সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এসংক্রান্ত এক রিটে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল সোমবার এই রুল জারি করেন।
নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ২০ জানুয়ারি এই রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইসরাত হাসান। রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মহসিন কবির।
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।’ সংবিধানের এই বিধান প্রয়োগে নীতিমালা প্রণয়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি, অসাংবিধানিক এবং সংবিধানের ৭, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন উচ্চ আদালত। মন্ত্রিপরিষদসচিব, আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়, নীতিমালা না থাকার কারণে রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা অবাধ। কিসের ভিত্তিতে, কোন বিবেচনায় দণ্ডিতদের দণ্ড মওকুফ করা হচ্ছে বা হয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যা জানার সুযোগ নেই। রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক সময় দণ্ডিতদের সাজা মওকুফ করতে দেখা গেছে, যা ক্ষমতার অপব্যবহার।
রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসানের দাবি, বছরের পর বছর ধরে রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার হয়েছে।
বিগত সরকারগুলোর আমলে রাষ্ট্রপতি অনেক সাজাপ্রাপ্ত খুনিকে ক্ষমা করেছেন, যা ব্যাপকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, সমালোচনা হয়েছে। এর ফলে জনমনে ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়, যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্তরায়।