<p>মানুষই শুধু একজন আরেকজনকে বেঁধে রাখে না। আরও একটা প্রাণী আছে, যারা স্বজাতিকে বেঁধে রাখে। </p> <p>বলুন তো এই প্রাণীটি কী হতে পারে?</p> <p>সেটা এমনক এক প্রাণীর পক্ষে সম্ভব যারা দড়ি বা সুতার ব্যবহার জানে। আর মানুষের বাইরে একাজটা করতে পারে একমাত্র মাকড়সা। তবে সুতার ব্যবহার জানলেও সব মাকড়সা বাঁধাছাদার ঝামেলায় যায় না। ইন্দোনেশিয়ার নার্সারি ওয়েব মাকড়সারাই এই কাজটা করতে পারে। </p> <p>এই প্রজাতির পুরুষ মাকড়সা তাঁদের স্ত্রী সঙ্গীকে বেঁধে রাখে।</p> <p>কেন এটা করে?</p> <p>শুধু প্রজননকালেই পরুষ মাকড়সা স্ত্রীদের বেঁধে রাখে। কারণ, নার্সারি ওয়েব প্রজাতির স্ত্রী মাকড়সারা আকারে তুলনামূলক বড় এবং আক্রমণাত্মক। এদের মধ্যে সেক্সুয়াল ক্যানিবালিজম নামে একটা বিশেষ আচরণ দেখা যায়। প্রজননের সময়, বিশেষ করে মিলনের পরে, স্ত্রী মাকড়া আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে, কখনো পুরুষটাকে খেয়েও ফেলে। তাই আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে পুরুষ মাকড়সারা এই কাজ করে।</p> <p>কীভাবে বাঁধে?</p> <p>পুরুষ মাকড়সা প্রজননের আগে স্ত্রী মাকড়সাকে নিজেদের জাল তৈরির সুতার সাহায্য স্ত্রীকে আংশিকভাবে বেঁধে রাখে। এই বাঁধন মাকড়সাকে সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় করে, ফলে পুরুষ মাকড়সারা নিরাপদে প্রজনন করতে পারে। স্ত্রী মাকড়সার পা এবং দেহের অন্যান্য অংশে এই সিল্ক শক্তভাবে জড়িয়ে দেওয়া হয়। যাতে তারা পাল্টা আক্রমণ করতে না পারে। </p> <p>এতে স্ত্রী মাকড়সা কম সক্রিয় হয় এবং পুরুষ মাকড়সা প্রজননের জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় এবং সুরক্ষাও নিশ্চিত হয়। বেঁধে রাখার ফলে মিলন শেষে পুরুষ মাকড়সা পালিয়ে যাওয়ারও পর্যাপ্ত সযোগ পায়। </p> <p>মাকড়সার এই আচরণ একটা বিবর্তনীয় কৌশল। এই আচরণ পুরুষ মাকড়সাদের প্রজনন সফলতার হার বাড়াতে সাহায্য করে।</p> <p>এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের গবেষক ড. মারিয়া জোসেফ বলেন, ‘নার্সারি ওয়েব পুরুষদের এই কৌশল আসলে একটি বিবর্তনীয় অভিযোজন। এটা সেক্সুয়াল ক্যানিবালিজমের সম্ভাবনা কমিয়ে প্রজননের সাফল্যের হার বাড়ায়। সিল্কের ব্যবহার পুরুষ মাকড়সাদের যেমন শুধু সুরক্ষা দেয়,  তেমনি এটা তাদের সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়াতেও সাহায্য করে। এটা প্রকৃতির একটি বিস্ময়কর বিবর্তনীয় উদাহরণ।’</p>