<p>বেসরকারি একটি কম্পানিতে চাকরির সুবাদে বান্দরবান জেলায় প্রজেক্ট ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ। কর্মরত অবস্থায় রুমা উপজেলার ডার্জিলিং পাড়ায় কফি চাষ প্রথমে নজরে আসে তাঁর। সেখান থেকেই কফি চাষ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ। ২০২১ সালে লাল লিয়াং বংয়ের বাগান থেকে পাঁচ কেজি কফি কিনে চারা উৎপাদন করেন। সেই চারা পরীক্ষামূলক  হালুয়াঘাট, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় এবং বান্দরবানের কিছু চাষির মধ্যে বিতরণ করেন। এরপর আবার ২০২২ সালে আরো কফি কিনে বপন করে চারা বিতরণ করেন। সেই চারাগুলো থেকে পরিপূর্ণভাবে এখন ফল দেওয়া শুরু করেছে।</p> <p>কফি চাষে বাড়তি কোনো জমি লাগে না। বাড়ির যেকোনো বাগানে সাথি ফসল হিসেবে ছায়াযুক্ত জায়গায় চাষ করে বাড়তি আয় করা যায়। উৎপাদিত কফি বিক্রি করার জন্য কৃষকদের কোথাও যেতে হচ্ছে না। কারণ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ ন্যায্য মূল্যে কফি চেরি নিজেই কিনে নিচ্ছেন। এতে কৃষকরা বাজারজাতকরণ ও সঠিক দাম পেয়ে খুশি। তুলিপ আশা করছেন, দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করবেন কফি।</p> <p>বিন্নিবাড়ী গ্রামের চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ১০০ চারা নিয়েছি। আমার একটি ফলের বাগান আছে, সেই বাগানে রোপণ করব।’</p> <p>শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে কফি চাষে কৃষকদের নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন উদ্যোক্তা তুলিপ। ময়মনসিংহের উত্তর অঞ্চলে কফি চাষ নিয়ে এখন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। কাঙ্ক্ষিত ফলন ও বাণিজ্যিক পথ সুগম হলে সুসময়ের দুয়ার খুলে যাবে এ অঞ্চলের কৃষকদের। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা এসে চারা নিয়ে যাচ্ছেন বিনা মূল্যে। এতে কৃষকরাও দারুণ খুশি।</p> <p>উপজেলা কৃষি অফিস, উদ্যোক্তা ও কৃষকরা জানান, পৃথিবীতে ৬০ প্রজাতির কফি থাকলেও বাণিজ্যিকভাবে দুই রকমের কফির চাষ রয়েছে। এই এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য এরাবিকা ও রোবাস্টা জাতের কফি চাষ শুরু হয়েছে।</p> <p>উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মওদুদ আহাম্মেদ বলেন, ‘উপজেলার পাহাড়ি এলাকার মাটিতে অম্লত্ব ও উর্বরতা শক্তি কফি চাষের উপযোগী। বৃষ্টিপাত ও মাটির গঠনবিন্যাস মিলে কফি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্যোক্তার সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ আছে। আমরা এ ব্যাপারে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’</p> <p> </p>