<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঝিনাইদহে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ডিলাররা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের কাছে মানহীন বীজ বিক্রি করছেন। এতে করে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছেন বীজ বিক্রেতারা। তাঁদের নেই আমদানি করা বীজের সনদপত্র ও কম্পানি কর্তৃক বিক্রয়ের অনুমোদন। কৃষকদের মাঝে চক্রটি মানহীন বীজ ছড়িয়ে দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এই বীজ কিনে শত শত কৃষক পথে বসেছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলার বিএডিসি অনুমোদিত বীজ বিক্রয় ডিলার রয়েছেন ১৪২ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩১, কালীগঞ্জে ৩০, কোটচাঁদপুরে ১৪, মহেশপুরে ২৯, শৈলকুপা ২৯ ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় রয়েছেন ৯ ডিলার। অন্যদিকে জেলায় বীজ প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ অথরিটি (এসসিএ) অনুমোদিত ডিলার রয়েছেন মাত্র ৫৮টি। অথচ জেলাজুড়ে তিন শতাধিক বীজের দোকান রয়েছে। তাঁরা নিজস্ব পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত বীজ দোকানে বিক্রি করলেও তাঁদের নেই বীজ বিক্রির অনুমতিপত্র। এ ছাড়া দেশের নামিদামি বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানীকৃত ভুট্টা, সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, শীতকালীন সবজির বীজ নিয়েও চলছে শুভঙ্করের ফাঁকি। আমদানীকৃত বীজের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে পারেনি বীজ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই সঙ্গে আমদানীকৃত বীজের সনদপত্র ও কম্পানি কর্তৃক বিক্রয় অনুমোদনপত্র নিয়েও বড়সড় কারসাজি করা হয়েছে মাঠ পর্যায়ে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি সরেজমিন জেলা শহরের মদিনা বীজ ভাণ্ডার, ঝিনাইদহ নার্সারি ও বীজ ভাণ্ডার, রামিম বীজ ভাণ্ডার, শহিদ বীজ ভাণ্ডার, হাসান বীজ ভাণ্ডার, মদিনা বীজ ভাণ্ডারসহ জেলার বিএডিসি ও এসসিএ অনুমোদিত ডিলারদের প্রতিষ্ঠানে গিয়েও কম্পানির বিক্রয় অনুমোদন সনদপত্র পাওয়া যায়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সেখানে নেই এলসি করা বীজের সঙ্গনিরোধ ও কোয়ারেন্টাইন সনদপত্রসহ পোর্টের ইনভয়েস। এসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ও আমদানি করা বীজ রোপণ করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার হাজার হাজার কৃষক। সদর উপজেলার চণ্ডীপুর বাজারের কামাল ট্রেডার্স, মিথিলা ট্রেডার্স, ভাই ভাই ট্রেডার্স, ভূঁইয়া ট্রেডার্স থেকে ভুট্টার বীজ কিনে ওই এলাকার কৃষকরা প্রতারিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। কোটচাঁদপুরের টিটোন বীজ ভাণ্ডার, মুকুল বীজ ভাণ্ডার, বাবুল বীজ ভাণ্ডার, সলেমান বীজ ভাণ্ডারের বিরুদ্ধেও মানহীন ও অননুমোদিত বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। মানহীন ও অননুমোদিত বীজ বিক্রির পাশাপাশি আমদানীকৃত বীজের কোয়ারেন্টাইন সনদপত্র না থাকা সত্ত্বেও মহেশপুরের আমান বীজ ভাণ্ডার, বিসমিল্লাহ বীজ ভাণ্ডার, ভাই ভাই বীজ ভাণ্ডার ও বীজ ভাণ্ডারের বিরুদ্ধেও মানহীন বীজ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন ও গোলাম নবী জানান, গত মৌসুমে তাঁরা সরকারি পেঁয়াজের বীজ নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। সরকারি পাওয়া বীজে চারা গজায়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহেশপুরের পাঁচলিয়া গ্রামের ভুট্টা চাষি শ্যামল বিশ্বাস বলেন, শহরের বড় বড় দোকান থেকে বীজ কিনে জমিতে রোপণ করেছি। তবে বীজের কাঙ্ক্ষিত অঙ্কুরোদগম ঘটেনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহ শহরের শহিদ বীজ ভাণ্ডারের মালিক শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি বীজের ব্যবসা করি। যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে হাসান বীজ ভাণ্ডারের মালিক মো. হাসান আলী বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের দুজনকে আমি ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। তা ছাড়া আমার সব কাগজপত্র ঠিক আছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের আইনের কিছু ঘাটতি রয়েছে। বীজের মান ঘোষণা করতে হলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ল্যাব থাকতে হয় এবং সেখানেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বীজ বাজারজাত করতে হয়। যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>