<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডামুড্যায় মাছের ঘেরের কারণে তিনফসলি জমিতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সারা বছর পানির নিচে থাকায় যেমন সমস্যা হচ্ছে কৃষকদের ফসল চাষ করতে, তেমনই সমস্যা হচ্ছে ওই এলাকায় বসবাস করা মানুষের। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউএনওর দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কাজ হচ্ছে না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সিধলকুড়া ইউনিয়নের দিকশুল এবং পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নের জয়ালু, চর ঠেঙ্গার বাড়ি, শম্ভুকাঠি ও বড় নওগাঁ মৌজার জায়গায় অন্তত ৩০০ একর জমি রয়েছে। এতে কলাই, কালিজিরা, সরিষা, টমেটো, মরিচ, আমন ও বোরো ধান লাগাতেন কৃষকরা। পাঁচ বছর আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা মাছের ঘের করে পানিপ্রবাহের রাস্তা বন্ধ করে দেন। তাই এখন শীতেও কিছু জায়গায় পানি থাকায় ওই এলাকার পাঁচ শতাধিক কৃষক ফসল চাষ করতে পারছেন না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুব মিজি ও নাজির খান মিলে খালের পানিপ্রবাহের রাস্তা বন্ধ করে দুটি ঘের করেন। এতে এ এলাকার ছয়টি মৌজার ৩০০ থেকে ৩৫০ একর তিনফসলি জমি বর্ষায় পানির নিচে এবং খরার সময় শুকিয়ে থাকে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিলের কিনারা ঘেঁষে রয়েছে একটি ছোট খাল। এই খালের শুরু ও শেষ প্রান্তে রয়েছে দুটি মাছের ঘের। বাঁধের কারণে খালটির মুখ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এতে বিলের পানি নামতে পারে না। ফলে বর্ষার পানি কোনো দিকে যেতে পারে না। শীতকালেও কিছু জায়গায় পানি আটকে আছে। সেখানে ঘাস ছাড়া কিছুই হয় না। পানি যাওয়া-আসার কোনো জায়গা নেই। খালের শেষ প্রান্তে রয়েছে সরকারি একটি ব্রিজ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষকরা বলেন, দাদার আমল থেকে এই খাল আমরা ব্যবহার করে আসছি। এই খাল দিয়ে ১০ থেকে ১২টি বিলের পানি নিষ্কাশিত হতো। এই বিলগুলোতে সরিষা, মসুর, কালিজিরা, মরিচ, কলাইসহ ধান হতো। এই ফসল দিয়ে আমাদের সংসার চলত। পাঁচ বছর আগে মাহাবুব মিজির নেতৃত্বে প্রথমে এই মাছের ঘের করা শুরু হয়। একদিন রাতে খালটি বন্ধ করা শুরু করে ভেকু (এক্সকাভেটর) মেশিন দিয়ে। আমরা কৃষকরা মেশিন বন্ধ করে উপজেলা প্রশাসনকে জানাই। তারা এসে দেখে যায়। এর পর থেকে বারবার তাদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষক ফারুক সরদার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে আসছি, এই খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হয়। খালের মাথায় সরকারি একটি কালভার্ট করা আছে। মাহাবুব মিজি এটি বন্ধ করে একটি মাছের ঘের করেন। এতে এই বিলসহ আরো দুটি বিলের পানি নিষ্কাশনের জায়গা বন্ধ হয়ে যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাদ্দাম সরদার নামের আরেক কৃষক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা এই জমিতে তিনফসলি ফসল চাষ করতাম। এটির মাধ্যমে আমাদের সংসার চলে। এখন বৃষ্টির পানি আটকে যায়। এখন শুধু ইরি ধান ছাড়া আর কিছু করা যায় না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে ঘের মালিক মাহাবুব মিজি কথা বলতে রাজি হননি। অন্যদিকে আরেক ঘের মালিক নাজির খান মুঠোফোনে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যে ঘের নিয়ে কথা সেটি ব্যক্তিমালিকানার জমিতে। কৃষকদের কথা ভেবে পাইপ বসানো হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এ কথা বলে ফোন কেটে দিন তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজীব বসু বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল মালেক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি বিষয়টি জানার পর গিয়েছিলাম। সেখানে দুই জায়গায় দুটি মাছের ঘের করা আছে। এই জায়গায় যদি সরকারি খাল থাকে তাহলে আমরা দ্রুত খাল উদ্ধার করে কৃষকদের সমস্যার সমাধান করব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p>