<p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চরম পরাক্রমশালী পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ। বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী সরকারের সর্বোচ্চ প্রভাবশালী কর্মকর্তা, যিনি একই সঙ্গে ছড়ি ঘুরিয়ে গেছেন প্রশাসন ও রাজনীতিতে। ফলে তাঁকে ঘিরে জনমনে নানা প্রশ্ন আর কৌতূহলের অন্ত ছিল না। এমনকি অবসরের পরও তিনি ছিলেন সবার কাছে এক অমীমাংসিত ধাঁধা। এই ধাঁধার নিষ্পত্তি করে দেয় কালের কণ্ঠের একের পর এক চাঞ্চল্যকর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। এতে দেখা যায়, অবিশ্বাস্য সব অনিয়ম-অপকর্মের মাধ্যমে তিনি দেশের ইতিহাসে রাজকীয় দুর্নীতির নজির গড়েন। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলো পাঠকের দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। বরং এর জের ধরে জনমনে যে উষ্মা সৃষ্টি হয়, তা পূর্বাপর আরো কয়েকটি ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের মতো অবিশ্বাস্য পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে দেখা যায়, বেনজীর আহমেদ এমন একটি </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলাদীনের চেরাগ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হাতে পেয়ে গিয়েছিলেন, যার স্পর্শে তিনি পূরণ করে গেছেন প্রায় সব ইচ্ছা। ইচ্ছাপূরণের এই খেলায় তাঁর সঙ্গী ছিল পরিবারও। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের তথ্যে উঠে আসে কিভাবে একজন সরকারি কর্মকর্তা তাঁর চাকরিজীবনে বৈধ আয়ের তুলনায় অনেক বেশি সম্পদের মালিক হন। এক পর্যায়ে তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি জব্দ ও অবরুদ্ধ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নির্ভরযোগ্য সূত্রে কালের কণ্ঠ জানতে পারে, বেনজীরের সীমাহীন দুর্নীতির খবর প্রকাশ হয়ে গেলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। টানা ১৬ বছর ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা বেনজীরের দিকে মুখ ফিরিয়েও তাকায়নি দলটি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বছরের শুরুতে বেনজীরের অপকর্ম নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে কালের কণ্ঠ। একের পর এক প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো বছরের শেষ দিনে এসেও পাঠকের মুখে মুখে শোনা যায়। বলা বাহুল্য, এই অনুসন্ধানের নেপথ্যে বড় ভূমিকা ছিল পত্রিকাটির মালিকপক্ষের। সরকারঘনিষ্ঠ প্রবল প্রতাপশালী বেনজীরকে নিয়ে রিপোর্ট করার ক্ষেত্রে তাঁরা কোনো বাধা হননি। বরং তাঁদের আন্তরিকতাপূর্ণ উৎসাহ আর আপাদমস্তক সমর্থন বাড়তি প্রণোদনা হিসেবে কাজ করেছে। আর প্রতিবেদকদেরও করেছে দুঃসাহসী। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানী সেলের দীর্ঘ অনুসন্ধানে নেতৃত্ব দেন বর্তমানে পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক হায়দার আলী। তথ্যের খোঁজ আর প্রশ্নরেখা একবিন্দুতে মিলিয়ে দিতে দিনরাত অনুসন্ধান করে গেছেন একঝাঁক সাংবাদিক। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনুসন্ধানের প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হয় ৩১ মার্চ। প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে লাল রঙে বাক্সবন্দি প্যাকেজ রিপোর্ট। প্রধান শিরোনাম </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। গোপালগঞ্জের এক রিসোর্টের গল্প দিয়ে শুরু হয় এই প্রতিবেদন। ৬০০ বিঘা জমির ওপর সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক। এর আশপাশে আরো ৮০০ বিঘা জমি। এগুলোর মালিক বেনজীর ও তাঁর পরিবার। এ কারণে ওই এলাকার নাম হয়ে যায় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেনজীরের চক</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। রিপোর্টে আরো বলা হয়, শতকোটি টাকার ব্যবসা রয়েছে তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে। গুলশানে