আত্মপ্রকাশের পর প্রথমবারের মতো পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নিচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে সব কর্মসূচির বাইরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় শহীদ হওয়া পরিবারের সঙ্গে ঈদ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিপি। এর পাশাপাশি দলীয়ভাবে নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ চালাবেন দলের নেতাকর্মীরা।
শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এনসিপি
তৌফিক হাসান

সূত্রগুলো বলছে, ঈদকে কেন্দ্র করে নিজ নিজ এলাকায় যাচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা। অনেকে এরই মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। আর যাঁরা ঢাকায় রয়েছেন, তাঁরাও গতকাল শনিবার ও আজ রবিবারের মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় চলে যাবেন।
এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা শহীদ পরিবারের সঙ্গে ঈদ পালন করব। অর্থাৎ ঈদের দিন প্রত্যেকে নিজ জেলায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া নিজ নিজ এলাকায় দলীয় গণসংযোগ করবেন নেতাকর্মীরা।’
এনসিপির নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদ উদযাপন করলেও ঢাকায় ঈদ করবেন দলটির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম।
ঢাকায় ঈদের দিন বা ঈদের পরের দিন কী ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হবে তা এখনো ঘোষণা করেনি দলটি। তবে দলের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলের আহবায়ক নাহিদ ইসলামসহ ঢাকায় অবস্থান করা নেতাকর্মীরা ঈদের দিন বিভিন্ন ঈদ শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগের বাণিজ্য মেলার মাঠে যে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেখানে ঢাকায় অবস্থান করা বেশির ভাগ নেতাকর্মীর ঈদের নামাজ আদায় করার সম্ভাবনা রয়েছে।
দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে হওয়া আয়োজনগুলোতে অংশগ্রহণ শেষে ঢাকায় অবস্থান করা দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন নাহিদ ইসলাম। এই সাক্ষাৎ শেষে আবার শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও তিনি সাক্ষাৎ করতে পারেন। এটি দলীয় কার্যালয়েও হতে পারে, আবার অনেক শহীদের বাসায় তাঁর যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কখন ও কোথায় এই সাক্ষাৎ এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলের নেতাকর্মীরা বলেন, ঢাকায় অবস্থান করা নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় ঈদের দিন নানা কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেন।
নাহিদ ইসলাম ঢাকায় ঈদ করলেও দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন ঈদ করবেন রংপুরে। এ উপলক্ষে তিনি গত ২৭ মার্চ রংপুরে গেছেন। রংপুরের কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় ঈদ করবেন তিনি। সেখানে সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের পর শহীদদের কবর জিয়ারত করে তিনি শহীদ পরিবারের সঙ্গে সময় দেবেন। তারপর নানা ধরনের গণসংযোগ কর্মসূচি করবেন আখতার হোসেন।
আখতার হোসেন ছাড়াও শীর্ষ নেতাদের মধ্যে দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমিন ভোলার সদর উপজেলায়, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায়, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, সদর ও আটোয়ারী উপজেলায়, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলায় ও সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় ঈদ করবেন। এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার ভোলায় যান সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমিন, গত শুক্রবার চাঁদপুরে যান মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, গত ২৬ মার্চ কুমিল্লায় যান দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, গত ২৫ মার্চ পঞ্চগড়ে যান উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও একই দিন নোয়াখালীতে যান সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। ঈদ ও ঈদের পরে কিছুদিন তাঁরা নিজ এলাকায়ই অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে। তবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঈদের দিন সকালে ঢাকার শোভাযাত্রায় যোগ দিতে পারেন।
শুধু শীর্ষ নেতা নয়, তাঁদের বাইরেও যুগ্ম আহবায়ক নুসরাত তাবাসসুম কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায়, সারোয়ার তুষার নরসিংদীর সদর ও পলাশ উপজেলায়, খালেদ সাইফুল্লাহ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায়, যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়, জয়নাল আবেদীন শিশির কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন ঝালকাঠির রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলায় ঈদ করবেন।
এ ছাড়া যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত ফেনীতে, ফরিদুল হক খুলনায়, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান চুয়াডাঙ্গায়, উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাছের খান গাজীপুরে ও দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ঈদ করবেন।
এ বিষয় জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের অনেক নেতাই তাঁর নিজস্ব এলাকায় চলে গেছেন। অনেকে ঢাকায় রয়েছেন। যাঁরা ঢাকায় রয়েছেন তাঁদের মধ্যেও অনেকে ঈদে বাড়ি যাবেন।’
সম্পর্কিত খবর

ছুটির ঘোষণা

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩০-৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল কালের কণ্ঠ বন্ধ থাকবে। তাই ৩১ মার্চ এবং ১-২ এপ্রিল পত্রিকা প্রকাশিত হবে না। পবিত্র ঈদুল ফিতর ১ এপ্রিল হলে ৩ এপ্রিলও পত্রিকা প্রকাশিত হবে না। তবে ঈদের ছুটিতে কালের কণ্ঠ অনলাইন চালু থাকবে।
— সম্পাদক

শ্রমসচিবের গাড়ির সামনে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীরা

বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীরা গতকাল বিজয়নগরে শ্রমসচিবের গাড়ির সামনে বসে পড়েন।ছবি : কালের কণ্ঠ
।
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরের দেশে জরুরি অবস্থা জারির উসকানি
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

