<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দীর্ঘদিন হলো দেশে পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এই পণ্যটির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে এটি বাস্তবায়ন করা যায়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দীর্ষদিন ধরে এ বিষয়ে দেশে-বিদেশে সোচ্চার ভূমিকা রেখে আসছেন। তিনি চেষ্টা করছেন পরিবেশের ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠা সব ধরনের জিনিসের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে। ফলে এখনই সময় দেশে পলিথিনের ব্যবহার শূন্যের কোঠায় এবং প্লাস্টিকের ব্যবহার যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার। এটি করতে হলে উৎপাদন থেকে বিপণন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সব পর্যায়ে আইনগতভাবে কঠোর হতে হবে। আইনের কোথাও দুর্বলতা থাকলে সেটি সংশোধন করে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০২ সালে পলিথিনের পাতলা শপিং ব্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এই আইনের মাধ্যমে পলিথিনের ব্যবহার এত দিনে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যেত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৬২ সালে বাণিজ্যিকভাবে প্লাস্টিক বা পলিথিনের ব্যবহার শুরু হলেও ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী এর ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। ফলে গত প্রায় শত বছর এই পণ্যটির ব্যবহার আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে। তাই এটির ব্যবহার নির্মূল করতে গেলে সবার আগে প্রয়োজন এর বিকল্প তৈরি করা। আর অবশ্যই সেটি স্বল্পমূল্যে টেকসই হতে হবে। তা না হলে মানুষ প্লাস্টিক পলিথিনের ব্যবহার ছাড়বে না। দেশে বিভিন্ন সময়ে পলিথিনের বিকল্প ব্যবহারযোগ্য পণ্য তৈরি হলেও জনপ্রিয় হয়নি। এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রভাব থাকতে পারে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছার ঘাটতি নেই। এখন প্রয়োজন সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা। এর জন্য শুধু পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কাজ করলেই হবে না, সঙ্গে অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর সম্মিলিত উদ্যোগও থাকতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরা (মাইক্রোপ্লাস্টিক) শ্বাস-প্রশ্বাস ও শোষণের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করছে। আমাদের ফুসফুস, যকৃৎ, প্লীহা ও কিডনিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। নবজাতক শিশুর শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। আবার বর্ষাকালে দেশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। রাজধানীর নদীগুলো পলিথিন ও প্লাস্টিকের কারণে বিপন্ন হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, একটি প্রজন্ম প্লাস্টিকপণ্য ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে গেছে। তাই পাঠ্যক্রমে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা তুলে ধরে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে প্লাস্টিক ব্যবহারে নিরুৎসাহ করতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : অধ্যাপক, পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।</span></span></span></span></p>