<p>জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৫৭ শতাংশ জমির আলুগাছ রাতের অন্ধকারে উপড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ওই জমির বর্গাচাষী তানজির ও ঠান্ডা মিয়া। জমির মালিক ও চাষিরা বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন, যা তাদের জীবনে আরো অশান্তি ডেকে এনেছে।</p> <p>শনিবার (৪ ডিসেম্বর) নয়াপাড়া মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পুরো জমির আলুগাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। গাছগুলো মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। </p> <p>বর্গাচাষি তানজির ও ঠান্ডা মিয়া বলেন, তারা জমির মালিক জালাল উদ্দিন ও হাসকর আলীর কাছ থেকে এক বছরের জন্য জমিটি বর্গা নিয়েছিলেন। জমিতে লাল জাতের দেশি পাকড়ি আলু রোপণ করে যত্নসহকারে ফসল বড় করছিলেন। কয়েকদিনের মধ্যেই নিরানি দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন তারা। তাদের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ নুর আলম ও তার লোকজন জমি দখলের দাবি তুলে রাতে গাছগুলো উপড়ে ফেলেছে।</p> <p>জমির মালিক জালাল উদ্দিন ও হাসকর আলী জানান, ৩০ বছর আগে তারা আশরাফ আলী চৌধুরীর কাছ থেকে জমিটি কিনে নেন এবং সেই থেকে জমিটি ভোগদখল করছেন। জমির সঠিক দলিলপত্র থাকা সত্ত্বেও বৈরাগী গ্রামের নুর আলম জমিটি নিজের দাবি করছেন এবং গত বছর আমন ধান রোপণের সময়ও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ধান গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। ওই ঘটনার পর থেকেই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।</p> <p>জালাল উদ্দিন বলেন, 'জমির বৈধ মালিক আমরা। আদালত যে রায় দেবে তা মেনে নেব। কিন্তু ফসল নষ্ট করে কেনো আমাদের ও বর্গাচাষীদের ক্ষতি করা হচ্ছে? এটা আমাদের জীবনে চরম দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে।'</p> <p>বিচার চেয়ে তানজির ও ঠান্ডা মিয়া বলেন, 'জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। কিন্তু আমাদের ফসল কেনো নষ্ট করা হলো? এতে আমাদের পরিবারে খাদ্য ও আর্থিক সংকট দেখা দেবে।'</p> <p>অভিযুক্ত নুর আলম জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। আমি আদালতের রায়কে সম্মান করি। কোনো ফসল নষ্ট করিনি। এটি একটি অপপ্রচার হতে পারে।'</p> <p>উদয়পুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নুরনবী সরকার বলেন, জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। কিন্তু কারো ফসল নষ্ট করার অধিকার নেই। এটি অনৈতিক এবং অমানবিক। এ ঘটনায় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।'</p> <p>কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, 'ঘটনার বিষয়ে আমি অবগত। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'</p>