<p>সিলেট স্টেডিয়ামের সবকিছুই যেন তাঁর অনেক দিনের চেনা। এখানকার মানুষ, মাঠ, ইনডোর এমনি মাঠকর্মীরাও। স্থানীয় ক্রিকেটার হয়েও আজিজুল হাকিম যেখানে অনুশীলন নেট থেকে জিমনেশিয়ামে যাওয়ার রাস্তা ভুল করে ফেলছেন, সেখানে পল স্টার্লিং একাই সবখানে ছোটাছুটি করছেন।</p> <p>বাংলাদেশে এতবার এসেছেন যে, বলা যায় এটি নিজের দ্বিতীয় বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন আয়ারল্যান্ডের এই ক্রিকেটার। আলোচনার এক ফাঁকে স্টালিং নিজে স্বীকারোক্তি দিলেন, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন।</p> <p>২০০৮ সালে অভিষেকের পর এই আইরিশ ১৭ বছর ধরে দেশটির হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। যে বছর অভিষেক ক্যাপ মাথায় পরেন, সে বছর প্রথমবার বাংলাদেশ সফর করেন স্টার্লিং। তবে সেবার কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। এরপর বিপিএলের প্রথম মৌসুমেই দল পান স্টার্লিং। সিলেট রয়্যালসে নাম লেখান এই টপ অর্ডার ব্যাটার।</p> <p>এবার সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে খেলতে আসা স্টার্লিং জানান কীভাবে বিপিএল বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন, 'মনে থাকবে না কেন। সেটা ছিল আমার প্রথম কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, আমি এখানে এসেছিলাম সিলেট রয়্যালসের হয়ে খেলতে। সেই ২০১২-১৩ সালের কথা। এরপর থেকে ধীরে ধীরে বাকি সব লিগে খেলতে শুরু করি, তাই বিপিএল বরাবরই আমার কাছে একটু বিশেষ।'</p> <p>বিপিএলে ডাক পাওয়ার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি স্টার্লিংকে। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই নয়, বলতে গেলে এই ক্রিকেটার এখন ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অন্যতম পছন্দের হয়ে উঠেছেন। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার নানা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের দলে খেলেছেন। বিপিএলে নানান সময় খেলেছেন বরিশাল, সিলেট, খুলনার একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের হয়ে।</p> <p>সে সূত্র ধরে বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়ে তাঁর। সে গল্প শোনাতে গিয়ে বলেন, 'আমি ক্রিকেট ভালোবাসি, লম্বা সময় ধরে খেলছি। নিজেকে ভাগ্যবানই বলব। এসব টুর্নামেন্টে খেলে আপনার অনেক বন্ধু হবে, সবার সঙ্গে পরিচয় হবে। এই যেন বিপিএলের প্রথম আসরে আমি মুশিফিকুরর রহিম, মুমিনুল হকের সঙ্গে খেলেছি, পরিচিত হয়েছি। আজ তারা দেখুন কত বড় পর্যায়ে আছে। সবার সঙ্গেই অল্প অল্প পরিচয় আছে আমার।'</p> <p>এবার বিপিএলে সিলেটের হয়ে দুই ম্যাচে সুযোগ পেয়েছেন স্টার্লিং। দলীয় সমন্বয়ের কারণে বেশিরভাগ সময় একাদশের বাইরে থাকতে হচ্ছে তাঁকে। তবু অনুশীলন ফুরফুরে দেখাচ্ছে এই আইরিশকে। সময়টা যে দারুণ উপভোগ করছেন তিনি, 'বিপিএলে দারুণ সময় কাটছে। আমি সবসময় বিপিএল খেলতে চাই। সুযোগ পেলেই এই টুর্নামেন্টে আসতে চেয়েছি। এখানে কাটানো সময়গুলো আমি উপভোগ করি। এখানকার ক্রিকেট চর্চা আমাকে বেশ আকর্ষণ করে।'</p> <p>চলতি বিপিএলে সিলেটের তরুণ ওপেনার জাওয়াদ আবরারকে বেশ মনে ধরেছে স্টার্লিংয়ের। যদিও অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপজয়ী এই ব্যাটার এখনো কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। নেটে জাওয়াদের ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ হয়েছেন স্টার্লিং, 'বিশেষ করো কথা বলতে হলে আপনি আবরারকে দেখুন। এটা ঠিক যে সে বিপিএলে নিজের প্রতিভা প্রদর্শন করতে পারেনি। তবে আমি তাঁকে নেট অনুশীলনে দেখেছি। আগামী দিনের তারকা হওয়ার মতো তাঁর মধ্যে সব উপাদান আছে।'</p>