কুমিল্লার চান্দিনায় একটি ভাড়া বাসার ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় স্বামীর ও বিছানা থেকে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পৌর এলাকার রারির চর গ্রামের আনিছ মোহাম্মদের বাড়ি এলাকার স্বপ্না বেগমের বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে একটি ছুরিসহ তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর স্বামী ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।
মৃতরা হলেন চান্দিনার ছায়কোট গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে রোজিনা আক্তার (২২) ও কুমিল্লা আদর্শ সদরের কাপ্তানবাজার এলাকার মুজিবুর রহমানের ছেলে সোহেল (২৮)।
রোজিনা একটি পার্লারে কাজ করলেও সোহেল কোনো নির্দিষ্ট কাজ করতেন না। একই ভবনের বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমি ওই ভবনের তৃতীয় তলায় থাকি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে দ্বিতীয় তলায় পচা গন্ধ পাই। প্রথমে ভেবেছি ময়লার গন্ধ। আজ (শুক্রবার) জুমার নামাজের পরও একইভাবে গন্ধ পেয়ে দরজা ধাক্কা দিই, কিন্তু কারো সাড়াশব্দ নেই। পর তাঁদের নম্বরে ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেনি। সন্ধ্যার পর থেকে তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ কিছু বলতে পারেনি। অবশেষে থানায় খবর দিই। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে দেখতে পায়, প্রথম কক্ষে স্বামী ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন আর ভেতরের কক্ষের বিছানায় স্ত্রীর মরদেহ পড়ে আছে। দুটি মরদেহেই ফুলে পচন ধরেছে।’
মৃত রোজিনার ভাই শাহজাহান বলেন, ‘সোহেল মাদকাসক্ত ছিল। সে প্রায়ই রোজিনাকে মারধর করত। ১০ থেকে ১৫ দিন আগেও মাদকের টাকার জন্য রোজিনাকে মারধর করায় রোজিনা আমাদের বাড়িতে চলে যায়।
আবার তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে আনে।’
সোহেলের বোন মুন্নী আক্তার বলেন, ‘দুই বছর আগে তারা ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। তাদের সন্তান নেই। সোহেল গত ১৯ তারিখে আমার বাসায় গিয়েছিল। এর পর থেকে তাকে ফোনে আর পাইনি। তার স্ত্রীর ফোনেও কল দিয়েছিলাম, কেউ রিসিভ করেনি। আজ (গতকাল) সন্ধ্যার পর বাসার মালিক ফোন করার পর আমি ঘটনাস্থলে আসি।’
চান্দিনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর রেজাউল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অমিল থাকায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী সোহেল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, তিন-চার দিন আগে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকি। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’