দেশে জরুরি অবস্থা জারির উসকানি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই উসকানি দেন।
গত বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের মনে কী আছে’ (‘হোয়াট’স অন বাংলাদেশ’স আর্মি চিফ’স মাইন্ড?’) শিরোনামে ইন্ডিয়া টুডেতে একটি সংবাদ বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়। সেখানে মূলত সেনাপ্রধান বাংলাদেশের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়বেন কি না, তা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করা বিবিসি ও রয়টার্সের সাবেক সাংবাদিক সুবির ভৌমিকের লেখায় বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান একজন রক্ষণশীল ও পেশাদার কর্মকর্তা, যিনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেন। তাঁর সহকর্মীরা জানান, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশে সামরিক শাসন কার্যকর নয়। ইতিহাস, বিশেষ করে পাকিস্তানি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা তাঁকে এই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের উদ্ধৃতি দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে কঠোর দমন-পীড়ন না চালাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘ সতর্ক করেছিল এবং তা কার্যকর হয়েছিল।
তবে ওয়াকার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি গুলি চালানোর অনুমতি দেননি এবং শেখ হাসিনা ও তাঁর উপদেষ্টাদের নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেন।
সম্প্রতি কিছু ব্লগার ও অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা অভিযোগ করেছেন, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ভারতের প্রতি অনুগত এবং তিনি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। তবে সেনাপ্রধানের ঘনিষ্ঠরা বলেন, তিনি কোনো গোষ্ঠীর অনুগত নন, বরং তিনি পেশাদার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অনুকরণ করে রাজনীতির বাইরে থাকতে চান।
এদিকে সেনাপ্রধান চাইলে দেশে জরুরি অবস্থা জারিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে সমর্থন দিতে পারেন বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানিয়া আমীর।
আওয়ামী লীগপন্থী এই আইনজীবী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন; আর এ ক্ষেত্রে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান তাঁকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করতে পারেন। এর ফলে রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তী সরকার বাতিল করে দ্রুত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে পারবেন। সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের কঠোর হস্তে দমন করতে পারবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবে।’
তবে তানিয়া আমীরের এমন মন্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে এক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল, যাঁর অধীনে সেনাপ্রধান আগে চাকরি করেছেন, তিনি বলেন, ‘যদি মনে হয় তাঁকে (সেনাপ্রধান) সরিয়ে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তাহলে তিনি কঠোর ভূমিকা পালন করবেন।’
ইন্ডিয়া টুডের সংবাদ বিশ্লেষণে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান সম্প্রতি আফ্রিকা সফর শেষে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করবেন না, যা আমি করতে চাই না।’ এতে বোঝা যায়, তিনি কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হতে পারেন, যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। তাঁর বাবা ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম কিনেছিলেন কুষ্টিয়া-৩ আসনের জন্য।

রমজানে সহনীয় পণ্যের দামে স্বস্তিতে রোজা পার
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থিতিশীল করে তোলেন। রমজান এলেই মাছ-মাংস, শাক-সবজি থেকে শুরু করে কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়তে বাড়তে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। বিশেষ করে রোজার ভোগ্যপণ্য হিসেবে পরিচিত ছোলা, খেজুর, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, চিনির বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। বছরের পর বছর ধরে এমন চিত্রই দেখে আসছে দেশবাসী।
রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং পণ্যের দাম কমানোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে এবার রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে অসাধু ব্যবসায়ীদের যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল তা এখন ভেঙে গেছে। এ ছাড়া এ বছর রমজান সামনে রেখে ট্যাক্স-ভ্যাট কমার পাশাপাশি পণ্য আমদানি বেড়েছে, যার সুফল মিলছে বাজারে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি বাড়ানো ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোজ্যতেল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, আলু, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে আমদানিতে উৎসাহ বাড়ায় এবার ব্যাপক হারে ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছেন আমদানিকারকরা। এতে গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমে বিক্রি হয়েছে ছোলা, পেঁয়াজ, চিনি, দেশি রসুন, আলু ও আদাসহ কয়েকটি পণ্য। সবজি ও মুরগির বাজারেও কিছুটা স্বস্তি ছিল।
এবার রমজানে পেঁয়াজ ও আলু গত বছরের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে।
গত রমজানে রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজি ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এবার বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে। আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়, যা গত বছর রমজানে বিক্রি হয় ৪০ টাকা কেজি। পাকা টমেটো কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর বিক্রি হয় মানভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এখন ঈদ ঘিরে মুরগির দাম বাড়লেও রোজার শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত অনেকটাই সহনীয় দরেই এবার মুরগি বিক্রি হয়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। ঈদ উপলক্ষে এখন মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় ব্রয়লার মুরগি কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকা এবং সোনালি মুরগি কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর রোজায় ব্রয়লার মুরগি কেজি ছিল ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, রোজার আগে আগে যা ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। দাম কমে চিনি কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, গত বছরের রমজানের তুলনায় এ বছর বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকায় রয়েছে গম, ডাল, মুরগি, ডিম, মাছ, সয়াবিন, পামঅয়েল, চিনি, লবণ, আলু, টমেটো, মরিচ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও হলুদ।
বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেছেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ায় এবার রমজানে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয়।
এদিকে এবার রোজায় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের একাধিক সংস্থা মাঠে আছে। সংস্থাগুলো হলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল, র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মনিটরিং টিম। এ ছাড়া নিত্যপণ্যের বাজারে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিও করা হচ্ছে।