<p style="text-align:justify">দেশে প্রায় তিন বছর ধরে গড় মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি। ধারাবাহিকভাবে দেশের শিক্ষা ব্যয়ও বাড়ছে প্রতি মাসে। এর প্রভাব পড়েছে স্কুল শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়েও। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গেল অর্থবছরের শেষের দিকে অর্থাৎ জুন মাসে কিছুটা প্রবৃদ্ধি থাকলেও নতুন অর্থবছরের শুরু থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমছে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়।</p> <p style="text-align:justify"><img alt="মূল্যস্ফীতির প্রভাব স্কুল ব্যাংকিংয়ে" height="240" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/22/1734886792-69c14cf0664d9a16dcb04dfbb951fb9d.jpg" style="float:left" width="400" />এক মাসের ব্যবধানে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এ ছাড়া গত চার মাসে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নতুন মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুলসহ আটজনকে গ্রেপ্তার" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/23/1734936813-437351f868fcd73571bdce28dbcb0071.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নতুন মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুলসহ আটজনকে গ্রেপ্তার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Court/2024/12/23/1460447" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে স্কুল শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৮৭ কোটি টাকা, যা গত সেপ্টেম্বরে ছিল দুই হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে আমানত কমেছে ৪৮ কোটি টাকা।</p> <p style="text-align:justify">এর আগের বছর ২০২৩ সালের মে শেষে আমানতের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ২২৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে কমেছে প্রায় ১০১ কোটি টাকা। গত জুন মাসে ছিল দুই হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে চার মাসে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কমেছে ২৩৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা আগস্টে কমে দাঁড়ায় দুই হাজার ১৭২ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে দুই হাজার ১৩৫ কোটি টাকা।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/23/1734937349-156005c5baf40ff51a327f1c34f2975b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/12/23/1460449" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সাধারণত যেকোনো শ্রেণির হিসাবে আমানত অল্প হলেও বাড়তে থাকে। কারণ কেউ যদি নতুন করে টাকা জমা না-ও দেয় তবু আগের জমাকৃত আমানতের সুদ যোগ হয়ে মোট অঙ্ক বাড়তে থাকে। আর যদি গ্রাহকরা তার মুনাফার টাকা উত্তোলন করে ফেলে তাহলে হিসাব অপরিবর্তিত থাকে। এ ছাড়া নতুন বাড়তে থাকা হিসাবের আমানত যোগ হয়। আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হলো নতুন করে যেসব হিসাব খোলা হয়েছে কিংবা আগের হিসাবে যে পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি অঙ্কের টাকা উত্তোলন হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ আর্থিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীরাও তাদের সঞ্চয় ভেঙে ফেলছে।</p> <p style="text-align:justify">তথ্য বলছে, গত অক্টোবর মাসে ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের হিসাবসংখ্যা ছিল ৪৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৫৯। এর আগের মাস সেপ্টেম্বর এ ধরনের হিসাবের সংখ্যা ছিল ৪৩ লাখ পাঁচ হাজার ৬০। সে হিসাবে এক মাসে হিসাব বেড়েছে ৫৯ হাজার ১৯৯টি। এর মধ্যে সর্বশেষ ছেলেদের হিসাবসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ৩৮ হাজার ১৩২ আর মেয়েদের হিসাবসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ ২৬ হাজার ১২৭। অক্টোবরে ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই হিসাবসংখ্যা বেড়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="‘গানের চেয়ে নাচ বেশি’, সমালোচনার জবাব দিলেন জেফার" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/23/1734936495-b735b3915780f29e87666da074efebe2.png" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>‘গানের চেয়ে নাচ বেশি’, সমালোচনার জবাব দিলেন জেফার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2024/12/23/1460446" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, সাধারণত বছরের শুরুতে কিংবা শেষের দিকে অনেকের টাকা উত্তোলনের চাপ থাকে। অনেকে নভেম্বর-ডিসেম্বর সময়ে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় বেড়াতে যায়। আবার অনেকে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করতে গিয়ে আমানত ভাঙে। কিন্তু বছরের পুরো সময় শিক্ষার্থীদের আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে নিয়মিত খরচ মেটাতে হিমশিম অবস্থার মধ্যেই আমানত উত্তোলন করতে হচ্ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি ও ঊর্ধ্ব মূল্যস্ফীতি এমনটাই ইঙ্গিত করছে।</p> <p style="text-align:justify">শিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনা এবং তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। এই কার্যক্রমের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি করা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তাদের আরো উপযোগী করে তোলা।</p> <p style="text-align:justify">এ পর্যন্ত ৫৯টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করেছে। ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। এই অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন—সব ধরনের ফি ও চার্জের ক্ষেত্রে রেয়াত পাওয়া, বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া, ন্যূনতম স্থিতির বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে ছাড় ও স্বল্প খরচে ডেবিট কার্ড পাওয়ার সুযোগ। মাত্র ১০০ টাকা আমানত রেখেই এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।</p> <p style="text-align:justify">শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে উৎসাহী করতে ২০১০ সালে স্কুল ব্যাংকিং কর্মসূচির পুনঃপ্রবর্তন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বেশ সফলতা পায় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ২০১০ সালে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সাল থেকে। প্রথম বছরে ২৯ হাজার ৮০টি স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলা হয়।</p> <p style="text-align:justify">এর পরের বছর ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় ব্যাংকগুলোতে এক লাখ ৩২ হাজার ৫৩৭টি হিসাব খোলা হয়। করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব ও আমানতের পরিমাণ কিছুটা কমে আসছে। এর পর থেকেই স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আকর্ষণীয় মুনাফার নানা স্কিম চালু করে।</p>