<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রমজান আসতে আর বেশি দেরি নেই। এ সময় পণ্যের দাম বাড়ানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এবার যাতে সে রকম পরিস্থিতি না হয়, সে জন্য আগেভাগেই পণ্যের উৎপাদন, আমদানি ও মজুদ পরিস্থিতি সরকারকে জানিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। তবে কিছু কিছু পণ্যের মজুদ ভালো থাকলেও দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে ভোজ্য তেল, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুরের মতো কিছু পণ্য। এসব পণ্যের এখনো কাঙ্ক্ষিত মজুদ নেই। সামনে যে সময় রয়েছে, এর মধ্যে মজুদ না বাড়ালে দাম বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ট্যারিফ কমিশনের তৈরি প্রতিবেদন বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় মজুদ নিশ্চিতসহ রমজানের অতি ব্যবহৃত পণ্যে শুল্ক হ্রাস করেছে। তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে জানা যায়, শুল্ক কমালেও কাঙ্ক্ষিত আমদানি হয়নি। ভোজ্য তেল পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। সংস্থাটি মনে করে, স্থানীয় বাজারে এসব পণ্যের মজুদ ও সরবরাহ নজরদারি করা প্রয়োজন। প্রতিবেদনটি গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কিছু কিছু পণ্যের ঋণপত্র বা এলসি কম খোলা হয়েছে। এর মধ্যে পরিশোধিত চিনির এলসি কম হয়েছে ২৮ হাজার ৯০২ টন, পেঁয়াজের এলসি কম হয়েছে এক লাখ ১৯ হাজার ৬১৪ টন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ ছাড়া আমদানি কম হয়েছে এসব পণ্যের মধ্যে পাম অয়েল দুই লাখ ৬৪ হাজার টন, চিনি অপরিশোধিত দুই লাখ ৩৬ হাজার ৫০৬ টন; পেঁয়াজ আমদানি কম হয়েছে এক লাখ ৬৬ হাজার টনের বেশি এবং খেজুর আমদানি কম হয়েছে তিন হাজার ৭৪৫ টন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাজার বিশ্লেষকদের অভিমত, সরকার কিছু পণ্যের শুল্ক হ্রাস করলেও সম্প্রতি বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ফলে এবং এর বাস্তবায়ন শুরু হলে এর প্রভাব পড়বে ভোগ্য পণ্যে। এ ছাড়া আগের সরকারের সুবিধাভোগী বেশ কিছু বড় ব্যবসায়ী নিষ্ক্রীয় হয়ে গেছেন। ভোগ্য পণ্যের বাজারে এসব প্রতিষ্ঠানের বড় ধরনের হিস্যা ছিল। তারা এই সরকারকে বেকায়দায় ফেলার সুযোগ নিতে পারে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রতিবেদনে বলা হয়, পেঁয়াজের উৎপাদন মৌসুম শুরু হওয়ায় পেঁয়াজের স্থানীয় মূল্য কমেছে। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজারে  ডিমের চাহিদা কমেছে। এতে স্থানীয় বাজারে ডিমের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের মূল্যে নিম্নমুখী প্রবণতা এবং আমদানিতে শুল্ক-কর হ্রাস করায় রমজানে তেলের স্থানীয় মূল্য আরো কমতে পারে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">চালের স্থানীয় উৎপাদন কমায় সরকার চাল আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক-কর অব্যাহতি দিয়েছে। চাল আমদানির জন্য প্রায় চার লাখ ৭৫ হাজার টনের এলসি খোলা হয়েছে। এই চাল স্থানীয় বাজারে প্রবেশ করলে মূল্যে স্থিতিশীলতা আসবে বলে বলা হয় ট্রারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সারা বছরের পাশাপাশি রমজানে খেজুরের বিপুল চাহিদা থাকে। অতি চাহিদাসম্পন্ন এই পণ্যে সরকার আমদানিতে শুল্ক-কর রেয়াতসহ শুল্কায়ন মূল্য যৌক্তিকীকরণ করা হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে খেজুর আমদানির এলসি খোলার প্রবণতা বেড়েছে এবং রমজানে ভোক্তারা গত বছরের তুলনায় স্থানীয় বাজারে কম দামে খেজুর ক্রয় করতে পারবেন বলে ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে মসুর ডাল ও ছোলার আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারে এই দুটি পণ্যের মজুদ ও সরবরাহ মনিটর করা প্রয়োজন। সার্বিকভাবে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে কমিশন মনে করে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে  কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, গত সরকারের সুবিধাভোগী কুশীলবরা বাজার অস্থিতিশীল করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। এরা সম্প্রতি বাজারে ভোজ্য তেল সরবরাহ কমিয়ে প্রতি লিটারে আট টাকা বাড়িয়েছে। রোজার আগে এটা আরেক দফা বাড়ানোর চেষ্টা করবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি সরকার শতাধিক পণ্যে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে। এর বাস্তবায়ন শুরু হলে প্রভাব পড়বে ভোগ্য পণ্যের দামেও। তবে সরকারের দেওয়া সুবিধা ভোক্তা পেতে হলে বাজার নজরদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠোর নজরদারি করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের দেওয়া শুল্ক-কর রেয়াতের তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সর্বশেষ গত নভেম্বরে সয়াবিন ও পাম তেলে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করেছে। পরিশোধিত চিনি আমদানিতে প্রতি টনে সিডি রেয়াত দিয়েছে ছয় হাজার থেকে কমিয়ে চার হাজার ৫০০ এবং আরডি ৩০  থেকে ১৫ শতাংশ করেছে। আর বিদ্যমান শুল্ক ৪৪ শতাংশ। ডিমে সিডি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে। পেঁয়াজে ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য শতাংশ করা হয়েছে। খেজুর আমদানিতে শুল্ককর ৬৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪১ শতাংশ করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p>