<p>বুকারজয়ী লেখক সালমান রুশদির ওপর হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রশংসা করে তাকে এবার বিশাল উপহার দিল ইরানের একটি সংস্থা। সাহসিকতার পুরস্কার হিসেবে তাকে এক হাজার বর্গমিটার কৃষিজমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি মঙ্গলবার তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ তথ্য জানিয়েছে।</p> <p>ইরানের নেতা খোমেনির ফতোয়া বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইসমাইল জারেই বলেছেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে তরুণ আমেরিকান যুবকের সাহসী পদক্ষেপকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি রুশদির একটি চোখ অন্ধ করে এবং তার একটি হাত অক্ষম করে মুসলমানদের খুশি করেছেন। রুশদি এখন বেঁচে থেকেও মৃত ছাড়া আর কিছু নয়। এই সাহসী পদক্ষেপকে সম্মান জানাতে প্রায় এক হাজার বর্গমিটার কৃষিজমি ওই ব্যক্তি বা তার কোনো আইনি প্রতিনিধিকে দান করা হবে।’</p> <p>গত বছরের আগস্টে পশ্চিম নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত একটি সাহিত্য অনুষ্ঠানের মঞ্চে হামলার পর ৭৫ বছর বয়সী রুশদি একটি চোখ এবং একটি হাত হারান। সেই ঘটনায় হাদি মাতার নামে নিউ জার্সির একজন শিয়া আমেরিকান দ্বিতীয় ডিগ্রি খুনের চেষ্টা এবং হামলার অভিযোগে দোষী নন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেখক চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনে শৈল্পিক স্বাধীনতার ওপর একটি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। সেই সময় মাতার মঞ্চে ছুটে এসে তাকে ছুরিকাঘাত করেন।</p> <p>রুশদির উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর ইরানের প্রয়াত সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি তাকে হত্যার জন্য মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি ফতোয়া বা ধর্মীয় আদেশ জারি করেছিলেন। সেই আদেশের ৩৩ বছর পর এই হামলার ঘটনা ঘটে।</p> <p>মাতারের পরিবার দক্ষিণ লেবাননের ইয়ারুন শহর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিয়েছিলেন। এনবিসি নিউ ইয়র্ক অনুসারে, আইন প্রয়োগকারীরা মাতারের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছেন, তিনি শিয়া চরমপন্থা এবং ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন।</p> <p>ইয়ারুনের মেয়র আলী তেহফে বলেছেন, মাতারের বাবা-মা যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার পর সেখানে মাতার জন্মগ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন। কিন্তু তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে তার কাছে কোনো তথ্য ছিল না।</p> <p>অন্যদিকে রুশদি ভারতে একটি কাশ্মীরি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ব্রিটিশ পুলিশের সুরক্ষায় ৯ বছর তিনি আত্মগোপনেও ছিলেন।</p> <p>উল্লেখ্য, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খোমেনির উত্তরসূরি আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি রুশদির বিরুদ্ধে ফতোয়া ‘অপরিবর্তনীয়’ বলার জন্য ২০১৯ সালে টুইটার থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।</p> <p>সূত্র : রয়টার্স, ইন্ডিয়া টুডে</p>