এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া ছিল বাংলাদেশি কর্মীদের সবচেয়ে বড় পছন্দের স্থান। ওমানে গত দুই বছরে তিন লাখ সাত হাজার ৪৯৫ জন কর্মী গেছেন। এর মধ্যে ২০২২ সালে এক লাখ ৭৯ হাজার ৬১২ জন ও ২০২৩ সালে এক লাখ ২৭ হাজার ৮৮৩ জন কর্মী গেছেন। কিন্তু ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর দুর্নীতি, অনিয়ম ও কাজ না থাকার অভিযোগে বন্ধ হয়ে যায় ওমানের শ্রমবাজার। এরপর আর চলতি বছর এই শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী ওমান সফর করেন। সফর শেষে দেশে ফিরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, দক্ষ কর্মী নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওমান সরকার। খুব দ্রুত দক্ষ কর্মী যাওয়া শুরু করবে। কিন্তু বিএমইটির তথ্য বলছে, চলতি বছর মাত্র ৩৫০ জন কর্মী ওমানে পাড়ি দিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু জানুয়ারি মাসেই ৩০২ জন কর্মী ওমান গেছেন। বিএমইটির কর্মকর্তারা বলছেন, এই ৩০২ জন কর্মী হচ্ছেন, যাঁরা গত বছরের অক্টোবর মাসের আগেই ভিসা হাতে পেয়েছেন। অক্টোবর মাসের পর কেউ ভিসা পাননি। আর হাসিনা সরকারের পতনের পর অক্টোবর মাসে ১৮ জন ও ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ জন কর্মী ওমান গেছেন। বাকি ১৩ জন বিভিন্ন সময় গেছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে ২০১৬ সালের পর ২০২২ সালের আগস্ট মাসে চালু হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এরপর দীর্ঘ ২২ মাস চালু থাকার পর ওমানের মতো একই অভিযোগে চলতি বছরের ৩১ মে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। বিএমইটির তথ্য বলছে, এই ২২ মাসে চার লাখ ৯৪ হাজার ১৮০ জন কর্মী মালয়েশিয়া গেছেন। এর মধ্যে শুধু ২০২৩ সালেই তিন লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন কর্মী মালয়েশিয়া গেছেন। এমনকি চলতি বছর বন্ধ হয়ে যাওয়ার দিন পর্যন্ত ৯৩ হাজার ১৩৬ জন কর্মী মালয়েশিয়া গেছেন। এরপর আর তেমন কর্মী মালয়েশিয়া পাঠানো যায়নি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অথচ গত সেপ্টেম্বর মাসে মালয়েশিয়ার পামবাগানে কর্মী নেওয়া হবে বলে জানায় মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশ হাইকমিশন। এ ছাড়া হাসিনা সরকার পতনের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ঢাকায় এসে ড. ইউনূসকে পাশে নিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন, নির্ধারিত সময়ে তাঁর দেশে যেতে না পারা ১৭ হাজার বাংলাদেশি নিয়োগ পাবেন। কিন্তু বিএমইটি তথ্য বলে, ৩১ মের পর মাত্র ৯৭৫ জন কর্মী মালয়েশিয়া পাড়ি দিয়েছেন, যার মধ্যে ওই ১৭ হাজার কর্মীর কেউ নেই বলে জানান বিএমইটির কর্মকর্তারা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পড়েছে ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জুন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, জুলাই ও আগস্ট মাসের ছাত্র আন্দোলনের প্রভাবও শ্রমবাজারগুলোতে পড়েছে। গত আগস্ট মাস থেকে অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের শ্রমবাজার। বিএমইটির তথ্য মতে, চলতি বছর সংযুক্ত আরব-আমিরাতের শ্রমবাজারে গেছেন ৪৭ হাজার ১৬৩ জন। এর মধ্যে আগস্ট মাস পর্যন্ত এই শ্রমবাজারে ৪৫ হাজার ৭৯৮ জন কর্মী গেছেন। আর আগস্ট মাসের পর থেকে মাত্র এক হাজার ৩৬৫ জন কর্মী সংযুক্ত আরব-আমিরাতের শ্রমবাজারে গেছেন। এ ছাড়া এই সময়টাতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকায় সৌদি আরবসহ অন্য শ্রমবাজারগুলোতে অল্পসংখ্যক কর্মী যেতে পেরেছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভরসা সৌদির শ্রমবাজার : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো মতে, চলতি বছর বিদেশে পাড়ি দেওয়া ৯ লাখ ৭১ হাজার ৪৪১ জন কর্মীর মধ্যে পাঁচ লাখ ৯৫ হাজার ২৫ জন কর্মী সৌদি আরব গেছেন। অর্থাৎ মূল শ্রমশক্তির ৬০ শতাংশ কর্মী সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছেন। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক সৌদি আরব। দেশটিতে ফুটবল অবকাঠামো নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এতে কর্মীর চাহিদা নিয়মিত আসছে। তবে সৌদি আরবে কর্মসংস্থানের কারণে জনশক্তি রপ্তানি বড় দেখালেও দেশটিতে যাওয়া কর্মীর বড় অংশ কাজ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সৌদি আরবের এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথমে আমাদের সৌদি আরবের শ্রমবাজারে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। কারণ সৌদি আরবে এখনো অনেক চাহিদা রয়েছে। তাই সেখানের সমস্যাগুলো আগে ঠিক করতে হবে। এরপর যেসব শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে, সেগুলো পুনরায় চালু করার জন্য সরকারের যে পদক্ষেপগুলো রয়েছে সেগুলো কার্যকর করতে হবে। সর্বশেষ নতুন কিছু শ্রমবাজার তৈরি করার জন্য আমাদের অনেক বেশি উদ্যোগী হতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সৌদি আরবে সমস্যা দূর করার পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও ওমানের শ্রমবাজার খোলার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব গাজী মো. শাহেদ আনোয়ার। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মালয়েশিয়া এবং ওমানের শ্রমবাজারগুলো খোলার চেষ্টা আমাদের অব্যাহত রয়েছে। মালয়েশিয়ার জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপের বৈঠকের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি। আশা করছি আগামী মাসেই আমরা বৈঠকটি করতে পারব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দক্ষতার প্রতিযোগিতা বাড়লে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের শ্রমবাজারগুলো যেহেতু সঠিক পদ্ধতিতে চলে না, ফলে ক্রমে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখন বাজার হয়ে গেছে প্রতিযোগিতামূলক বাজার। আমাদের শ্রমবাজারগুলোতে সঠিক পদ্ধতি নির্ণয় করা প্রয়োজন। এরপর প্রয়োজন দক্ষ কর্মী। দক্ষ কর্মী তৈরি না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>