<p>টক ফল খাওয়ার পর অনেক সময় দাঁতে টক লাগার অভিজ্ঞতা হয়। কিন্তু কেন এমনটি হয়? এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে টক ফলের রাসায়নিক গঠনে এবং আমাদের দাঁতের ওপর এদের প্রভাবের মধ্যে।</p> <p>টক ফল, যেমন লেবু, কমলা, আনারস, ইত্যাদি, প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড এবং ম্যালিক অ্যাসিড থাকে। এই অ্যাসিডগুলো ফলের টক স্বাদের জন্য দায়ী। যখন আমরা টক ফল খাই, তখন এই অ্যাসিডগুলি আমাদের দাঁত এবং মুখের লালার সংস্পর্শে আসে। এই অ্যাসিড মুখের পিএইচ স্তরকে কমিয়ে দেয়, যা দাঁতের উপর একটি ক্ষয়কারী প্রভাব ফেলে।</p> <p>দাঁতের সবচেয়ে বাইরের স্তরকে এনামেল বলা হয়। এটি দাঁতের সুরক্ষা প্রাচীল। এই অ্যানামেল স্তর শক্ত এবং মজবুত। তবে অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে দুর্বল হয়ে যায়। অ্যাসিড দাঁতের এনামেলকে ধীরে ধীরে নরম এবং ক্ষয় করে। ফলে দাঁতে সংবেদনশীলতা তৈরি হয়।<br /> আমাদের মুখে প্রাকৃতিকভাবে লালা তৈরি হয়। লালা দাঁতকে সুরক্ষা দেয় এবং পিএইচ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। টক ফল খাওয়ার পর মুখের পিএইচ কমে গেলে লালা চেষ্টা করে সেই মাত্রা পুনরুদ্ধার করতে। কিন্তু যদি প্রচুর পরিমাণে টক ফল খাওয়া হয়, তখন লালার প্রাকৃতিক ভারসাম্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, ফলে দাঁত অনেক সময় টক অনুভূত হয়।</p> <p>দাঁতের ভেতরের অংশে থাকে ডেন্টিন। এই ডেন্টিন অংশে ছোট ছোট নালিকা থাকে। এসব নালিকার দাঁতের স্নায়ুর সম্পরক থাকে। দাঁতের এনামেল খুব বেশি ক্ষয়ে দাঁতের ভেতরের ডেন্টিন উন্মুক্ত হয়। তখন খাবার বা পানি ডেন্টিনের সংস্পর্শে চেলে আসে। তখন সংবেদনশীতার অনুভূতি তৈরি হয়, যেটাকে আমরা ‘দাঁত টক’ বলি।</p> <p>তাই ফল খাওয়ার পর পানি দিয়ে কুলকুচি করুন।  টক ফল খাওয়ার পর মুখে অ্যাসিডের প্রভাব কমানোর জন্য দ্রুত মুখ ধোয়া উচিত। এটি দাঁতের উপর অ্যাসিডের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। ফ্লেভারযুক্ত চুইংগাম চিবালে মুখের লালা উৎপাদন বাড়ে। ফলে মুখের পিএইচ স্তরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। টক ফল খাওয়ার সাথে সাথে দাঁত ব্রাশ না করাই ভালো। কারণ এই সময় দাঁতের এনামেল নরম থাকে, যা ব্রাশ করলে আরও বেশি ক্ষয় হতে পারে।</p> <p>টক ফল খাওয়ার সময় দাঁতের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে আমরা দাঁত টক হওয়ার সমস্যা থেকে সহজেই মুক্ত থাকতে পারি।</p> <p>সূত্র: হাউ ইট ওয়ার্কস</p>