<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবছর পয়লা জানুয়ারিতে হতো বই উৎসব। শিশুরা হাতে পেয়ে যেত নতুন বই। বছরের প্রথম দিনে নতুন বইয়ের গন্ধে তারা মাতোয়ারা হতো। আনন্দ উৎসবে মেতে উঠত স্কুল প্রাঙ্গণ। এ বছর তা হয়নি। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কয়েকটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া গেলেও সারা দেশে তা করা যায়নি। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির বেশির ভাগ বইয়ের মুদ্রণই সম্পন্ন হয়নি।  রাজধানী, বিভাগীয় ও জেলা শহরের কিছু স্কুল কয়েকটি শ্রেণির স্বল্পসংখ্যক বই পেয়েছে। কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে বই পাঠানোর কারণে স্কুলগুলো সেসব বই বিতরণেও সমস্যায় পড়ছে। আর চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বই কবে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো যাবে, তা-ও বলা যাচ্ছে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যত দূর জানা যায়, সরকার বদল, পাঠ্যসূচি পরিবর্তন, পাণ্ডুলিপি পরিমার্জনে বিলম্বসহ নানা কারণে এ বছর নতুন বইয়ের মুদ্রণ শুরু করতেই বিলম্ব হয়েছে। মুদ্রণ সম্পন্ন হতে আরো দুই মাস লেগে যেতে পারে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি চলে যাবে। মার্চের প্রথমেই শুরু হবে পবিত্র রমজান মাস। রোজা ও ঈদের ছুটির পর নতুন বই পেয়ে নতুন ক্লাসের লেখাপড়া পুরোদমে শুরু হতে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। অনেক শিক্ষকই মনে করেন, সে অবস্থায় পাঠ্যক্রম বা সিলেবাস শেষ করাই কঠিন হয়ে পড়বে। তবে চলতি বছরের প্রথম দিনে বই দেওয়া না গেলেও ১ জানুয়ারি অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। কিন্তু দেশের সব শিক্ষার্থীর কাছে কি অনলাইন বই সহজলভ্য হবে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে বরং এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হবে। কারণ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের এবং দরিদ্র পরিবারের। ইন্টারনেট তাদের কাছে সহজলভ্য নয়। দোকান থেকে ডাউনলোড এবং মুদ্রণ করে নেওয়ার মতো সামর্থ্যও তাদের নেই। ফলে শহরের এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের শিশুদের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা শিখনে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে। জানা যায়, বন্যা বা বড় দুর্যোগ না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণত এক বছরে ক্লাস-পরীক্ষা চলে ১৮৫ দিন। সেভাবেই সাজানো হয় শিক্ষাক্রম। তা থেকেও বইয়ের অভাবে তিন মাসের বেশি সময় চলে যাওয়া শিখনে বড় ঘাটতি তৈরি করতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া না গেলেও আমরা চাই, দ্রুততম সময়ে সারা দেশে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার জন্য সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হোক। পাশাপাশি শিখন ঘাটতি পূরণে আরো কী কী উদ্যোগ নেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। </span></span></span></span></p> <p> </p>