<p>স্কুলছাত্রীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীকে বাড়িছাড়া এবং গর্ভপাতের শর্তে দুই অভিযুক্তকে জরিমানা করেন সালিশকারীরা। কিন্তু সেই জরিমানার অর্ধেকের বেশি টাকা নিজেদের পকেট ভরেছেন তারা।</p> <p>এ ঘটনার পর থেকে বেকায়দায় পড়েছে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই কিশোরী। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এদিকে শনিবারেও (৪ জানুয়ারি) ওই স্কুলছাত্রী ও তার বাবা বাড়িতে ফেরেনি।</p> <p>স্থানীয় সূত্র জানায়, বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় ওই স্কুলছাত্রী। পরে একজনের বিয়ের প্রলোভনে গভীর সর্ম্পকে জড়ায় সে। অন্তঃসত্ত্বা হলে বিয়ের জন্য চাপ দেয় ওই কিশোরী। কিন্তু পাঁচ মাস চলে গেলেও বিয়ে না করায় সমাজের মানুষের কাছে দ্বারস্থ হন তার দিনমজুর বাবা। </p> <p>সালিশ দরবারের আয়োজন করেন স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসিম উদ্দিন। তিনি তার দলবল নিয়ে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ওই টাকার ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয় মেয়ের বাবাকে। আর বাকি টাকা পরে দিবে বলে বিদায় করে দেওয়া হয়। আজও সেই ৯০ হাজার টাকা দেননি তারা। </p> <p>অভিযুক্তরা হলেন নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের মো. রতনের ছেলে মো. পারভেজ মিয়া (৩২) ও একই গ্রামের কামালের ছেলে শবি মিয়া (২৫)। </p> <p>জানা যায়, এই দুজনের বাড়ির কাছেই ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর চাচাতো বোনকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বেড়াতে যাওয়ার সময় তাকে ধর্ষণ করেন ওই দুই যুবক। পরে ঘটনাটি বেশ জানাজানি হলেও পরে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।<br />  <br /> শনিবার দ্বিতীয়বারের মতো ওই গ্রামে গেলে জানা যায়, সালিশের পর থেকেই মেয়েটি তার বাবাকে নিয়ে অন্যত্র থাকছে। প্রতিবেশীরা জানায়, লোকলজ্জা ও সালিশের সিদ্ধান্তের কারণে মেয়ে বাড়ি ছাড়ছে। </p> <p>স্থানীয় ইউপি সদস্যকে ফোন করলে তিনি জানান, মেয়ের বাবার খোঁজ তিনি পেয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে তিনি গ্রামে আসবেন না। <br /> ইউপি সদস্য শফিকের মোবাইলে মেয়ের বাবা জানান, তাকে ও মেয়েকে দরবারে নিয়ে অভিযুক্ত দুজনসহ তাদের পরিবারের উপিস্থতিতে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা ধরলেও তিনি পেয়েছেন ৮০ হাজার। বাকি টাকা পরে দেবে বলে চেয়ারম্যান জানান। কিন্তু শনিবার বিকেল পর্যন্ত টাকা হাতে পাননি তিনি।</p> <p>শনিবার সকালে ও বিকেলে বেশ কয়েকবার সালিশের আয়োজনকারী আচারগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাসিম উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।</p> <p>নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহম্মেদ জানান, জানতে পেরে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়েকে পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ তৎপর রয়েছে।</p>