<p style="text-align:justify">গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তার ও শুভেচ্ছা ক্যালেন্ডার বিতরণকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ও নির্বাহী কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। এ সময় অন্তত ১৫টি দোকানে ভাঙচুর করা হয়। </p> <p style="text-align:justify">গতকাল শুক্রবার রাতে মুকসুদপুর উপজেলার সদরের চৌরঙ্গী এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, উভয় গ্রুপের নেতা কর্মী সমর্থকরা আজ শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে আবারও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন করায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শুক্রবার রাতে উপজেলার স্থানীয় চৌরঙ্গী মেড়ে সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহর শুভেচ্ছা ক্যালেন্ডার বিতরণ করছিলেন উপজেলা ছাত্রদল নেতা জীম। এ নিয়ে সেলিমুজ্জামান সেলিমের কয়েকজন সমর্থক ক্যালেন্ডার বিতরণকারীকে মারধর করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে মুকসুদপুর উপজেলা সদরে দুই পক্ষের সহশ্রাধিক কর্মী সমর্থক রাস্তায় বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। এ সময় উভয় পক্ষ একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়স্ত্রণে আনে পুলিশ। এ ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ২৫ জন সমর্থক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত ৯জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব নয়, সুসম্পর্ক রয়েছে : ডা. তাহের" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/11/1736594291-e0da419712736c80dd38024d8dfeca6c.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব নয়, সুসম্পর্ক রয়েছে : ডা. তাহের</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2025/01/11/1467509" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">মুকসুদপুর থানার ওসি (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল জানান, মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ও নির্বাহী কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহর সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেছে।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘যারা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছিলেন না তারা এখন এলাকায় বিএনপি করতে চায়। এমনকি তারা আওয়ামী দোসরদের বিএনপি রাজনীতিতে সক্রিয় করতে চাচ্ছে। তাদের দলে কোনো অবস্থান নেই জেনেই এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপিতে কোনো গ্রুপিং নেই।’</p> <p style="text-align:justify">কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, ‘গত শুক্রবার রাতে আমার ক্যালেন্ডার বিতরণ করার সময় আমার কর্মীদের উপর কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমের লোকজন হামলা চালিয়েছে। পরে পুলিশের উপস্থিতে হামলা চালানো হয়। এ সময় দোকানপাট ভাংচুর করে। সেলিমুজ্জামান সেলিম আওয়ামী পরিবারের সদস্য। তিনি উল্টো আওয়ামী লীগ কর্মীদের দলে সক্রিয় করতে চাচ্ছে। এছাড়া সেলিমুজ্জামান সেলিম দিদার হত্যা মামলা ও সেনাবাহিনীর উপর হামলা এই দুটি মামলায় আসামি বানিয়ে অনেকের কাছে চাঁদাবাজি করছেন।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ নেই। মুকসুদপুর থানার ওসি মো. মোস্তফা কামাল সেলিমুজ্জাম সেলিমের নেতাকর্মীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে এই ঘটনার জন্ম দিয়েছেন।’</p> <p style="text-align:justify">মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এখন পযর্ন্ত কোনো পক্ষই থানায় মামলা দায়ের করেনি। উপজেলা সদরে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসনিম আক্তার বলেন, দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা চলছে। আইনশৃঙ্খলা পিরিস্থিতি ঠিক রাখতে সকল ধরনের প্রস্ততি রয়েছে। আশাকরি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে। </p> <p style="text-align:justify">জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি যাতে খারাপ না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify"><strong>আ. লীগের প্রতিবাদ</strong> :</p> <p style="text-align:justify">এদিকে, কয়েকটি গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ শিরোনামে সংবাদ প্রচার হওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হায়দার হোসেন।</p> <p style="text-align:justify">তিনি তাঁর ফেসবুক পেইজে লিখেছেন, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তার ও পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম গ্রুপের ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা, ভাংচুর, লুটপাটের সংবাদ কতিপয় গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংঘর্ষ বলে প্রচারিত হয়েছে। যা আমাদের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো লেখেন, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রবিউল আলম শিকদার তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেছেন, ‘মুকসুদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষকে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ বলে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা দায়িত্বশীল গণমাধ্যমকে বিনীতভাবে জানাতে চাই, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আপাতত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেই। মুকসুদপুরে এমন ঘটনা ঘটার বিগত দিনে কোনো ইতিহাস নেই। আমরা শান্তিপুর্ণ সহবস্থানের রাজনীতি করেছি। গত ২১ বছরে আমাদের পক্ষ থেকে একটিও রাজনৈতিক মামলা হয়নি। এমতস্থায় প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের সঠিক সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানাই। মুকসুদপুর আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদপত্র ও প্রকাশের অনুরোধ রইল। <br />  </p>