বেনজীরের মালিকানাধীন ১৭ কোটি টাকা মূল্যের আট হাজার ৬০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটের তথ্যও উঠে আসে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মেয়ের বিশ্রামের জন্য সাড়ে ৩ কোটি টাকার ফ্ল্যাট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শিরোনামে আরেকটি রিপোর্ট ছাপা হয় একই সঙ্গে। এই রিপোর্টে বলা হয়, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কেনেন কেবল বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়ের বিশ্রামের জন্য। শুধু তাই নয়, দুই মেয়ের নামে বিভিন্ন কম্পানিতে কয়েক লাখ শেয়ার থাকার তথ্যও উঠে আসে এতে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেনজীর পরিবার কিভাবে এই বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেছে কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানী সেল। কিন্তু বৈধ উপায়ে অর্থ আয়ের উল্লেখযোগ্য কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বরং কালের কণ্ঠ একই দিন আরেকটি রিপোর্টে তুলে ধরেছে, চাকরিজীবনে কত অর্থ উপার্জন করেছেন বেনজীর। এতে দেখা যায়, ৩৪ বছর সাত মাসের চাকরিজীবনে তাঁর সর্বসাকুল্যে বৈধ উপার্জন দুই কোটি টাকার আশপাশে। ফলে তাঁর বিপুল সম্পদভাণ্ডারের বৈধ উৎস নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিভিন্ন মহল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৩১ মার্চ অনুসন্ধানের প্রথম কিস্তি প্রকাশের পর মূলত দেশজুড়ে বেনজীরকে নিয়ে হৈচৈ পড়ে যায়। কেননা তাঁর অপকর্মের কোনো তথ্য এর আগে কোথাও প্রচার হয়নি। দোর্দণ্ড প্রতাপশালী একজন পুলিশের সাবেক শীর্ষ কর্তাকে নিয়ে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আলোচনার তুঙ্গে ওঠে। কিছুটা বিরতি দিয়ে অন্য গণমাধ্যমেও কেন্দ্রীয় ইস্যু হয়ে ওঠে বেনজীরকাণ্ড।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর মধ্যে এক দিন বিরতি দিয়ে ২ এপ্রিল কালের কণ্ঠে ছাপা হয় অনুসন্ধানের দ্বিতীয় কিস্তি। এদিন মূল শিরোনাম করা হয় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। সঙ্গে ছিল </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সেন্ট মার্টিন-কক্সবাজারেও ভূসম্পত্তি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন। এভাবে কয়েক দিন পর পর বেনজীরকে নিয়ে একের পর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করতে থাকে কালের কণ্ঠ। এর মধ্যে আলোচিত কয়েকটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল : </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২৪০ বিঘা জমির মালিক বেনজীরের স্ত্রী</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাদারীপুরেও বেনজীরের স্ত্রীর সাম্রাজ্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯ কম্পানির মালিক বেনজীর পরিবার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাকরির শেষ ৩ বছরেই কেনেন ৪৬৬ বিঘা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেনজীরের কালো তিন হাত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ টেলিকমেও বেনজীরের ভূত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ইটভাটা দখলে নেন বেনজীরের শ্যালক</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এবং </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেনজীর পরিবারের ৫০ বিঘা জমি গাজীপুরেও</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালের কণ্ঠে নিরবচ্ছিন্নভাবে বেনজীরের হাঁড়ির খবর ফাঁস হয়ে গেলে নড়েচড়ে বসে দুদক। শুরু হয় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত বা অনুসন্ধানপ্রক্রিয়া। দুদকের অনুসন্ধানেও বেনজীরের দুর্নীতির প্রমাণ মেলে। এক পর্যায়ে আদালতের নির্দেশে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সব ধবনের স্থাবর সম্পত্তি জব্দ ও অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ করে দুদক। এমনকি বেনজীরকে সপরিবারে তলবও করে সংস্থাটি। কিন্তু বারবার চিঠি দিলে বেনজীর তাতে কর্ণপাত করেননি। বরং সরকার পতনের আন্দোলন তেতে উঠলে অবস্থা বুঝে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে দেশ ছেড়ে পালানোর আগে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে আবারও আওয়ামী সরকারের আনুকূল্য পেতে কম চেষ্টা-তদবির করেননি বেনজীর। তাতে অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি। এক পর্যায়ে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনগুলো চ্যালেঞ্জ করে ভিডিও বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। অবৈধ সম্পদ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তার দালিলিক প্রমাণ দিতে পারলে প্রমাণদাতাকে সেই সম্পদ বিনা মূল্যে দিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন তিনি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমনকি নিজের ফেসবুক পেজে সাংবাদিকদের ইঙ্গিত করে হুমকিস্বরূপ স্ট্যাটাসও দেন। কিন্তু তাঁর কোনো চ্যালেঞ্জ আর হুমকিতে তটস্থ হয়ে যায়নি কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানী সেল। রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই সেলের সাংবাদিকরা জীবন বাজি রেখে অব্যাহত রাখেন বেনজীরের অপকর্মের অনুসন্ধান। মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে তাঁরা দেখেন যে প্রতিদিনই নতুন নতুন অভিযোগ উঠে আসছে। একেবারে পিলে চমকানোর মতো সব তথ্য। সাংবাদিকরা তথ্যগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করেন। তাঁদের হাতে পর্যাপ্ত নথিপত্র এবং তথ্য-প্রমাণ ছিল। নানা কারণে জাতীয় পর্যায়ে খুবই পরিচিত মুখ ছিলেন বেনজীর। কিন্তু দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাঁর অকল্পনীয় সম্পদভাণ্ডার নিয়ে বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না কারো। অবশ্য যে আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট ছিলেন, সেই সরকারের সময়েই তাঁর বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধান চালিয়ে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনগুলোর সত্যতা পায়। ফলে নিজেকে দায়মুক্তির যে চ্যালেঞ্জ তিনি ছুড়ে দিয়েছিলেন, সেটিও ধোপে টেকেনি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার পতনের সফল আন্দোলনে রূপ নেওয়ার পেছনে কয়েকটি ঘটনা প্রভাবক হিসেবে টনিকের মতো কাজ করেছিল বলে বেশির ভাগ মানুষ মনে করে থাকেন। এর মধ্যে ছিল বেনজীরকে নিয়ে কালের কণ্ঠে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, মতিউরের ছাগলকাণ্ড এবং সরকারি কর্ম কমিশনের প্রশ্ন ফাঁসের হোতা ড্রাইভার আবেদ আলীর ঘটনা। বেনজীরের বড় বড় দুর্নীতির খবর ফাঁস হতে থাকলে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি জনরোষ বাড়তে থাকে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মতিউর রহমানের বিলাসী দুর্নীতি এবং ড্রাইভার আবেদ আলীর শতকোটি টাকা গড়ার খবর ছিল আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার মতো। অন্যান্য দুর্নীতির বিষয় তো ছিলই। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষের মনের ভেতরে পুষে রাখা ক্ষোভের অনল অগ্নিরূপ ধারণ করতে শুরু করে বেনজীরের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলাদীনের চেরাগ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দৃশ্যমান হতে শুরু করলে। আর সেই অনলে শেষ হয়ে যায় ১৬ বছরের দম্ভ। সারা পৃথিবী অবাক দৃষ্টিতে দেখেছে কিভাবে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেনজীরের রাজকীয় দুর্নীতির এই বিশদ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলো কালের কণ্ঠ প্রকাশনার ১৫ বছরে শ্রেষ্ঠ অনুসন্ধান বলে বিবেচিত হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় মাইলফলক হয়ে থাকবে।</span></span></span></span></span></p>