বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সৈনিকদের শুদ্ধ উচ্চারণ ও সুন্দর কণ্ঠে আজান ও কিরাত চর্চায় অনুপ্রাণিত করতে আজান ও কিরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা পিলখানার বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার ও ট্রফি বিতরণ করেন। এ সময় বিজিবির সব পর্যায়ের কর্মকর্তা, সৈনিক এবং অসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ১৯ মার্চ পিলখানার বিজিবি সদর দপ্তরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তিন দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং শুক্রবার (গতকাল) আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার ও ট্রফি বিতরণের মধ্য দিয়ে এই প্রতিযোগিতা সমাপ্ত হয়।
সারা দেশে বিজিবির বিভিন্ন সেক্টর থেকে সর্বমোট ৩৮ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। আজান প্রতিযোগিতায় ময়মনসিংহ সেক্টরের অধীন ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নে (৩৯ বিজিবি) কর্মরত ল্যান্স নায়েক মো. আব্দুল গফুর খান প্রথম স্থান এবং কুষ্টিয়া সেক্টরের অধীন কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নে (৪৭ বিজিবি) কর্মরত সিপাহি মো. ইব্রাহীম কামাল দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।
অন্যদিকে কিরাত প্রতিযোগিতায় খুলনা সেক্টরের অধীন নীলডুমুর ব্যাটালিয়নে (১৭ বিজিবি) কর্মরত সিপাহি মো. আলী হোসাইন প্রথম স্থান এবং রামু সেক্টরের অধীন রামু ব্যাটালিয়নে (৩০ বিজিবি) কর্মরত সিপাহি মো. ইসমাইল হোসেন দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।
আজান ও কিরাত উভয় প্রতিযোগিতায় দলগতভাবে কুষ্টিয়া সেক্টর চ্যাম্পিয়ন এবং খুলনা সেক্টর রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
পুলিশের আজান, কিরাত ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত : বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক আজান, কিরাত ও রচনা প্রতিযোগিতা-২০২৫-এর পুরস্কার বিতরণী গতকাল রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বাংলাদেশ পুলিশ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. মতিউর রহমান শেখ।
এ সময় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা এবং বিপুলসংখ্যক মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর।
প্রধান অতিথি হিসেবে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ধর্মীয় চর্চার অনুশীলনের অংশ হিসেবে প্রতিবছরের মতো এবারও আজান, কিরাত ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠান আমাদের ধর্মের প্রতি ঐকান্তিকতা ও নিষ্ঠার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’
প্রতিযোগীদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, ‘আপনাদের পুলিশি কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকতে হয়।
তবু আপনারা আজান ও কিরাত চর্চা করে যাচ্ছেন, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’ পরে আইজিপি বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট, সনদপত্র ও পুরস্কার তুলে দেন।
প্রতিযোগিতায় আজানে প্রথম হয়েছেন র্যাব-৮, বরিশালের এএসআই সিরাজুল ইসলাম, দ্বিতীয় হয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই (সশস্ত্র) মো. ওমর ফারুক এবং তৃতীয় হয়েছেন যৌথভাবে যথাক্রমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই (নিরস্ত্র) এম মহিউদ্দিন এবং ৩ এপিবিএন, শিরোমণি, খুলনার নায়েক আবু মুসা।
কিরাতে প্রথম হন ৩ এপিবিএন, শিরোমণি, খুলনার নায়েক আবু মুসা, দ্বিতীয় হন পুলিশ স্টাফ কলেজের নায়েক খান হাসিবুর রহমান এবং তৃতীয় হন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই (সশস্ত্র) মো. ওমর ফারুক। কিরাতে নারী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বিজয়ী হন ১১ এপিবিএন, উত্তরা, ঢাকার কনস্টেবল নাদিয়া নাছরিন নূপুর।
‘ইসলাম ও নাগরিকের অধিকার’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এএসআই (নিরস্ত্র) মো. মারুফুল ইসলাম, দ্বিতীয় হয়েছেন যৌথভাবে যথাক্রমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কনস্টেবল মেহেদী হাসান ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের উচ্চমান সহকারী শেখ রেজাউল কবীর এবং তৃতীয় হন ৩ এপিবিএন, শিরোমণি, খুলনার কনস্টেবল মো. ইনামুল হাসান।
পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট থেকে বাছাইকৃত পুলিশ সদস্যরা ঢাকায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। অনুষ্ঠানে আজান ও কিরাতে প্রথম স্থান অধিকারীরা আজান দেন এবং কোরআন তিলাওয়াত করেন।