<p>ডায়াবেটিসকে সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের রোগ হিসেবে দেখা হয়। তবে আশঙ্কার বিষয় হলো, শিশুরাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে টাইপ-১ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিক শিশুদের মধ্যে ক্রমবর্ধমানভাবে দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে সচেতন হওয়া এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।</p> <p>শিশুর ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কী?</p> <p>খুব ছোট ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলো শিশুরা নিজের মুখে বলতে পারে না। তাই বাচ্চাদের আচরণে পরিবর্তন দেখে সতর্ক হতে হবে।</p> <p><strong>পিপাসা এবং বারবার প্রস্রাব করা : </strong>শিশুর পিপাসা বেড়ে গেলে এবং ঘন ঘন প্রস্রাব করলে বিষয়টি নজরে রাখুন।<br /> <strong>ক্ষুধা বৃদ্ধি : </strong>অতিরিক্ত খিদে পাওয়া ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত হতে পারে।<br /> <strong>ওজন কমে যাওয়া এবং ক্লান্তি : </strong>কোনো কারণ ছাড়াই শিশুর ওজন হ্রাস ও বারবার ক্লান্ত হয়ে পড়া।<br /> <strong>মিষ্টি গন্ধযুক্ত শ্বাস :</strong> এটি ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিসের লক্ষণ।<br /> <strong>ইস্ট ইনফেকশন : </strong>মেয়েশিশুদের ক্ষেত্রে ঘন ঘন ইস্টজনিত ইনফেকশন হতে পারে।</p> <p><strong>চিকিৎসা পদ্ধতি</strong><br /> টাইপ-১ ডায়াবেটিক<br /> টাইপ-১ ডায়াবেটিক সাধারণত ৪ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে দেখা যায়। এটা এ অটোইমিউন রোগ। শরীর নিজের ইনসুলিন উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিলে এই রোগ দেখা দেয়।</p> <p><strong>চিকিৎসা পদ্ধতি</strong></p> <ul> <li>ইনসুলিন থেরাপি নিয়মিত গ্রহণ কারা যেতে পারে।</li> <li>নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্তের শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করুন।</li> <li>সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং শিশুকে খেলাধুলায় উৎসাহিত করুন।</li> </ul> <p><strong>টাইপ-২ ডায়াবেটিক</strong><br /> আগে টাইপ-২ ডায়াবেটিক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যেত, তবে বর্তমানে এটি ১৫-১৯ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।</p> <p><strong>চিকিৎসা পদ্ধতি</strong></p> <ul> <li>শিশুর ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুুলুন। </li> <li>নিয়মিত রক্তের শর্করা পরীক্ষা করান।</li> <li>শিশুর দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করুন।</li> </ul> <p><strong>নিওনেটাল ডায়াবেটিস</strong><br /> শিশুরা জন্মের আগেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। এটা জিনগত কারণে হয়ে থাকে। পিতামাতার মধ্যে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে এর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।</p> <p><strong>চিকিৎসা পদ্ধতি</strong></p> <ul> <li>দীর্ঘমেয়াদি ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।</li> <li>নিয়মিত জেনেটিক কাউন্সেলিং করান।</li> </ul> <p><strong>করণীয়</strong><br /> ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য না হলেও সঠিক চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এর ঝুঁকি কমানো সম্ভব।<br /> <strong>খাদ্যাভ্যাস : </strong>প্যাকেটজাত ও মিষ্টিজাতীয় খাবার থেকে শিশুদের দূরে রাখুন।<br /> <strong>ওজন নিয়ন্ত্রণ : </strong>শিশুর ওজন সঠিক রাখতে তাকে শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখুন। নিয়মিত খেলাধুলা করতে দিন, হাঁটা বা দৌড়ানোর অভ্যাস তৈরি করুন।<br /> <strong>জীবনযাপন পদ্ধতি : </strong>সেডেন্টারি লাইফস্টাইল থেকে দূরে থাকুন এবং শারীরিক কার্যকলাপে উৎসাহ দিন।</p> <p>শিশুর যেকোনো আচরণগত পরিবর্তন দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারলে শিশু সুস্থভাবে বড় হতে পারবে।</p>