<p style="text-align:justify">মিয়ানমার সীমান্তবর্তী কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফ নদ ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা থেকে দুটি ট্রলারসহ ৬ জনকে ধরে নিয়ে গেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন বোট মালিক সমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ।</p> <p style="text-align:justify">ওই ট্রলার দুটি হলো আবদুর রশিদের মালিকানাধীন ‘এসবি রাসেল’ ও আবদুর রবের মালিকানাধীন ‘এসবি ফারুক’। ট্রলার দুটি টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌ রুটে চলাচল করত। ট্রলার দুটি রড, বালু ও সিমেন্ট বোঝাই করে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনের পথে যাচ্ছিল।</p> <p style="text-align:justify">বোট মালিক সমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ‘আরাকান আর্মির সদস্যরা বঙ্গোপসাগরের নাফ নদের মোহনা থেকে ট্রলার ও ৬ জন শ্রমিককে ধরে নিয়ে যায়। শ্রমিকদের সবাই সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দা।’ বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">আবদুর রশিদ আরো বলেন, ‘ট্রলার দুটি বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় পৌঁছালে মিয়ানমার থেকে দুটি ট্রলারে আরাকান আর্মির সদস্যরা এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে গেছে। অপহরণের পর ট্রলার দুটিকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত তাদের ফেরত দেওয়া হয়নি।’</p> <p style="text-align:justify">সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানান, টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আসার পথে দুটি ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে। সেই ট্রলারে ৬ জন মানুষ রয়েছে। এ ঘটনায় তাদের পরিবারের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।</p> <p style="text-align:justify">এ প্রসঙ্গে সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘মালভর্তি দুটি ট্রলারসহ ৬ জনকে মিয়ানমারে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তবে কারা ঘটিয়েছে খোঁজখবর নিচ্ছি।’</p> <p style="text-align:justify">তবে এ ধরনের ঘটনার বিষয়ে কেউ অবগত করেননি বলে জানিয়েছেন টেকনাফে দায়িত্বরত বিজিবির ২ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।</p> <p style="text-align:justify">টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি, তবে সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায়, তাহলে বিজিবি এবং কোস্ট গার্ডের মাধ্যমে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।’</p> <p style="text-align:justify">প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১ জুন বিকেলে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌ রুটের নাইক্ষ্যংদিয়ায় একটি সার্ভিস ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল মিয়ানমারের বাহিনী। এরপর ৫ জুন একই স্থানে নির্বাচন কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটকে বহনকারী নৌযান লক্ষ্য করেও গুলি করা হয়। ৮ ও ১১ জুন একই এলাকায় সেন্ট মার্টিনগামী নৌযান লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। সর্বশেষ গত ১৭ জুলাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ বদরমোকাম এলাকা অতিক্রমের সময় দুটি ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছিল। প্রতিটি গুলির ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায়।</p>